বারুইপুর জেল।
পশ্চিমবঙ্গে শেষ ফাঁসি হয়েছিল প্রায় সাড়ে উনিশ বছর আগে। সেই ফাঁসির মঞ্চ আর নেই। কারণ, আলিপুর সেন্ট্রাল জেল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শতাব্দী-প্রাচীন জেল স্থানান্তরিত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের টংতলায়। কিন্তু সেখানে এখনও ফাঁসির মঞ্চ তৈরি হয়নি। এই অবস্থায় কারও প্রাণদণ্ড কার্যকর করতে হলে তো সমস্যা হতে পারে। কারা দফতরের কর্তাদের দাবি, দরকার হলেই দ্রুত ফাঁসির মঞ্চ তৈরি হয়ে যাবে। এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রযুক্তির এত আধুনিকীকরণ হয়েছে, একটা মঞ্চ তৈরিতে কত ক্ষণ আর লাগবে!’’ আপাতত বারুইপুর জেলে ফাঁসির মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে বলেই খবর।
২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট ভোরে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি হয়েছিল বাঁকুড়ার ছাতনার কুলুডিহির বাসিন্দা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। ভবানীপুরের বহুতলের বাসিন্দা কিশোরী হেতাল পারেখকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় তাঁকে প্রাণদণ্ড দিয়েছিল আদালত। ওই বহুতলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন ধনঞ্জয়। দিল্লির নির্ভয়া মামলাতেও ধনঞ্জয়ের প্রসঙ্গ উঠেছিল। নির্ভয়া মামলায় মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয়কুমার সিংহ ও পবন গুপ্ত নামে চার আসামিকে প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত। ১ ফেব্রুয়ারি তাদের ফাঁসি দিন ধার্য হয়েছে। ধনঞ্জয়ের প্রাণদণ্ডের কয়েক বছর আগে, ১৯৯১ সালে সুকুমার বর্মণ ও কার্তিক শীল নামে দু’জনের ফাঁসি হয়েছিল। ফাঁসুড়ে ছিলেন নাটা মল্লিক। ২০০৯ সালে নাটা মারা যান। তবে রাজ্যের কারা দফতরের অধীনে ফাঁসুড়ের কোনও পদ নেই।
এ রাজ্যে এখন কাউকে ফাঁসি দিতে হলে কেন সমস্যায় পড়বে কারা দফতর? স্বাধীনতার পর থেকে কাউকে ফাঁসি দিতে হলে তাকে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে আসা হত। কারণ, অন্যত্র ফাঁসির মঞ্চ থাকলেও শুধু আলিপুর জেলেই তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। ওই জেল বারুইপুরে উঠে যাওয়ায় আলিপুরের যাবতীয় কাজ সেখানেই হবে। সেই নিয়ম অনুসারে রাজ্যে কারও ফাঁসি কার্যকর করতে হলে তা হবে বারুইপুরেই। রাজ্যের বিভিন্ন জেলে এখন তিরিশের বেশি ফাঁসির আসামি আছে বলে জানাচ্ছে কারা দফতর। তাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। তবে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রাখতেই হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃদ্ধের শুশ্রূষা, বসা হল না পরীক্ষায়
ফাঁসির মঞ্চ কী ভাবে তৈরি হয়?
কারা দফতরের খবর, প্রথমে চারকোনা ইট দিয়ে ঘেরা একটি ইঁদারা তৈরি করা হয়। যার গভীরতা প্রায় দু’মানুষ সমান। তার উপরে থাকে লোহার পাটাতন। যেখানে দাঁড় করানো হয় আসামিকে। ওই পাটাতন দাঁড়িয়ে থাকে একটি স্টিলের কাঠামোর উপরে। পাশে থাকে একটি ‘লিভার’ বা যান্ত্রিক হাতল। যা টেনে নিলে পাটাতন সরে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy