এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সরাসরি উড়ান পরিচালিত হয় নিই ইয়র্ক এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে। বিমানকে অতিক্রম করতে হয় প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। সময় লাগে কম-বেশি ১৯ ঘণ্টা।
এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১-এর দুর্ঘটনার পর কেটেছে ১০ দিন। এখনও বিমানযাত্রায় অনেকেই ভয় পাচ্ছেন। তবে সময়ের সঙ্গে ভীতি কমছে। দেশে বা বিদেশের দীর্ঘ বিমানযাত্রা অনেক সময়েই অস্বস্তিকর হতে পারে। শরীরে ব্যথা থেকে শুরু করে কান বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ‘জেটল্যাগ’-এর মতো সমস্যা থাকেই। কয়েকটি সহজ পরামর্শ মেনে চললে, অনেক সময় দীর্ঘ উড়ানও আরামদায়ক হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন:
১) হালকা খাবার: দীর্ঘ বিমানযাত্রার আগে হালকা অথচ পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ খাবার খাওয়া উচিত। লিন প্রোটিন এবং ফাইবারে পূর্ণ খাবার এ ক্ষেত্রে আদর্শ। সহজপাচ্য খাবার পেট ভর্তি রাখার পাশাপাশি বদহজম বা পেটের অস্বস্তি তৈরি করবে না।
২) দেহে জলের পরিমাণ: বিমানে সফরের সময় শরীরে যাতে জলের অভাব না ঘটে, তা খেয়াল রাখা উচিত। কারণ, বিমানের কেবিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং শুষ্ক হয়। তাই প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর এক গ্লাস জল পান করা উচিত। সোডাযুক্ত নরম পানীয়ের পরিবর্তে ফলের রস বা ইলেক্ট্রোলাইট মেশানো জল পান করা যেতে পারে। ঘন ঘন চা-কফি বা মদ্যপান (আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রে) না করাই ভাল।
৩) টাইম জ়োন খেয়াল করুন: বিদেশে সফরের ক্ষেত্রে গন্তব্যের সঙ্গে সময়ের ফারাকের হিসেব রাখতে হবে। যেমন সারা রাত বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে আগে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া উচিত। বিমানে স্ন্যাক জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। যেখান থেকে সফর শুরু হয়েছে, সেই স্থানীয় সময় মাথায় রেখেই ঘুমিয়ে নেওয়া উচিত। তার ফলে গন্তব্যে পৌঁছে জেটল্যাগের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।
৪) সিটে বসার ভঙ্গি: বিমানে ‘লেগ স্পেস’ (আসনের সামনে পা রাখার জায়গা) কম থাকার কারণে অনেকেরই সমস্যা হয়। অনেক সময়ে সিটে বসে থাকার জন্য পিঠ, কোমর এবং পায়ে ব্যথা শুরু হয়। এ রকম ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা অন্তর এক বার সিট থেকে উঠে হেঁটে নেওয়া যেতে পারে। আসনে বসে থাকাকালীন দু’টি পা সামনে ছড়িয়ে দিয়ে নাড়াচাড়া করলে আরাম পাওয়া যায়।
৫) ঘুমের প্রয়োজন: বিমানে অনেকেরই ভাল ঘুম হয় না। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, ঘুম যেমন এক দিকে সফরের সময় কাটাতে সাহায্য করে, তেমনই পর্যাপ্ত ঘুম শরীর এবং মনকে ভাল রাখে। এমনকি, ঘুমিয়ে নিতে পারলে গন্তব্যে পৌঁছোনোর পর শরীর থাকবে চনমনে। বিমানে ঘুমের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ‘নেক রেস্ট’, স্লিপ মাস্ক বা ঠান্ডার জন্য কোনও স্কার্ফ সঙ্গে রাখা উচিত।
৬) ধ্যানের সাহায্য: দীর্ঘ বিমানযাত্রায় ক্লান্তি বা শারীরিক অস্বস্তিকে কম করতে সাহায্য করতে পারে ধ্যান। সিটে বসে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে ক্লান্তি দূর হবে। চোখ বন্ধ করে কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ভাবার চেষ্টা করা যেতে পারে। তার ফলে অস্বস্তিকে কাবু করা সম্ভব। চোখ বন্ধ থাকলে সময়ের সঙ্গে ঘুমও চলে আসে।
৭) অবসর যাপন: সফরে সময় কাটানোর জন্য বই পড়া যেতে পারে। সঙ্গে ল্যাপটপ বা মোবাইলে প্রিয় ছবি দেখলে বা গান শুনলেও মন ভাল থাকবে। ক্লান্তিবোধ হবে না।