Advertisement
E-Paper

কুর্গে কয়েকদিন

মেঘ, পাহাড় আর সবুজের আতিশয্যে কাটিয়ে আসুন কয়েকটা দিন। মন ভাল হয়ে যাবে।

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০০:০০

পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালে কোদাগু ডিসট্রিক্টে বসত পাহাড়-ঘেরা এক অনন্ত স্বপ্নের, যার নাম কুর্গ। তার শরীরে নিষ্কলুষ সবুজের প্রাবল্য এবং কাবেরীর স্পন্দন। তাই ইদানীং টুরিস্ট স্পট বাছতে গিয়ে বাঙালি কর্নাটকের এই মনোরম জায়গাটিতে একটু বেশিই টিকমার্ক বসাচ্ছে। উঁচু-নিচু পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ, বিরামহীন ছোট-ছোট ঝরনা, নদী, একরের পর একর জমিতে কফি চাষ... যেন জলছবি।

এবার ঘুরে দেখার জন্য জেনে নিন সেই ছবির মধ্যেকার চরিত্রগুলোর বর্ণন।

ভাগমণ্ডল মন্দির: মাদিকেরী থেকে ২০ কিলোমিটার মতো দূরত্বে দক্ষিণ ভারতীয় ধাঁচে তৈরি, নিচু ছাদের এই মন্দিরটির নির্মাণশৈলী চোখ টানে। মূল মন্দির প্রাঙ্গণের ভিতরে রয়েছে আরও কয়েকটি মন্দির। বেলা দুটোর মধ্যে গেলে ভোগ পাবেন। মন্দিরের পাশেই কাবেরী এবং তার দুই শাখা কানিকে ও সুজ্যোতির সঙ্গমস্থল। যদিও দুটি নদীকেই এখানে দেখা যায়, তৃতীয়টি অন্তঃসলিলা। তবে এলাহাবাদের ত্রিবেণী সঙ্গমের মতো নদীর প্রবহমানতা এখানে নেই, তারা প্রায় স্থবির। এখানে একটু বলে দিই, মন্দিরের খুব কাছে একটি নিরামিষ রেস্তরাঁ আছে, চাইলে সেখানে পেটপুজো করে নিতে পারেন।

তলাকাবেরী

তলাকাবেরী: ব্রহ্মগিরি পর্বতের ঢালে কাবেরীআম্মা মন্দিরের মাঝে একটি ছোট জলাশয় রয়েছে, যাকে কাবেরীর উৎপত্তিস্থল হিসেবে ধরা হয়। এই পবিত্র কুণ্ড তলাকাবেরীতে অনেকেই স্নান করেন। পাহাড়ের কোলে এই পুণ্যস্থান যেন মেঘের বাড়ি। বৃষ্টি নামলে, অপূর্ব সে দৃশ্য। পায়ের জোর থাকলে সিঁড়ি ভেঙে পাহাড়চুড়োয় উঠে যান। পুরো জায়গাটার একটা অসাধারণ ভিউ পাবেন।

দু’বারে এলিফ্যান্ট ক্যাম্প: কাবেরী নদীর ধারে এই এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে যেতে হয় বোটে চড়ে, কাবেরী নদী পেরিয়ে। তবে এখানে কিন্তু নদীতে বেশ স্রোত, তাই যেতে কিছুটা ভয় লাগে বইকী! এখানে রিভার র‌্যাফটিংয়ের বেশ কয়েকটি পপুলার পয়েন্ট আছে। তবে সেখানে লম্বা লাইন থাকে। তাই হাতে সময় নিয়ে যাবেন। যাই হোক, হাতিশালে দেড়শোরও বেশি হাতির বাস। তাদের স্নান করানো, খাওয়ানো, মাহুতদের হাতিকে পোষ মানানো দেখতে ভারী ভাল লাগে।

দ্য গোল্ডেন টেম্পল

দ্য গোল্ডেন টেম্পল বা নামড্রোলিং মনাস্ট্রি: কুশলগনর থেকে ছ’কিলোমিটার মতো দূরত্বে বাইলাকুপের দ্য গোল্ডেন টেম্পলের বিশালত্ব নির্বাক করে দেয়। বিস্তৃত এই মঠ দ্বিতীয় বৃহত্তম তিব্বতী মনাস্ট্রি। এর গোল্ডেন টেম্পল নামকরণের কারণ বিভিন্ন বুদ্ধমূর্তি ও ছবিতে সোনার কারুকার্য। বিশেষ উল্লেখ্য ৪০ ফুটের গোল্ড প্লেটেড বুদ্ধমূর্তিটি। মঠের দেওয়াল ও ছাদ অসাধারণ কারুকার্যময়। প্রায় ১০ হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী থাকেন এই মঠে। ভগবান বুদ্ধের সামনে নিঃশব্দে অপার শান্তিতে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকা যায়। মঠের বাইরে তিব্বতী পোশাক, খেলনা, মূর্তির হরেক পশরা সাজিয়ে বসে থাকেন দোকানিরা।

অ্যাবি ফলস

অ্যাবি ফলস: একদিকে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে কফি, অন্যদিকে মশলার চাষ। মাঝখানে অ্যাবি ফলসের সশব্দ উপস্থিতি। মাদিকেরী টাউন থেকে উঁচু-নিচু প্রায় দশ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পৌঁছতে হয় গন্তব্যে। গাড়ি যেখানে রাখা হয়, সেখান থেকে আরও সিঁড়ি ভেঙে পৌঁছতে হয় ৭০ ফুটের ঝরনার ধারে। তবে সবুজের সমারোহ এবং ফুলের বাহার সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে। ফলসের বিপরীতে রয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ।

কীভাবে যাবেন?

সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন মহীশূর। এখান থেকে কুর্গ ১২০ কিমি, বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন। ম্যাঙ্গালোর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট নিটকবর্তী বিমানবন্দর। সারা বছরই পর্যটকের ভিড় থাকলেও নভেম্বর থেকে মার্চ কুর্গ বেড়ানোর সেরা সময়।

কোথায় থাকবেন

কুর্গে থাকার জন্য আমরা বেছে নিয়েছিলাম পাহাড়চুড়োয় এখানকার প্রধান শহর মাদিকেরী। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য হোটেল, রিসর্ট এবং হোমস্টে। শপিংয়ের জন্য সারি-সারি দোকানপাট, সিল্কের শাড়ি, কফি, মশলা, হোমমেড চকোলেট, লোকাল ওয়াইন। মাদিকেরীতেও থাকতে পারেন আবার কুশলনগরেও থাকতে পারেন। কুশলনগরের কাছে বিভিন্ন দামের অসংখ্য হোটেল রিসর্ট রয়েছে। তবে এখানে হোমস্টেতে থাকলে খরচও কম হয় এবং বাড়ির মতো একটা ফিলও পাওয়া যায়।

পারমিতা সাহা

তথ্য সহায়তা: সঞ্চারী ঘটক

Kodagu district Coorg
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy