Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

মোদীর ভোট-ব্যয় নিয়ে তদন্ত চান মমতা

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের জোড়া সভায় মমতা প্রশ্ন তোলেন, শুধু মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েই নরেন্দ্র মোদী কোটি কোটি টাকা খরচ করা সত্ত্বেও কেন তা নিয়ে তদন্ত হবে না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

আনন্দ মণ্ডল ও কেশব মান্না
তমলুক ও হেঁড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনের খরচের ‘বহর’ নিয়ে তদন্ত চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, মোদী যে পরিমাণ খরচ করছেন এবং হলফনামায় অনেক তথ্যই ‘জানা নেই’ বলে লিখেছেন, তাতে তাঁর প্রার্থিপদ বাতিল হওয়া উচিত।

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের জোড়া সভায় মমতা প্রশ্ন তোলেন, শুধু মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েই নরেন্দ্র মোদী কোটি কোটি টাকা খরচ করা সত্ত্বেও কেন তা নিয়ে তদন্ত হবে না। মোদীর প্রার্থিপদ বাতিলের দাবি তুলে নির্বাচন কমিশনকে মমতার অনুরোধ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর এক একটা সভার হিসাব নিন। ওঁর এক একটা সভায় কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। শুধু বারাণসীতে মনোনয়নের রোড শো-তেই খরচ কোটি ছাপিয়েছে। কেন তার তদন্ত হবে না। ওঁর হলফনামায় অর্ধেক কথা ‘জানা নেই’ লেখা। তাহলে কেন তাঁর প্রার্থিপদ বাতিল হবে না!’’

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী লোকসভা ভোটের প্রত্যেক প্রার্থী সামগ্রিক ভাবে প্রচারে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারেন। সেই ঊর্ধ্বসীমা ছাড়াচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য ‘এক্সপেনডিচার অবজার্ভার’ও রয়েছেন। মমতা এ দিন প্রকাশ্য সভায় অভিযোগ করেছেন, মোদী সেই নিয়ম ভাঙছেন। মমতার অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় মুম্বই, দিল্লি থেকে লোক নিয়ে আসে। পতাকা লাগানোর জন্য, মিটিং-মিছিলে গেলে টাকা দেওয়া হয়। বাইকও কিনে দিচ্ছে ওরা। এটা জনগণের টাকা। টাকার উৎস কী জানতে চান।’’ এর জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, ‘‘কেন্দ্রে আমরা ক্ষমতায় আছি। ফলে মানুষ আমাদের বেশি টাকা দিচ্ছেন। যা টাকা আসছে আর যা খরচ হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে তার পাইপয়সার হিসেব দেওয়া হচ্ছে।’’ সঙ্গে মমতাকে বিঁধে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো কপ্টারে ঘুরছেন, ব্রিগেডে একশো কোটি টাকা খরচ করেছেন। ওঁর বাড়িতে কি টাকার গাছ আছে!’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শনিবারই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে খরচের বহর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মন্তব্য করেন, ‘‘প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম ঠিক প্রশ্নই তুলেছেন। আমি তাঁকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি। অন্য দলগুলির উপর কমিশন যে ভাবে নজরদারি চালাচ্ছে, বিজেপির উপরেও সে ভাবে নজরদারি চালানো উচিত। দেখা উচিত, কোথা থেকে আসছে ওদের টাকা।’’

নিজের সভার জন্য বিপুল অর্থ খরচের অভিযোগের সঙ্গেই মমতা বারবারই মোদীর ‘কাজ’-এর সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী কোনও কাজ করেন না বলে অভিযোগ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কোনও কাজ নেই। শুধু প্রতিরক্ষা ও অর্থ দফতর দেখেন, আর বিদেশে ঘুরে বেড়ান।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর তুলনায় অনেক বেশি বলে মন্তব্য করে মমতা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাষ, সংখ্যালঘু, ওবিসি সবটাই দেখতে হয়। আগে তো রাজ্যের প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী বলা হত। স্বাধীনতার পরে ওই নিয়ম বদলেছে।’’ যার প্রেক্ষিতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর পাল্টা শ্লেষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতাই যদি বেশি হবে, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছেন কেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE