কাজের প্রয়োজনে বেঙ্গালুরুতেই থাকা হয়? কিংবা দীপাবলিতে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন? সেখান থেকেই ঘুরে নিতে পারেন কর্নাটকেরই বেশ কয়েকটি জায়গা।
চিকমগলুর: বেঙ্গালুরু থেকে ঘণ্টা পাঁচেক গাড়ি ছোটালেই পৌঁছনো যাবে এমন জায়গায় যেখানে পাহাড়, কফি, ঝর্না— সবই আছে। পশ্চিমঘাটের সৌন্দর্য উপভোগে যেতে পারেন চিকমগলুর। এখানেই রয়েছে মুল্লায়নগিরি শৃঙ্গ। হেঁটেই সেখানে চড়া যায়। পাহাড়ের মাথা থেকে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দৃশ্যগোচর হয়। ঘুরে নিতে পারেন ঝারি ঝর্না। জঙ্গলের মধ্যে ঝর্না থেকে নেমে আসা জল জমে ছোট জলাশয় তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে যেতে হলে হাঁটাপথই ভরসা। গাড়ি যেখানে নামাবে, সেখান থেকে ২ কিলোমিটার হাঁটতে হবে। বাবাবুদানগিরি চিকমগলুরের আর একটি দর্শনীয় স্থান। পাহাড়ের মাথাটি চ্যাটালো। জায়গাটি সবুজ ঘাসের গালিচায় ঢাকা। এই স্থানও বেশ মনোরম। তবে পাহাড়ে চড়ার জন্য অনেক সিঁড়ি ভাঙতে হবে। ঘুরে নেওয়া যায় শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে হীরেকোলালে হ্রদ। এ ছাড়া দেখে নেওয়া যায় কৃষ্ণা রাজেন্দ্র বটানিক্যাল গার্ডেন। পশ্চিমঘাট পাহাড়ের কোলে সুন্দর করে সাজানো বাগান। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হেব্বা ঝর্না। অরণ্যের গহিনে তার অবস্থান। পাহাড় থেকে ধাপে ধাপে নামছে জলরাশি। সেখানে পৌঁছোতে গেলে গাছগাছালি ঘেরা পথ ধরে যেতে হবে বন দফতরের জিপসিতে। তার পরে হাঁটাপথে ঝর্না। তবে এক বার পৌঁছোলে হেব্বার রূপ সমস্ত ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে। ঘুরে নিতে পারে ভদ্রা অভয়ারণ্য। চিকমগলুরে কফি, গরমমশলা, চকোলেট, রূপচর্চার ভেষজ উপকরণ ভাল পাওয়া যায়।
ঘুরে নিতে পারেন চিকমগলুর। ছবি: সংগৃহীত।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে যাবেন?
বেঙ্গালুরু থেকে সড়কপথে দূরত্ব চিকমগলুরের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার। গাড়িতেই যাওয়া যায়। বাসেও যেতে পারেন বেঙ্গালুরু থেকে। সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন কাদুর এবং বিমানবন্দর মেঙ্গালুরু।
গোকর্ণ: পাহাড় এবং সমুদ্রের সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করতে হলে চলুন গোকর্ণ। পরিচ্ছন্ন সৈকত। পাহাড় রয়েছে সাগরের গা ঘেঁষে। একাধিক ছোট ছোট সৈকত রয়েছে এখানে। ওম, কুদলে, প্যারাডাইস, হাফ মুন সৈকত পর্যটকমহলে জনপ্রিয়। ওম সৈকতের একটি বৈশিষ্ট্য হল এর আকৃতি কিছুটা ও অক্ষরটির মতো। কায়াকিং-সহ একাধিক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ রয়েছে এখানে। এখানকার পুরনো গুহা-মন্দিরের আকর্ষণও যথেষ্ট। পাহাড়ের মধ্যে ছোট্ট গুহামুখ। সেখান দিয়ে প্রবেশ করলে পৌঁছোনো যায় শিবমন্দিরে। একে অনেকে গো-গর্ভ শিবমন্দিরও বলেন। শোনা যায়, বিশেষ তিথিতে চাঁদের আলো সরাসরি এখানে পড়ে।
আর যদি এক অন্য রকম সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে চান, তা হলে যেতে হবে জটায়ু তীর্থে। ওম সৈকত থেকে দূরত্ব সাত কিলোমিটার দূরে।
পাহাড় সমুদ্রের সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগে চলুন গোকর্ণ। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের দূরত্ব প্রায় ৪৮৬ কিলোমিটার। সড়কপথে যেতে ঘণ্টা দশেক সময় লাগবে। গোয়া বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। ট্রেনে বেঙ্গালুরু থেকে পঞ্চগঙ্গা, বা কারওয়ার এক্সপ্রেস ধরে যেতে পারেন আঙ্কোলা। সেখান থেকে গোকর্ণের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের মধ্যে বাস পরিষেবাও রয়েছে।
কুর্গ: পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালে কোদাগু জেলায় ছবির মতো সাজানো জায়গা কুর্গ। বেঙ্গালুরু থেকে দূরত্ব ২৫২ কিলোমিটার। কর্নাটকের এই মনোরম জায়গাটিতে রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ, বিরামহীন ছোট ছোট ঝর্না, বিস্তীর্ণ কফি বাগান। শহুরে কোলাহলের বাইরে যেন এক টুকরো স্বর্গ। মিলবে রিভার র্যাফটিং, জ়িপলিং, ট্রেকিং ও কায়াকিংয়ের সুযোগও। এখানে ঘুরতে গিয়ে রাজাসিট পার্ক, অ্যাবি ঝর্না, ওমকারেশ্বর মন্দির, তালকাবেরী, নাগরহোল জাতীয় উদ্যান, দুবারে হাতি সংরক্ষালয় কিন্তু ঘুরে দেখতেই হবে। জেলার সদর শহর মদিকেরী থেকে ২০ কিলোমিটার মতো দূরত্বে ভাগমণ্ডল মন্দির। মাদিকেরী থেকে ১ কিলোমিটার দূরে অ্যাবে জলপ্রপাত।
কুর্গের সৌন্দর্য মন ভোলানো। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
বেঙ্গালুরু থেকে মদিকেরীর দূরত্ব ২৫২ কিলোমিটার, গাড়িতে গেলে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। বাস পরিষেবাও রয়েছে।