সাদা বালুতট ছুঁয়ে যাচ্ছে ঘন নীল জলরাশি। সঙ্গীর হাত ধরে হাঁটছেন নায়িকা। ভিডিয়ো দেখে মনে হতেই পারে এ বুঝি কোনও ছবির দৃশ্য।
তবে ‘রিল’ নয়, এ দৃশ্য ‘রিয়েল লাইফের’। নায়ক এবং নায়িকা সোনাক্ষী সিন্হা এবং জ়াহির ইকবাল। সম্প্রতি মলদ্বীপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন তাঁরা। ভ্রমণের বিভিন্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী।
মলদ্বীপের সৌন্দর্য অতুলনীয়। তবে সাগরের এমন রং, সাদা বালুতটে, জল ক্রীড়ার রোমাঞ্চ উপভোগে কিন্তু লক্ষদ্বীপও আপনার গন্তব্য হতে পারে। কী কী করবেন সেখানে?
লক্ষদ্বীপ
ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি হল লক্ষদ্বীপ। মালয়ালম এবং সংস্কৃতে লক্ষদ্বীপ কথার অর্থ লক্ষ দ্বীপের সমন্বয়। এই দ্বীপপুঞ্জ পশ্চিমে আরব সাগর এবং পূর্বে লক্ষদ্বীপ সাগরের মধ্যে সামুদ্রিক সীমানা হিসাবে কাজ করে।
লক্ষদ্বীপ ৩৬টি দ্বীপের সমন্বয়ে তৈরি হলেও এর মধ্যে কাভারত্তি, অগতি, বাঙ্গারাম, কদমত, মিনিকয় এবং কালাপেনি— এই ছয়টি দ্বীপেই ভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে পর্যটকদের।
মলদ্বীপের বিলাসবহুল ‘ওয়াটার ভিলা’ এখানে না থাকলেও, প্রকৃতির রূপে কোনও ঘাটতি নেই। বরং অপেক্ষাকৃত নির্জন লাক্ষাদ্বীপের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে প্রিয় মানুষটির হাত ধরে ভ্রমণ দারুণ উপভোগ করা যায়। এখানে এসে কী কী করতে পারেন?
জলক্রীড়া
লক্ষদ্বীপে সমুদ্র, তার রঙের খেলা, দিগন্ত বিস্তৃত নারকেল গাছের সারি তো রয়েছেই, তবে আর সুন্দর কিছু দেখতে চাইলে ডুব দিতে হবে জলের তলায়। লক্ষদ্বীপে সমুদ্রের নীচে দেখা যায় জীবন্ত ও মৃত প্রবাল। আর সেই প্রবালের গা বেয়ে যখন ছুটে বেড়ায় রঙিন সব মাছের দল, মনে হয় এ যেন টেলিভিশন চ্যানেল।
সামুদ্রিক জীবন প্রত্যক্ষ করার দুই উপায়। একটি হল, স্কুবা ডাইভিং, অন্যটি হল স্নরকেলিং। স্কুবা ডাইভিং-এ বিশেষ পোশাক পরে ও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সমুদ্রের তলদেশে ডুব দিতে হয়। সঙ্গে প্রশিক্ষক থাকেন। স্নরকেলিং-এর জন্য দেওয়া হয় বিশেষ মাস্ক, যাতে পাইপ বা নল লাগানো থাকে। সেই মাস্কের সাহায্যে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে শ্বাস নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সমুদ্রের উপরে সাঁতরাতে সাঁতরাতে তলদেশের জগৎ দেখা যায়।
কাভারাত্তি ও অগতি এই দ্বীপ থেকে এই ধরনের জলক্রীড়ার সুযোগ মেলে। কাভারাত্তিতে কায়াকিং করা যায়। সমুদ্রের তলদেশের জগৎ দেখতে চেপে বসতে পারেন গ্লাস বটম বোটেও। এই ধরনের নৌকোয় থাকে বিশেষ কাচ। যেখান দিয়ে সমুদ্রের নীচে প্রবাল, মাছ দেখা যায়।
দ্বীপ ভ্রমণ
লক্ষদ্বীপের প্রতিটি দ্বীপ ছবির মতোই সুন্দর। এর সঙ্গে অনেকটাই মিল পাবেন মালদ্বীপের ‘পাবলিক আইল্যান্ডের’। পায়ে হেঁটে অথবা গাড়ি করে ঘুরে নিতে পারেন কাভারাত্তি –সহ বিভিন্ন দ্বীপে। বেশ কিছু দ্বীপ বেশ ছোট। দ্বীপের ঘিরে থাকা সমুদ্র, নারকেল গাছের সারির সঙ্গে এখন সৈকতে গাছের ছায়ায় হ্যামকেও দুলতে পারেন। জলের মধ্যেই তৈরি করা হয়েছে দোলনাও। বিভিন্ন দ্বীপের বিভিন্ন রিসর্টে এমন সুযোগ পাওয়া যায়।
খাবার
ভ্রমণের সঙ্গে জুড়ে থাকে সেই স্থানের সংস্কৃতি ও খাবার। লক্ষদ্বীপ গেলে সেখানকার খাবার না চাখলে কি হয়? এখানকার জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে মাস কবাব, অক্টোপাস ভাজা, কিলাঞ্জি, হালুয়া, কুলক্কি শরবৎ। মাস কবাব হল মাছের পদ। নারকেল ও মশলা মাখিয়ে মাছটি রান্না করা হয়। সাধারণত টুনা মাছ ব্যবহার করা হয়। স্টার্টার হিসাবে এটি খাওয়া হয়। যেহেতু লক্ষদ্বীপে বেশ গরম এবং আর্দ্রতার কারণে ঘাম হয়, তাই কুলক্কি শরবৎ বেশ জনপ্রিয়। লেবু, পুদিনা সহযোগে এটি তৈরি করা হয়।
মেরিন মিউজ়িয়াম
দ্বীপ ভ্রমণের সময়ে কাভারাত্তির মেরিন মিউজ়িয়াম দেখতে ভুলবেন না। সামুদ্রিক জীবজগৎ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্যই এটি তৈরি করা হয়েছে। এখন শুধু মাছ নয়, প্রবাল, বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক প্রাণী দেখতে পাবেন, সেগুলি সম্পর্কে জানতেও পারেবন।
অনুমতি
লক্ষদ্বীপ যেতে বিশেষ অনুমতি দরকার হয়। অনলাইন পোর্টাল রয়েছে। সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করলে ও নির্দিষ্ট অর্থ জমা করলে ভ্রমণের অনুমতি মেলে।
কী ভাবে যাবেন?
কোচি থেকে এমভি কাভারাত্তি জাহাজে লক্ষদ্বীপ ঘুরে নেওয়া যায়। বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। আবার বিমানে অগতি গিয়েও, লক্ষদ্বীপ ভ্রমণ করা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy