সাধ করে মোটা টাকা দিয়ে ফোন কিনেছেন। অথচ বছর ঘুরতেই যেন বুড়িয়ে গিয়েছে সেটা। এ সব ক্ষেত্রে নেতিয়ে পড়া মুঠোফোন ডিভাইসকে চাঙ্গা করতে তড়িঘড়ি স্টোরেজ় ফাঁকা করে ফেলেন অনেকেই। কিন্তু, তাতে যে সমস্যার সমাধান হয়, এমনটা নয়। এই পরিস্থিতিতে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললেই এই বিপদ থেকে চটজলদি মুক্তি পেতে পারেন।
স্মার্টফোন ধীর গতিতে চলার একাধিক কারণ রয়েছে। স্টোরেজ ফাঁকা থাকলেও এটা হতে পারে। ব্যবহারের সময়ে এতে আলাদা আলাদা জায়গায় জমা হতে থাকে বিপুল পরিমাণে তথ্য (পড়ুন ছবি, ভিডিয়ো বা অন্য কিছু)। ফলে সেগুলিকে খুঁজে আনতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফোনকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এতে গরম হওয়ার পাশাপাশি ধীরে ধীরে হ্রাস পায় মুঠোফোন ডিভাইসের গতি।
গ্যাজেট বিশ্লেষকেরা এর নাম দিয়েছেন ‘থার্মাল থ্রটলিং’। ফোনের বয়স বাড়লে খারাপ হতে থাকে এর কুলিং সিস্টেম। নষ্ট হয়ে যায় থার্মাল পেস্ট আর অল্প ব্যবহারেই গরম হয় সিপিইউ। তখন প্রসেসর নিজে থেকে ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। ফলে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশন আস্তে আস্তে চলতে থাকে।
ফোনের বয়স হলে আরও একটি সমস্যা দেখা দেয়। সেটা হল, বহু অ্যাপ্লিকেশন নীরবে মুঠোফোন গ্যাজেটটির ব্যাকগ্রাউন্ডে নিজে থেকে চলতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং শপিং অ্যাপগুলি হঠাৎ নিজে থেকে কাজ শুরু করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, গ্রাহককে নিজের থেকে ট্র্যাকও করতে থাকে তারা। এতেও গতি কমে ফোনের।
এর পাশাপাশি অবশ্যই বলতে হবে ব্যাটারির ক্ষমতা কমে যাওয়ার কথা। ফোনের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা মারাত্মক হয়ে ওঠে। তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ফোনের ভিতরের কলকব্জা (পড়ুন প্রসেসর বা র্যাম) নিজের থেকে জোরে ছোটা বন্ধ করে দেয়। সবশেষে আসবে সিস্টেম আপডেটের প্রসঙ্গ। গ্রাহককে বাধ্যতামূলক ভাবে এটা করতে হয়।
আরও পড়ুন:
কিন্তু, পুরনো ফোনে সফ্টঅয়্যার আপডেট হলেও সেটা ঠিকমতো অপটিমাইজ় হয় না। কারণ, এই প্রক্রিয়াটি নতুন যুগের ফোনের কথা ভেবে তৈরি করে থাকেন প্রযুক্তিবিদেরা। তবে ফোনের গতি কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে নতুন কিনতে হবে, তা কিন্তু নয়। এর জন্য বিশ্লেষকেরা মাসে বা অন্তত বছরে এক বার ফোনকে রিসেট করার পরামর্শ দিয়েছেন।
পাশাপাশি, ফোন ‘বুড়ো’ হয়ে গেলে ব্যাটারি বদলাতে পারেন গ্রাহক। তাতে কিছুটা গতি বাড়বে সংশ্লিষ্ট ডিভাইসের। ব্যবহারকারীদের অ্যাপ্লিকেশন ক্যাশ মেমোরি প্রতি দিন পরিষ্কার করা উচিত। পাশাপাশি, স্টোরেজের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ফাঁকা রাখতে হবে। এই টিপ্স মেনে চললে অনায়াসে দু’-তিন বছর পুরনো স্মার্টফোনই কাজ চলে যাবে, বলছেন গ্যাজেট বিশ্লেষকেরা।