ছবি: রয়টার্স।
আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকের সোনাপুরের কাছে বাপের বাড়ি মহামায়া দাসের৷ প্রায় ২৫ বছর আগে কোকরাঝাড়ের শিমুলটাপুতে প্রদীপ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর৷ তাঁদের এখন এক ছেলে ও এক মেয়ে৷ মহামায়াদেবীর নাম নাগরিকপঞ্জিতে ওঠেনি। “নাগরিকপঞ্জিতে বাড়ির বাকিদের নাম উঠলেও, আমার নাম ওঠেনি,” চূড়ান্ত আফসোস মহামায়াদেবীর গলায়।
অসমের ওই এলাকারই বাসিন্দা প্রদীপ বিশ্বাস। চার ভাইয়ের সংসার। তাঁর এক ভাইয়ের বৌ কাবেরী দাস বিশ্বাস। প্রদীপবাবু বলছিলেন, ‘‘ভাইয়ের নাম আছে। কিন্তু ভাইবৌয়ের নাম নেই!’’
কেন? প্রদীপবাবুর অভিযোগ, “ভাইয়ের স্ত্রীর সমস্ত নথি আমরা কোকরাঝাড়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে জমা দিয়েছিলাম৷ ওঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, সেগুলি পশ্চিমবঙ্গে ‘ভেরিফিকেশন’-এর জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সময়মতো তা যাচাই হয়ে আসেনি৷ তাই নাম ওঠেনি৷”
কোকরাঝাড়ে বিয়ে হয়েছে আলিপুরদুয়ারের চ্যাপানীর মেয়ে সুপ্রিয়া দত্তের৷ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের পাড়ায় অনেক বধূ রয়েছেন, যাঁদের বাড়ি আলিপুরদুয়ার কিংবা কোচবিহারে৷ নাগরিকপঞ্জির খসড়া প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের অনেকের নাম তাতে নেই৷’’ একই দাবি এলাকার অন্য বাসিন্দাদেরও। সকলেরই অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কাগজ পাঠানো সত্ত্বেও তা পশ্চিমবঙ্গ থেকে ‘ভেরিফাই’ হয়ে আসেনি।
প্রতিবেশী রাজ্য হওয়ায় অসমের কোকরাঝাড়, ধুবুড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকায় অনেক বাড়িতেই আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলার মেয়েদের বিয়ে হয়৷ তেমনই ওই রাজ্যের অনেক মহিলারও এই দুই জেলায় বৌ হয়ে আসেন। নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া তালিকার পরে অসমে বিয়ে হওয়া এ রাজ্যের মহিলারাই সবচেয়ে বেশি বিপাকে। অভিযোগ শুনে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, “এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি৷ তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে৷” প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, বর্তমান জেলাশাসক সম্প্রতি দায়িত্বে এসেছেন। তাই তাঁর পক্ষে নিশ্চিত করে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
কিন্তু তালিকায় নাম না চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায় ভুগছেন মহামায়ারা। তাঁদের এখন প্রশ্ন, কবে সুবিচার পাবেন? বা আদৌ পাবেন কি? এর কোনও জেলা প্রশাসনের কাছে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy