দীপাবলি আলোর উৎসব। আলোর ছোঁয়ায় বদলে যায় ছোট্ট গলির রূপও। আলোকমালা, প্রদীপে যখন সেজে ওঠে নদীর পার, সেতু, স্থাপত্য, বাড়িঘর— এক অবর্ণনীয় সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। উৎসবের আবহে সেজে ওঠে ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম প্রতিটি প্রান্ত। তবে এমন সময় উপভোগ্য হতে পারে তিন স্থান।
জয়পুর
আলোয় সেজে ওঠা জয়পুরের রূপ মনোমুগ্ধকর। ছবি: সংগৃহীত।
আকাশ জুড়ে বাজির ঝলক, আলোকমালায় সেজে ওঠা হাওয়া মহল, সিটি প্যালেস, বিশাল দুর্গ, প্রদীপের সজ্জায় সেজে ওঠা বাড়িঘর রূপ বদলে দেয় রাজস্থানের শহরটির। ‘গোলাপি শহর’ জয়পুর যেন হয়ে ওঠে মায়ানগরী। উঁচু কোনও স্থান থেকে আতসবাজির রঙের বিস্ফোরণ, আলোয় মোড়া জয়পুরকে তখন কোনও স্বপ্নের চেয়ে কম মনে হয় না। শহর জুড়েই সাড়ম্বরে পালিত হয় দীপাবলি। রাজস্থানের ঐতিহাসিক স্থান, স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া পেতে এক বার এই সময় সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করতেই পারেন।
কোথায় ঘুরবেন?
দীপাবলির আগেই সেখানে পৌঁছে যেতে পারেন। আলোর উৎসব নানা ভাবে উদ্যাপন হয় এখানে। হাওয়া মহল, আমের ফোর্ট, সিটি প্যালেস, নাহাড়গড় ফোর্ট, জল মহল, যন্তরমন্তর, অ্যালাবার্ট হল মিউজ়িয়াম-সহ একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সব জায়গাই আলোয় সাজানো হয়। রাজস্থানি রঙিন পোশাক, গয়না— সেগুলি কিন্তু দেখার মতোই। অবশ্যই চেখে নিন স্থানীয় খাবার।
অযোধ্যা
অযোধ্যায় দীপাবলি উদ্যাপন হয় ধুমধাম করে। ছবি : সংগৃহীত।
রাম জন্মভূমি বলে পরিচিত অযোধ্যার মন্দির চত্বর যখন আলো, প্রদীপে সেজে ওঠে— সে এক দেখার মতো দৃশ্য হয়। নতুন করে তৈরি অযোধ্যার রাম মন্দিরের আকর্ষণ আছেই, তবে দীপাবলি অযোধ্যায় অন্য রূপ নিয়ে আসে। সরযূ নদীর তীরে অযোধ্যায় দীপাবলিতে প্রতি বছর ‘দীপোৎসব’ উদ্যাপন করা হয়। এই বছরেও তার বিশাল আয়োজন হচ্ছে।২৬ লক্ষ মাটির প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সময়ে লক্ষ লক্ষ প্রদীপ, আলোকমালা এই শহরকে আলোকিত করে। রামলীলা অভিনীত হয়, আয়োজন হয় নানা অনুষ্ঠানের। লোকমুখে শোনা যায়, দীপাবলি আসলে রামের ১৪ বছর বনবাসের পরে নিজ শহর অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের সময়কাল। তাঁর প্রত্যাবর্তনকে উদ্যাপন করতেই বড়সড় উৎসব হয় এখানে।
কোথায় ঘুরবেন?
রামমন্দির, সীতা রসোই, সরযূ নদীর ধার, কনক ভবন, গুপ্তার ঘাট, একাধিক মন্দির রয়েছে এখানে। অবশ্যই এখানকার স্থানীয় খাবার খেয়ে দেখুন।
অমৃতসর
অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরও দীপাবলিতে সেজে ওঠে। ছবি: সংগৃহীত।
পঞ্জাবের অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের রূপ উপভোগের জন্যই দীপাবলিতে সেখানে যাওয়া চলে। অসংখ্য প্রদীপে সেজে ওঠে মন্দির চত্বর। আলোয় মুড়িয়ে দেওয়া হয় সোনার চূড়া থেকে থেকে চত্বরের আনাচ-কানাচ। অমৃত সরোবরে আলোকোজ্জ্বল মন্দিরে প্রতিবিম্ব এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি করে। ওয়াঘা সীমান্তে বিএসএফ-এর তরফেও পালিত হয় দীপাবলি। এই দিনে বিশেষ উৎসব-অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয় এখানে।
কোথায় ঘুরবেন?
স্বর্ণমন্দির ছাড়াও ঘুরে নিতে পারেন জালিয়ানওয়ালা বাগ, ওয়াঘা সীমান্ত, পার্টিশন মিউজ়িয়াম, মহারাজা রঞ্জিৎ সিংহ মিউজ়িয়াম। নিরামিষ হোক বা আমিষ, অমৃতসরে গেলে কুলচা-ছোলে, লস্যি, লঙ্গরের খাবার খেতে ভুলবেন না। স্বর্ণমন্দিরেও থাকা যায়, তবে তার অদূরেও অসংখ্য হোটেল রয়েছে।