মাইক্রোঅয়েভ অভেনের ভিতরে ধাতব বস্তু রাখলেই সর্বনাশ! তাহলেই নাকি তীব্র বিস্ফোরণে ফেটে যাবে ওই যন্ত্র। অনেকের আবার ধারণা মাইক্রোঅয়েভ অভেনের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে হতে পারে ক্যানসার। এগুলির কতটা সত্যি, কতটাই বা মিথ্যা রটনা? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, মাইক্রোঅয়েভ অভেনের ভিতরে ধাতুর কোনও বস্তু, যেমন চামচ বা ফয়েল রাখলে কখনওই ঘটবে না কোনও বিস্ফোরণ। তবে যন্ত্রটির ভিতরে ধাতব কিছু রাখলে বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ তৈরি হতে পারে। যাতে মাইক্রোঅয়েভ অভেনের ভিতরের অংশ পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই কারণেই ধাতব বস্তু যন্ত্রটির ভিতরে না রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে নির্মাণকারী সংস্থা।
মাইক্রোঅয়েভ অভেনে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় বলে আমজনতার অনেকের ধারণা রয়েছে। যদিও বিজ্ঞান সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছে। রান্নার গ্যাসের তুলনায় অনেকটাই দ্রুত খাবার তৈরি করা যায় মাইক্রোওয়েভে। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট যন্ত্রটিতে অল্প আঁচে খাবার বানানোর সুযোগ রয়েছে। অন্য দিকে গ্যাসের উপর কড়াই বসিয়ে রান্না করলে সেখানে তাপমাত্রা থাকে অনেক বেশি। ফলে এতে খাবারের ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মাইক্রোঅয়েভ অভেনে সেই সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
কেউ কেউ আবার বলেন, সংশ্লিষ্ট যন্ত্রটিতে নাকি ফ্রিজে রাখা অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার গরম করা যায় না। মাইক্রোঅয়েভ অভেনের ক্ষেত্রে সেটাও সঠিক নয়। কারণ এতে বাইরের দিক থেকে তাপ ভিতরে ঢুকতে থাকে। ফলে ফ্রোজ়েন খাবার ভিতরে রেখে অল্প সময় মাইক্রোঅয়েভ অভেন চালালে এর বাইরের দিকটা বেশি গরম হবে। সে ক্ষেত্রে খাবারের ভিতরের অংশ ঠান্ডা থেকে যেতে পারে।
আর তাই ফ্রোজ়েন খাবারকে গরম করতে হলে ডিফ্রস্ট মোডে চালাতে হবে মাইক্রোঅয়েভ অভেন। তবে খাবারকে অনেকটা বেশি সময় ধরে অল্প অল্প করে গরম করলেও মিটে যাবে এই সমস্যা। সংশ্লিষ্ট যন্ত্রটির থেকে যে বিকিরণ হয় তাতে ক্যানসার হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, নন আয়োনাইজ়িং বিকিরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে মাইক্রোঅয়েভ অভেন, যার সঙ্গে রেডিয়ো ওয়েভের যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। নন আয়োনাইজ়িং বিকিরণ খাবারের ভিতরের জলীয় অংশকে গরম করতে পারে। মানবদেহের কোষের ক্ষতি করার ক্ষমতা এর নেই।