সুদৃশ্য প্যাকিং বাক্সে মুড়ে গ্রাহকের হাতে পছন্দের পণ্য তুলে দেয় ই-কমার্স সংস্থা। সেখান থেকে পণ্যটি বার করে নেওয়ার পর প্রায় সকলেই ফেলে দেন ওই প্যাকিং বাক্স। কিন্তু, কোনও ভাবে বাক্সটি হ্যাকারদের হাতে পড়লে আর রক্ষে নেই। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে নিমেষে তাঁরা ফাঁকা করে দিতে পারে ওই গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এর থেকে সাবধান হওয়ার টিপ্স রইল আনন্দবাজার ডট কমের এই প্রতিবেদনে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি বাক্স হাতিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা চুরি একটা নতুন ধরনের সাইবার অপরাধ। ধীরে ধীরে বাড়ছে এই প্রবণতা। ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি বাক্সগুলির গায়ে সাঁটা থাকে একটি স্টিকার। সেখানে গ্রাহকের ইমেল আইডি, ফোন নম্বর থেকে শুরু করে বাড়ি বা অফিসের ঠিকানা-সহ থাকে একগুচ্ছ তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি, সেগুলি হাতে পেয়ে গেলেই ফাঁদ পাততে শুরু করে হ্যাকারের দল।
পুলিশ জানিয়েছে, ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি বাক্স সংগ্রহ করে সাধারণত সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ফোন করছেন সাইবার অপরাধীরা। এর পর বিশ্বাস অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ফোন করে বাক্সের গায়ে থাকা তথ্যগুলি বলছেন তাঁরা। শেষে ই-কমার্স সংস্থাটির নাম করে দেওয়া হচ্ছে বিপুল অঙ্কের ভাউচার জেতার টোপ। তাতেই বিপদে পড়ছেন গ্রাহক।
তদন্তকারীদের দাবি, ফোন নম্বর, ইমেল আইডি থেকে শুরু করে বাড়ির ঠিকানা, এমনকি কোন তারিখে কোন ই-কমার্স সংস্থায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহক কী ধরনের পণ্যের অর্ডার করেছেন— এই সমস্ত তথ্য হ্যাকার ঠিক ঠিক বলায় কেউই আর সন্দেহ করছেন না তাঁকে। কথোপকথন শেষে গ্রাহকের মোবাইল নম্বরে একটি লিঙ্ক পাঠাচ্ছেন সাইবার অপরাধীরা। ভাউচার জেতার জন্য তাতে ক্লিক করার নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁরা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে অবিশ্বাস তৈরি না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট লিঙ্কটিতে ক্লিক করে দিচ্ছেন ওই গ্রাহক। আর সঙ্গে সঙ্গেই তার ফোনে ঢুকে পড়ছে ম্যালঅয়্যার। ফলে সেখান থেকে যাবতীয় তথ্য এমনকি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি পর্যন্ত হাতিয়ে নিতে পারছেন সাইবার অপরাধীরা। এর পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে তা ফাঁকা করে চম্পট দিচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন:
এই ধরনের অপরাধ থেকে বাঁচতে সুনির্দিষ্ট কিছু টিপ্স দিয়েছেন পুলিশকর্তা ও টেক বিশেষজ্ঞেরা। প্রথমত, ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি বাক্সগুলি ফেলে দেওয়ার সময়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। বাক্সগুলির গায়ে সেঁটে থাকা স্টিকার টেনে ছিঁড়ে দিয়ে তার পর সেগুলিকে ফেলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ই-কমার্সের ভাউচার জেতার লোভ থেকে বেরিয়ে আসতেও বলেছেন তাঁরা।