Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিল্টুর জন্য শ্মশানেই আনা হল কেক-খেলনা

ভিড় থেকে একটু দূরে এতক্ষণ চুপ করে বসেছিলেন বিভাসের বাবা জন্মেজয় ঘোষ। ছোট ছেলের দেহ চুল্লিতে ঢোকানোর আগে হঠাৎ চিৎকার করে উঠলেন, ‘‘শেষবার দেখতে দাও ওকে।’’ আশেপাশের লোকজন জড়িয়ে ধরলেন সদ্য সন্তানহারা বাবাকে। 

হাহাকার: বিভাস ঘোষের দেহের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছে তার দাদা বিকাশ। বুধবার। ছবি:শৌভিক দে

হাহাকার: বিভাস ঘোষের দেহের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছে তার দাদা বিকাশ। বুধবার। ছবি:শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

জন্মদিনের উপহারের খেলনা, মিষ্টি, কেক— সব এনে রাখা হল দেহের পাশে, শ্মশানে। আর অন্য জিনিস তো ছড়ানোই চারপাশে। রজনীগন্ধার মালা, সাদা থান। কাছা নিয়ে দাঁড়িয়ে বছর আটেকের খুড়তুতো ভাই অর্ণব। একটু পরেই ভাইয়ের মুখাগ্নি করবে যে।

কাজিপাড়ার আট বছরের বিভাস ঘোষের দাহকাজ হল বুধবার, মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের শ্মশানে। মন্ত্রপাঠ শেষে মুখাগ্নির সময়ে চোখের জল চাপতে পারলেন না কেউ।

ভিড় থেকে একটু দূরে এতক্ষণ চুপ করে বসেছিলেন বিভাসের বাবা জন্মেজয় ঘোষ। ছোট ছেলের দেহ চুল্লিতে ঢোকানোর আগে হঠাৎ চিৎকার করে উঠলেন, ‘‘শেষবার দেখতে দাও ওকে।’’ আশেপাশের লোকজন জড়িয়ে ধরলেন সদ্য সন্তানহারা বাবাকে।

বিভাসদের আদি বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির রামকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের মৌল্লে গ্রামে। শববাহী গাড়িতে এ দিন বেলা ২টো নাগাদ গ্রামের কাছে শ্মশানে পৌঁছয় বিভাসের দেহ। পাশে রাখা হল কিছু খেলনা। দু’দিন বাদেই ছিল ছেলের জন্মদিন। সে জন্য কেনাকাটা সেরে ফেলেছিলেন আত্মীয়েরা। এ দিন কেনা হয়েছিল কেক-মিষ্টি, শেষবারের মতো।

ছুটি পেলেই বিভাসেরা গ্রামের বাড়িতে যেত। পিসি দেবশ্রী, জেঠিমা প্রিয়াঙ্কা, ঠাকুমা অসীমা ঘোষেদের যোগাযোগ ছিল নিয়মিত। তাঁরাও এ দিন এসেছিলেন শ্মশানে। প্রতিবেশীদের ভিড় থেকে একজন বলে উঠলেন, ‘‘প্রতি বছরই জন্মদিনে দেশের বাড়িতে আসত ছেলেটা। এ বার কী উপহার দেব, তা নিয়ে কত কথা হল। কিন্তু সে সব তো আর...।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE