Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

ভয়ঙ্কর দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই-করা সেই মেয়েটা— কোনি, আজও তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে! বর্ষার বিকেলে মেঘ-ছেঁড়া রোদ মুখে নিয়ে তিরিশ বছরেরও আগের স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন ক্ষিদ্দা ওরফে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৮

নিজেকে ডেকে বলি, ফাইট কোনি ফাইট

ভয়ঙ্কর দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই-করা সেই মেয়েটা— কোনি, আজও তাঁকে উদ্বুদ্ধ করে! বর্ষার বিকেলে মেঘ-ছেঁড়া রোদ মুখে নিয়ে তিরিশ বছরেরও আগের স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন ক্ষিদ্দা ওরফে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। জীবনব্যাপী কাজের মধ্যে কতখানি নিজের দেশ, দেশের মানুষ, তাঁদের বাঁচার লড়াইকে স্পর্শ করতে পেরেছেন, যেন তার তিলমাত্র নমুনা তুলে আনছিলেন। ‘আমি কত সময় মানসিক ভাবে মুষড়ে থাকি, বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি, তখনই নিজেকে ডেকে বলি— ফাইট কোনি ফাইট। কথাটা আমাকে জাগিয়ে রাখে, উদ্বেজিত করে।’ সরোজ দে’র ‘কোনি’র পাশেই তপন সিংহের ‘হুইলচেয়ার’, যেখানে নিজেই হুইলচেয়ার-বন্দি একটি মানুষ আর-একটি মানুষের পাশে দাঁড়ায়, ‘এ-লড়াই আমাকে প্রাণিত করে।’ আবার রাজা মিত্রের ‘একটি জীবন’-এ হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদলে সেই চরিত্রটি, ‘বাংলা ভাষার বিপুল শব্দভাণ্ডারের জন্য, বাঙালির মননের পরিসরকে আরও বিস্তারের জন্য একা একটি মানুষের লড়াই’, তাঁকে টানে। ভুলতে পারেন না সত্যজিতের ‘অশনি সংকেত’-এর গঙ্গাচরণকে— ‘যে লোকটা ব্রিটিশ শাসনের মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে দরিদ্র অসহায় মানুষগুলির সঙ্গে প্রাণপণে টিকে থাকার চেষ্টা করে।’ ক’দিন বাদেই ছবিতে তাঁর অভিনয়জীবনের ৫৮ বছর পূর্ণ হবে, ১৯৫৮-র ৯ অগস্ট ‘অপুর সংসার’-এর শুটিংয়ে তাঁকে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড় করান সত্যজিৎ। এ বার ২৫ অগস্ট বিকেল ৫টায় নন্দনে প্রকাশিত হবে তাঁর দু’খণ্ডের গদ্যসংগ্রহ (দে’জ), উন্মোচন করবেন নাসিরুদ্দিন শাহ। সম্পাদক শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ভূমিকা-য় লিখেছেন ‘জনপ্রিয়তার শিখরে উঠে... যে-পরিতৃপ্তি তথা আত্মশ্লাঘা প্রায় স্বাভাবিক বা অনিবার্য বলেই আমরা ধরে নিই, তা থেকে এমনই স্বতন্ত্র এই স্বর যে তা-ই চিনিয়ে দেয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্বাতন্ত্র্য।’ সৌমিত্রের সঙ্গে কথোপকথনে সে দিন নাসির, শমীকের তত্ত্বাবধানে। তাঁকে নিয়ে একটি প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। তাঁর অভিনয়, নাটক, সাহিত্য, ছবি-আঁকা নিয়ে বলবেন গৌতম ঘোষ পবিত্র সরকার অনিতা অগ্নিহোত্রী যোগেন চৌধুরী। ৮২-তে পৌঁছেও মঞ্চাভিনয়ে খামতি নেই। এই সে দিনও নক্ষত্রখচিত অনন্ত আকাশ আর একফালি চাঁদের ছবি এঁকেছেন। টানা তিন মাস কমবয়সিদের অভিনয় শেখালেন ভবানীপুরের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে। অভিনয় করলেন এমন এক লড়াকু চরিত্রে, যার সাহচর্যে জীবন ফিরে পায় মানসিক-পর্যুদস্ত একটি মেয়ে, অমিতরঞ্জন বিশ্বাসের ছবি ‘ব্রিজ’। ‘আমার মনটা অসন্তুষ্ট মানুষের মন, নিরন্তর অতৃপ্তি... বয়স-স্বাস্থ্য মেনে চলতে হয় ঠিকই, কিন্তু তেমন চরিত্র পেলেই...’ ইচ্ছে জানালেন সৌমিত্র। ছবি: সুকুমার রায়

চিন্তার সংকট.

পরের প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে আদৌ আমরা বাসযোগ্য করে রাখছি কি না, সে প্রশ্ন আজ অনেকেরই মুখে। কিন্তু এক দিকে বৈজ্ঞানিকদের কচকচি আর অন্য দিকে কল্পবিজ্ঞান, এর মাঝখানে সাহিত্য শিল্প সংস্কৃতিতে এই বিপর্যয়ের কোনও ছায়া পড়ে না কেন? এই সংকট যে সংস্কৃতিরও সংকট, আমাদের কল্পনার সংকট, সে কথা চাঁছাছোলা গদ্যে শুনিয়ে দিয়েছেন অমিতাভ ঘোষ, তাঁর দ্য গ্রেট ডিরেঞ্জমেন্ট/ ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দি আনথিংকেবল (অ্যালেন লেন) বইয়ে। ১ অগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় আই সি সি আর-এ পেঙ্গুইন ইন্ডিয়ার সঙ্গে টাটা স্টিল কলকাতা লিটারারি মিট-এর উদ্যোগে বইটির প্রকাশ, লেখক কথা বলবেন শ্রীজিৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ২ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ভবনের বিবেকানন্দ হলে বিকেল ৪টেয় লেখকের সঙ্গে আলোচনায় স্কুল অব ওশেনোগ্রাফিক স্টাডিজের শিক্ষক সুগত হাজরা ও তুলনামূলক সাহিত্যের স্যমন্তক দাস।

পঁচিশে লোপা

মেয়েবেলায় হাজরা রোডের বাড়ির পিছনে পোড়ো মাঠে কি গলিতে ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন, আবার গানবাজনাতেও ছিল প্রবল উৎসাহ। ছ’-সাত বছর বয়সে বাবা প্রণব মিত্র-র কাছে প্রথম গান শেখা। তার পর রীতা রায়, অরুণ ভাদুড়ি, সুকুমার মিত্র, সুভাষ চৌধুরী। ‘আমাকে রাজ্য সংগীত অ্যাকাডেমির ফসলও বলতে পারেন। আমার প্রথম রেকর্ডও ওখান থেকে।’ বলছিলেন লোপামুদ্রা মিত্র। কুড়ি বছর পূর্ণ করা ‘বেণীমাধব’ই তাঁর প্রথম পরিচয়। আজও প্রত্যেক অনুষ্ঠানে যা গাইতেই হয়। তা ছাড়া ‘ভালবাসতে বলো’, ‘সাঁকোটা দুলছে’, ‘আবার আসিব ফিরে’তেও তিনি তুমুল সাফল্য পেয়েছেন। সমীর চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে পেশাদারি গানের জগতে আসার পঁচিশ পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষেই ‘প্রথা’র আয়োজনে ‘পঁচিশে লোপা কুড়িতে বেণীমাধব’, ৬ অগস্ট সন্ধে সাড়ে ৬টায় রবীন্দ্রসদনে।

মেজ সম্পাদক

‘সন্দেশ’-এর স্বর্ণযুগে বিখ্যাত সম্পাদকত্রয়ীর মধ্যে ‘মেজো সম্পাদক’ ছিলেন নলিনী দাশ (১৯১৬-১৯৯৩)। তাঁর শতবর্ষে ‘সন্দেশ’-এর (সম্পা: সন্দীপ রায়) সংখ্যা ‘নলিনী দাশ ১০০’। তাতে প্রসাদরঞ্জন রায় অবশ্য খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন, তখন ‘বড়ো সম্পাদক’ ছিলেন লীলা মজুমদার, আর ‘ছোটো সম্পাদক’ সত্যজিৎ রায়! সঙ্গে প্রচ্ছদের ছবিটি চল্লিশের দশকের, তখন নলিনী ইউরোপ-যাত্রী, সে যাত্রার চিঠিপত্র-ডায়েরিও ইতিমধ্যে গ্রন্থিত। তাঁর সৃষ্টি গোয়েন্দা গণ্ডালু— মেয়ে গোয়েন্দার দল, চার জন বয়ঃসন্ধির স্কুলছাত্রীর রহস্য অ্যাডভেঞ্চার— বাংলা সাহিত্যে অভিনব। প্রচুর গল্প লিখেছেন, উপন্যাসও, স্মৃতিকথা সত্যজিৎকে নিয়ে। উপেন্দ্রকিশোরের কন্যা ও সুকুমারের বোন পুণ্যলতার মেয়ে নলিনী, পিতা অরুণনাথ, স্বামী অশোকানন্দ দাশ। বেথুন কলেজের অধ্যক্ষ নলিনী কৃতী ছাত্রী ছিলেন দর্শনের, শিক্ষকতার পাশাপাশি যুক্ত থেকেছেন সমাজকল্যাণমূলক সংস্থার সঙ্গেও। ‘সন্দেশ’-এর সব বয়সের লেখক-কর্মীদের স্মৃতিতে তিনি আজও উজ্জ্বল স্নেহপ্রবণ ও দক্ষ অধিনায়ক রূপে। সংখ্যাটিতে বাড়তি পাওনা ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবির বুকলেট।

ষাট বছরে

এক দিকে তিনি শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী, অন্য দিকে গীতিকার, কম্পোজার, কবি। বাজান তবলা ও হারমোনিয়ামও। পণ্ডিত জয়ন্ত বসুর বাবা বিশ্বনাথ বসু ছিলেন নামকরা তবলিয়া, মা ভারতী বসু সেতারশিল্পী। জন্ম ১৯৫৬-তে। ভোকাল সিম্ফনি, ক্লাসিকাল অর্কেস্ট্রা এবং তবলা সিম্ফনি, ফিউশন সংগীত নিয়ে প্রচুর কাজ করেছেন দেশবিদেশে। তাঁর ষাট বছরের জন্মদিন উপলক্ষে নজরুল মঞ্চে ৬ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টেয় বিনকার মিউজিকাল সোসাইটির আয়োজনে পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ ও পণ্ডিত তন্ময় বসু পরিবেশন করবেন জয়ন্ত বসুর তৈরি রাগ ও তাল, তাঁর কবিতা পড়বেন শ্রীজাত। আছে গান ও নৃত্যানুষ্ঠান। অন্য দিকে, ‘দেশ আমার’ নামে একটি সিডি প্রকাশিত হবে ৫ অগস্ট সন্ধেয় রবীন্দ্রসদনে ডাইমেনশন ফোর-এর আয়োজনে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও অপর্ণা সেনের কণ্ঠে স্বদেশপ্রেমের কবিতার সঙ্গে থাকছে দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ ও দিলীপকুমারের স্বদেশ পর্যায়ের গান, নূপুরছন্দা ঘোষের কণ্ঠে। নূপুরছন্দা সে দিন গাইবেনও।

ঢাকা কমিকস

এক দিকে তিনি শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী, অন্য দিকে গীতিকার, কম্পোজার, কবি। বাজান তবলা ও হারমোনিয়ামও। পণ্ডিত জয়ন্ত বসুর বাবা বিশ্বনাথ বসু ছিলেন নামকরা তবলিয়া, মা ভারতী বসু সেতারশিল্পী। জন্ম ১৯৫৬-তে। ভোকাল সিম্ফনি, ক্লাসিকাল অর্কেস্ট্রা এবং তবলা সিম্ফনি, ফিউশন সংগীত নিয়ে প্রচুর বছর তিনেক বয়স হয়ে গেল ঢাকা কমিকস-এর। তবে ইতিমধ্যেই বিদেশি কমিকস-এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তা নতুন প্রজন্মের কমিকস-পড়ুয়াদের মন জয় করে নিয়েছে। ছাপা, বাঁধাই, ড্রইং, বিষয়-বৈচিত্র— সব মিলিয়ে সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো এমন চমৎকার উপস্থাপনা আগে হয়নি। স্পাই-সিরিজ থেকে সায়েন্স-ফিকশন কিছুই বাদ যাচ্ছে না। এদের বইয়ের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৩২, নিয়মিত সিরিজ ৪টি। বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষা সহজ করতে শিক্ষার্থীদের জন্য এডুকেশন-কমিকসও বের করেছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলে প্রকাশ করেছে শিশুদের কমিকস। ওপার বাংলায় ঝড়-তোলা এই ঢাকা কমিকস এ বার আমাদের শহরেও। পরিবেশনায় বুক ফার্ম।

দার্শনিক

এক দিকে তিনি শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী, অন্য দিকে গীতিকার, কম্পোজার, কবি। বাজান তবলা ও হারমোনিয়ামও। পণ্ডিত জয়ন্ত বসুর বাবা বিশ্বনাথ বসু ছিলেন নামকরা তবলিয়া, মা ভারতী বসু সেতারশিল্পী। জন্ম ১৯৫৬-তে। ভোকাল সিম্ফনি, ক্লাসিকাল অর্কেস্ট্রা এবং তবলা সিম্ফনি, ফিউশন সংগীত নিয়ে প্রচুর দার্শনিক ও নন্দনতাত্ত্বিক প্রবাসজীবন চৌধুরী সৌন্দর্য-দর্শন গ্রন্থে লিখেছিলেন, ‘শিল্পের আবেদন সার্বভৌম এবং দেশকালের গণ্ডিমুক্ত। কিন্তু শিক্ষার আবেদন সেইরূপ হয় না।’ এই বাক্যই চিনিয়ে দেয় আজকের শিক্ষার মন ও সৌন্দর্যের ভিতরকার সংকটের রূপকে। ৬ অগস্ট সন্ধে ৬টায় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাথমেটিক্স লেকচার গ্যালারিতে (মূল ভবনের দোতলায়), প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও সূত্রধর-এর যৌথ উদ্যোগে প্রবাসজীবন চৌধুরীর (১৯১৬-১৯৬১) জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপনের আয়োজন। ‘স্বাধীনতার ব্যাপ্তি: মননের সেতুবন্ধ’ কার্যক্রমে প্রবাসজীবন চৌধুরী জন্মশতবর্ষ স্মারক বক্তৃতায় ‘আমাদের মননের স্বাধীনতা’ বিষয়ে বলবেন সৌরীন ভট্টাচার্য। স্মারক সম্মাননা পাবেন কল্যাণকুমার বাগচী, প্রবাসজীবনের পত্র পাঠ করবেন ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত। প্রকাশিত হবে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের জাতীয় পতাকা, অতুল্য ঘোষের পত্রালী, প্রবাসজীবন চৌধুরীর দার্শনিক কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য, অমলেশ ভট্টাচার্যর বন্দে মাতরম, কবিতা চন্দ-র ওই খেলা, ওই গান, আর শ্রুতি গোস্বামীর দিলীপকুমার রায়: জীবন ও সংগীত-দর্শন বইগুলি (সূত্রধর)।

কল্লোল যুগ

এক দিকে তিনি শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী, অন্য দিকে গীতিকার, কম্পোজার, কবি। বাজান তবলা ও হারমোনিয়ামও। পণ্ডিত জয়ন্ত বসুর বাবা বিশ্বনাথ বসু ছিলেন নামকরা তবলিয়া, মা ভারতী বসু সেতারশিল্পী। জন্ম ১৯৫৬-তে। ভোকাল সিম্ফনি, ক্লাসিকাল অর্কেস্ট্রা এবং তবলা সিম্ফনি, ফিউশন সংগীত নিয়ে প্রচুর আয়োজক ছিলেন চিত্রা পালচৌধুরী, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী। রবীন্দ্র-প্রয়াণের পরই পৌঁছন শান্তিনিকেতনে। তাঁর বাবা কল্লোলের প্রতিষ্ঠাতা দীনেশরঞ্জন দাশ। সহযোগী ছিলেন গোকুলচন্দ্র নাগ। সে সময়ের বাংলার চেহারা, প্রতিবাদ সবই ফুটে উঠেছিল কল্লোলের পাতায় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, নজরুল, প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখায়। ১৩৩০ বঙ্গাব্দে ১০/২ পটুয়াটোলা লেনে ছোট্ট একটি ঘরে টেবিল-চেয়ার আর শতরঞ্চি নিয়ে কল্লোলের যাত্রা শুরু। সেদিনের সেই প্রতিবাদ-সচেতনতার কথা মাথায় রেখে কল্লোল ও দীনেশরঞ্জনকে স্মরণ করলেন চিত্রাদেবী। সঙ্গে কন্যা নয়নতারা পালচৌধুরী, ছোট্ট ঘণ্টাখানেকের অনুষ্ঠানে সে যুগের গান অর্থাৎ পঙ্কজ মল্লিকের একদা বিখ্যাত গান ‘পিয়া মিলন তো জানা’ গেয়ে শোনান অরুণলেখা সেনগুপ্ত। অতিথি হিসেবে ছিলেন নবনীতা দেবসেন, দময়ন্তী বসু সিংহ, অশোক বিশ্বনাথন প্রমুখ। এ অনুষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল চল্লিশের দশকে।

বাংলার পুতুল

এক দিকে তিনি শাস্ত্রীয়সংগীত শিল্পী, অন্য দিকে গীতিকার, কম্পোজার, কবি। বাজান তবলা ও হারমোনিয়ামও। পণ্ডিত জয়ন্ত বসুর বাবা বিশ্বনাথ বসু ছিলেন নামকরা তবলিয়া, মা ভারতী বসু সেতারশিল্পী। জন্ম ১৯৫৬-তে। ভোকাল সিম্ফনি, ক্লাসিকাল অর্কেস্ট্রা এবং তবলা সিম্ফনি, ফিউশন সংগীত নিয়ে প্রচুর ‘পুতুল নেবে গো পুতুল’— শহর কলকাতায় এখন নতুন অতিথি পশ্চিমবঙ্গের সব জেলার নানা রকম পুতুল। কেউ মাটির, কেউ পটের, কেউ তালপাতা, গালা, শোলা, জো পুতুল, আরও কত কী! মোট চল্লিশ জন শিল্পী। দার্জিলিং থেকে কাঠের পুতুল নিয়ে আশুতোষ বাগচী, উত্তর দিনাজপুরের মাটির ঘোড়া নিয়ে ভানু পাল, দক্ষিণ দিনাজপুরের তালপাতার ও মাটির পুতুল নিয়ে নেতাই হেমব্রম। মুর্শিদাবাদের পাটের পুতুল, কাঁঠালিয়ার মাটির পুতুল, বাঁকুড়ার হিঙ্গুল পুতুল, বোঙা হাতি, পূর্ব মেদিনীপুরের বেণী পুতুল কী ভাবে বানাতে হয় তা হাতেকলমে শেখানো হচ্ছে ছিটকালিকাপুরের লোকগ্রামে। তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের ‘লোকপ্রসার’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ‘বাংলার পুতুল’ কর্মশালা চলবে ২ অগস্ট পর্যন্ত। বিড়লা অ্যাকাডেমিতে ‘কারুনামা’ শীর্ষক অন্য একটি কর্মশালা এবং প্রদর্শনীতে পুরুলিয়ার চড়িদা গ্রামের দ্বিজপদ সূত্রধর ছো-নাচের মুখোশ, বর্ধমানের নতুনগ্রামের তাপস নাথ কাঠের পুতুল বানাতে শেখালেন, কাজ শেখালেন আরও অনেকে। অসীম ধৈর্য নিয়ে নবীন শহুরে শিক্ষার্থীদের দীক্ষা দিলেন নিজেদের শিল্পের গোপনকথায়। আয়োজনে ছিল বাংলা নাটক ডট কম এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদি ও গ্রামীণ শিল্প নিগম।

জাগলার

হারুন অল রশিদের স্বপ্ন আর খেলার নেপথ্যে যাঁর হাত সেই অভয় মিত্র আর বছর দুয়েক পরেই পা দেবেন আশিতে। কিন্তু বুড়ো হওয়ার ভয় তাঁর নেই। দেশবিদেশের যে লক্ষ লক্ষ ফটিকচাঁদকে তিনি আনন্দ দিয়েছেন তাদের হাসিতেই তিনি চিরতরুণ, বলছেন জাগলিংয়ের জাদুকর। হপ্তাখানেক আগে সেই জাদুতেই মজে গেলেন ইতালীয় মালেরবা। জাগলিংয়ের স্কুল চালান নিজের দেশে, ভারতীয় জাগলিংয়ের সুলুকসন্ধানে এসেছেন। তাঁর আমন্ত্রণে ভারতীয় জাগলিংয়ের দুই প্রজন্ম অভয় মিত্র ও তাঁর পুত্র অভিষেক মিত্র গিয়েছিলেন মালেরবার সঙ্গে দেখা করতে। তার পরে দুই শিল্পীতে হাতের খেলায় তুফান উঠল। তুফানই তো বটে, ‘একসঙ্গে পনেরো-ষোলো জন মিলে একই ছন্দে বল নিয়ে জাগলিং করছে, সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো একটা অনুভূতি হল আমার, ওঁদের জাগলিং দেখে। জাগলিংটাকে ছড়িয়ে দিতে গড়ের মাঠে রীতিমতো জাগলিং অ্যাকাডেমি খুলেছিলাম কয়েক জন ছাত্র নিয়ে। সে সব আজ স্মৃতি।’ তবে স্মৃতিভারে পড়ে থাকার মানুষ নন অভয়। লিলুয়া ওয়ার্কশপে শ্রমিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হয়েছেন। বাবা কালোসোনা মিত্রের কাছে শেখা জীবনের প্রথম জাগলিংয়ের চর্চাটাও চালিয়ে গিয়েছেন, যাচ্ছেন এখনও। সে সব নিয়ে লিখেছেন আত্মজীবনী, যা প্রকাশের পথে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

শ্রমিক নেতা

বিদেশে (কাবুলে) ভারতের প্রথম স্বাধীন সরকারে তিনি ছিলেন মন্ত্রী। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়া কী করছে, তা দেখতে কাবুল থেকে পায়ে হেঁটে মস্কো পৌঁছন। সেখানে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে মার্ক্সীয় দর্শন ও রুশ ভাষা রপ্ত করেন। রাশিয়াতেই আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন সংস্থার সংস্পর্শে আসেন শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৭-১৯৮২)। পাটকল শ্রমিকদের জন্য গড়েন ভাটপাড়া-নৈহাটি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি। জন্ম খুলনা জেলার মূলঘরে। হুগলি মহসিন কলেজ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এসসি পড়তে পড়তেই প্রবাসিনী দেবীর সঙ্গে বিয়ে। আজীবন ডেমোক্র্যাটিক সোসালিজমে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৯২০-তে গাঁধীজির প্রেরণায় অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৩৩ সালে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের কানপুর সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বছর চারেক পর সভাপতি। ১৯৩৭-এ চটকল শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সফল ধর্মঘটের পর তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দ মজদুর সভার প্রধান সংগঠক। তাঁর প্রধান কর্মকেন্দ্র ছিল হাওড়ায় ৪ তেলকল ঘাট রোড (এখন, নিত্যধন মুখার্জি রোড)। ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’ ঘোষিত হলেও বাড়িটি সংস্কারের অভাবে ভগ্নপ্রায়। এ বার, তাঁরই নামাঙ্কিত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে শিবনাথ ব্যানার্জি ইনস্টিটিউট অব লেবার, মহাজাতি সদন অ্যানেক্স বিল্ডিং সভাগৃহে, ১ অগস্ট, সন্ধে ৬টায়। ‘ব্যক্তিপূজা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী’ বিষয়ে বলবেন সৌরীন ভট্টাচার্য, সভাপতি কাশীকান্ত মৈত্র।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy