মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা পর্যালোচনা এবং বিধানসভা ভোটের আগে দলের দিশা নির্ধারণ করতে গিয়ে শুক্রবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি, সাংসদ এবং বিধায়কদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে কড়া বার্তা দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, ‘‘দলে থাকতে হলে থাকুন। নইলে লুটেরাদের সঙ্গে চলে যান!’’
কারও নাম না করলেও মমতার ওই মন্তব্যের লক্ষ্য দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’-দের লক্ষ্য করেই বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দুর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীও। সূত্রের খবর, মমতা বৈঠকে সরাসরিই বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রাম-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় দলবিরোধী কাজ হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে যাঁরা নেই, তাঁদের সরতে হবে। দলে থাকতে হলে থাকুন। যাঁরা সাহস করে আমার সঙ্গে থাকতে চান থাকুন। নইলে লুটেরাদের সঙ্গে চলে যান। দলে থেকে কোনও দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না!’’ দলের অন্দরে মমতার ওই হুঁশিয়ারি নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তার নির্যাস— এর মধ্য দিয়ে দলনেত্রী শুভেন্দু-অনুগামীদেরই কড়া বার্তা দিতে চেয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি ব্লকের সভাপতি বদল করার কথাও বলেছেন তিনি। জানিয়ে দেন, ওই বিষয়ে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
একই সঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল সম্পর্কেও শুক্রবারের বৈঠকে আভাস দিয়ে রেখেছেন মমতা। যা থেকে স্পষ্ট, বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলকে আবার কৃষক-আন্দোলনমুখী করে তুলতে চাইছেন তিনি। অর্থাৎ, অতঃপর তৃণমূল আরও বেশি করে গ্রামের দিকে নজর দেবে। যে কারণে কৃষক-আন্দোলন আরও জোরদার করতে চাইছেন মমতা। সে সম্পর্কে তিনি একগুচ্ছ কর্মসূচিও ঘোষণা করেন বৈঠকে। দলীয় সূত্রের খবর, আগামী সোমবার, ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের সভাকে অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশিই মমতা দিল্লির উপকণ্ঠে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর সভা হিসাবে দেখতে চাইছেন। এর পর ৮, ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর কলকাতায় গাঁধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি। নেত্রী যার দায়িত্ব দিয়েছেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না এবং রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসুকে। দলীয় সূত্রের খবর, ১০ ডিসেম্বর ওই মঞ্চে দেখা যেতে পারে মমতাকেও। মূলত নয়া কৃষি আইন-সহ কেন্দ্রের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই ওই অবস্থান বিক্ষোভ।
বিধানসভা ভোটের আগে দলের রাশ পুরো নিজের হাতে রাখতেই মমতার এই কর্মসূচি। এর পর একাধিক জেলায় তিনি সফর শুরু করবেন। যা বাঁকুড়ার জনসভা থেকে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেছিলেন, গত কয়েক বছর সরকারের কাজ দেখতে গিয়ে তিনি দলের কাজে একটু ঢিলে দিয়েছিলেন। এ বার থেকে তাই দলের প্রতিই পুরো মনোযোগ দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy