স্মার্টফোনে কতটা সুরক্ষিত গোপনীয়তার অধিকার? এই নিয়ে দুনিয়া জুড়ে রয়েছে বিতর্ক। গ্যাজেট বিশ্লেষকদের দাবি, গোপনীয়তার অধিকার সুরক্ষিত থাকবে না জেনেই ব্যবহার করতে হবে স্মার্টফোনকে। কারণ ডিলিট, রিসেট বা ফরম্যাট করে দিলেও এতে থাকা তথ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সান্ত্বনা একটাই। যে কেউ এই কাজ করতে পারবেন না।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ফোনের কোনও তথ্য, ছবি বা ভিডিয়ো ডিলিট করা মানে সেটা মুছে ফেলা নয়। গ্রাহক শুধুমাত্র চোখের সামনে থেকে সেটাকে সরিয়ে দিচ্ছেন। ফলে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা প্রয়োজনে সেলিব্রিটি, এক্স আর ওয়াই বা অক্সিজ়েন ফরেন্সিকের মতো সফ্টঅয়্যার ব্যবহার করে সেগুলিকে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
জঙ্গি হামলা, খুন বা আর্থিক তছরুপের মতো বড় অপরাধের তদন্তে নেমে অনেক সময় সন্দেহভাজনদের স্মার্টফোন ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়ে থাকে ইডি, সিবিআই বা এনআইএ-র মতো সংস্থা। সেখান থেকেই সংশ্লিষ্ট মুঠোবন্দি ডিভাইসের নাড়িনক্ষত্র জানতে পারেন গোয়েন্দারা। আসলে স্মার্টফোন হল একটা টাইম মেশিন। তাই সরকারি সংস্থার পক্ষে এর ইতিহাসের নাগাল পাওয়া মোটেই কঠিন নয়।
এ ছাড়া হোয়াট্সঅ্যাপ বা গুগ্ল ড্রাইভে রাখা তথ্য কখনওই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় না। স্টোরেজ ডিভাইস ক্লাউড ব্যাকআপ থেকে সেগুলিকে বার করে আনা সম্ভব। আইফোনের ক্ষেত্রে অবশ্য তথ্য জানতে মার্কিন টেক জায়ান্ট সংস্থা অ্যাপ্লের অনুমতির প্রয়োজন হয়। সরকারি তদন্তকারী সংস্থার অবশ্য সে ক্ষেত্রে তেমন বেগ পেতে হয় না।
আরও পড়ুন:
স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে টেলিকম তথ্যও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ ফোনের টাওয়ার লোকেশন, কোন নম্বরে কত বার গ্রাহক কথা বলেছেন বা মেসেজ করেছেন— এগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রাখে টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। তাই সরকারি সংস্থা সেটা চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাতে সেই তথ্য তুলে দেয় তারা।
উদাহরণ হিসাবে হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটের কথা বলা যেতে পারে। গ্রাহক যদি সেটা ডিলিট করে দেন, তা হলেও ফরেন্সিক ল্যাবের কর্মীরা তা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। ক্লাউড স্টোরেজ ভেঙে সেখান থেকে চ্যাট ফিরিয়ে আনার কৌশল জানা রয়েছে তাদের। হোয়াট্সঅ্যাপ অবশ্য দাবি করে থাকে যে, গোপনীয়তার অধিকার সব সময় সুরক্ষিত থাকবে। বাস্তবে যা একেবারেই সত্যি নয়।