Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
mamata banerjee

খবরটা আসতেই ধর্না মঞ্চে চারিয়ে গেল উৎসবের মেজাজ

মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ মমতার কাছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গেই আকাশ থেকে যেন মেঘ কেটে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলে যায়।মমতার মেজাজ খুশি খুশি হয়ে ওঠে।

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:২৭
Share: Save:

সকালটাও ছিল থমথমে।কী হয়, কী হয়— একটা ভাব। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসতেই উৎসবের মেজাজ চারিয়ে গেল গোটা চত্বরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ হয়ে উঠল উজ্জ্বল। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে এখনই গ্রেফতার নয়, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে নৈতিক জয় দেখছেন যে তিনি।

রবিবার রাত থেকেই মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেছেন। প্রায় ৩৮ ঘণ্টা ধরে একটা স্নায়ুযুদ্ধের বাতাবরণ ছিল। সেটাই হঠাৎ করে বদলে গেল খুশির আবহে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ মমতার কাছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গেই আকাশ থেকে যেন মেঘ কেটে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলে যায়।মমতার মেজাজ খুশি খুশি হয়ে ওঠে। আর ফুরফুরে সেই মেজাজটাই ছড়িয়ে পড়ে গোটা মেট্রো চ্যানেলে। ধর্না মঞ্চ কার্যত একটা উৎসব মঞ্চের চেহারা নেয়।

ছোট্ট মঞ্চটার সামনেই গত দু’দিন ধরে ভিড়টা লেগে রয়েছে। মুখগুলো পাল্টে পাল্টে গেলেও ভিড়ের আকার-আয়তন-আওয়াজ একই রয়ে গিয়েছে। মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী যে মেজাজে থাকছিলেন, সেটাই বেয়ে এসেছে নীচের ওই জনতার মধ্যে। সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত মঞ্চের সামনের কালো পর্দাটা টানাই ছিল। কিন্তু, ভিড়টা সরেনি। পর্দা খুলতেই তাই হালকা উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছিল সেখানে। কিন্তু নেত্রীর মেজাজ তখনও একটু গম্ভীর, তাই ভিড়টাও কিছুটা সংশয়ে ছিল।

আরও পড়ুন: রায়ের পরই ধর্না চত্বরে রাজীব কুমার, রণকৌশল ঠিক করতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ‘বৈঠক’?

সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পর ধর্নামঞ্চে বিভিন্ন মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী।

সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে গড়াচ্ছে, সকাল থেকেই সে বিষয়ে অনবরত খোঁজখবর রাখছিলেন মমতা। ১১টার আগেই তার কাছে খবর চলে আসে, সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দিয়েছে। তার মিনিট ১৫ পরেই তিনি হাতে মাইক্রোফোন তুনে নেন। উপস্থিত ভিড়কে তিনি সেই নির্দেশের কথা জানান।এর পরেই মমতা সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেন। কোন কোন জায়গায় তাঁর নৈতিক জয় হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন, সে ব্যাখ্যাও দেন। নিজের বক্তব্য শেষে দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। এক বার মেজাজ হারিয়েও ফেলেন। কিন্তু পর মুহূর্তেইনিজেকে সামলে নিয়ে ফের প্রশ্নোত্তর পর্বে যোগ দেন।

একটা সময়ে দেখা যায়, মমতা মঞ্চের পিছনের দিকে কাপড় ঢাকা অংশে চলে গিয়েছেন। পরে জানা যায়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। তার পর মঞ্চে যে মমতা এলেন, তিনি যেন আরও খুশি। আরও ফুরফুরে। মঞ্চে তখন শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, বিদ্বজ্জন— খেলা, সিনেমা, নাট্য জগতের মানুষরা রয়েছেন। মমতার অনুরোধে মঞ্চে শাঁওলি মিত্রযখন কথা বলছেন, তখন সামনের ভিড়টা তাঁর কাছে কবিতা শোনার আবদার করছে। শাঁওলি সেই আবদার মেনেওছেন। ইন্দ্রাণী হালদারের মতো অনেকেই ছিলেন বক্তার তালিকায়।

এ দিন সকাল থেকেই মঞ্চে ছিল সেই মহিলা ব্রিগেড—সোনালি গুহ, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না চট্টোপাধ্যায়রা। রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনকেও গান গাইতে বলেন মমতা। মঞ্চে যখন এ সব হচ্ছে, মমতা তখন তার ফাঁকে সেরে নিচ্ছেন প্রসাসনিক কাজকর্মও।

আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের জয়, সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনেই ধর্নামঞ্চ থেকে বললেন মমতা

ধর্মতলায় ধর্নামঞ্চে ‘দিদি-দর্শনে’ আমজনতা। —নিজস্ব চিত্র।

এই খুশির মেজাজের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ধর্না উঠে যাবে? মমতা যদিও জানাচ্ছেন, এটা তৃণমূলের একার বিষয় নয়। সবার সঙ্গে কথা বলেই এই কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ধর্নার ভবিষ্যৎ নিয়ে আর ভাবছে না মেট্রো চ্যানেল, সকাল ১১টার পর থেকে সেখানে শুধুই জয়ের হাসি।

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবরআমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE