প্রতীকী ছবি
বাড়ির গিন্নির করোনা ধরা পড়েছে। তিনি হাসপাতালে। একমাত্র কলেজ পড়ুয়া মেয়ের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। লালারস পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে তাঁরও।
করোনা আক্রান্ত বহু পরিবার যখন পাড়ায় কোণঠাসা বলে অভিযোগ উঠছে রাজ্যের নানা প্রান্তে, সেখানে ব্যতিক্রমী বাদুড়িয়ার উত্তর দিয়াড়া গ্রামের মহিলারা। তাঁরা আক্রান্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। চাঁদা তুলে চাল-ডাল-আনাজ জোগাড় করছেন। অভয় দিয়ে বলছেন, ‘‘চিন্তার কিছু নেই। আমরা তো আছি!’’
জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাদুড়িয়ার ওই বধূ। শনিবার লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। স্ত্রীকে সেখানে ভর্তি করে এসে স্বামী দেখেন, মেয়েও অসুস্থ বোধ করছে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাঁরও। রবিবার মেয়েকে বসিরহাট হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে ভোগান্তি হয় বাবার। তাঁর অভিযোগ, বাড়িতে এক জনের করোনা হয়েছে শুনে পরিচিত ভ্যান-টোটো চালকেরা কেউ যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। মেয়েকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করেন। প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে একটি ভ্যান পান। পরের ১৩ কিলোমিটার পেরিয়ে হাসপাতালে গিয়ে বাবা-মেয়ে লালারসের নমুনা দিয়ে বাড়ি ফেরেন।
পরে মেয়ে বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে ফিরে দেখি, সোনালি কাকিমা, মর্জিনা চাচিরা কেউ চাল, কেউ ডাল, কেউ আনাজ রেখে গিয়েছেন।’’ দিনমজুর পরিবারের গৃহকর্তা ও তাঁর মেয়ে পড়শিদের আচরণে মুগ্ধ। মেয়ের বাবা বলেন, ‘‘পাড়ার লোকজন যে ভাবে পাশে দাঁড়ালেন, সাহস পাচ্ছি।’’
লকডাউনে কাজ নেই ওই ব্যক্তির। বাড়ির পরিস্থিতির কথা অজানা নয় সোনালি, মর্জিনাদের। তাঁরা বলেন, ‘‘আমপান এবং লকডাউনে আমরা চাঁদা তুলে অনেকের পাশে দাঁড়িয়েছি। এখন নিজের পাড়ার লোকের এই অবস্থায় কী করে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারি!’’ পাড়ার এক মহিলা কথায়, ‘‘নিজেদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেও যে ভাবে সম্ভব, ওই পরিবারের পাশে আমরা আছি। এ ভাবেই তো করোনার মোকাবিলা সম্ভব।’’ আর এক পড়শি মহিলা বলেন, ‘‘আমাদেরও দিনমজুর পরিবার। কী ভাবে সংসার চলছে, ভালই বুঝতে পারি। তাই যে কোনও পড়শি সমস্যায় পড়লে আমরা পাশে থাকব।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy