Advertisement
E-Paper

প্রকৃতির আঙিনাই হোক অফিস, ‘ওয়ার্কেশন’-এর জায়গা বাছাইয়ের সময় কোন বিষয়গুলি ভাবা দরকার?

বহু কর্পোরেট অফিসেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর সুযোগ রয়েছে। তবে বাড়ির বদলে সেই স্থান যদি পাহাডের কোলে কিংবা কোনও সুন্দর শহরে হয়, তা হলে আপত্তি কোথায়? কী ভাবে ‘ওয়ার্কেশন’-এর ঠিকানা বাছাই করবেন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৫ ১৭:০৩
পাহাড় দেখতে দেখতেই অফিসের কাজ! এমন ঠিকানা বাছাই করবেন কী ভাবে?

পাহাড় দেখতে দেখতেই অফিসের কাজ! এমন ঠিকানা বাছাই করবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।

কোভিড যেমন মানুষকে অন্ধকার অধ্যায়ের মুখোমুখি করেছে, তেমনই উন্মুক্ত করেছে এমন কিছু দিক, যা আগে সে ভাবে ভারতে ভাবা হয়নি। অফিসের চার দেওয়ালের কর্মক্ষেত্র যে স্থান বদলে প্রকৃতির আঙিনায় হতে পারে, দেখেছেন লোকে। বিশেষত ভ্রমণপিপাসু, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য খুলে গিয়েছে মুক্তির দরজা।

এখনও বহু কর্পোরেট অফিসেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর সুযোগ রয়েছে। তবে বাড়ির বদলে সেই স্থান যদি পাহাডের কোলে কিংবা কোনও সুন্দর শহরে হয়, তা হলে আপত্তি কোথায়?

বরং কর্মব্যস্ত জীবনের চাপ থেকে মুক্তি পেতে এখন অনেকেই খোঁজ করছেন ‘ওয়ার্কেশন’-এর। ‘ওয়ার্ক’ এবং ‘ভেকেশন’ এই দুই শব্দের মেলবন্ধনেই ‘ওয়ার্কেশন’। অর্থাৎ ছুটির মজা উপভোগের সঙ্গে সঙ্গেই যেখানে কাজ করা এর মূলমন্ত্র।

গত কয়েক বছরে ‘ওয়ার্কেশন’-এর পরিকাঠামো যেমন উন্নত হয়েছে, তেমনই বেশ কিছু সংস্থা তৈরি হয়েছে, যারা সমস্ত পরিকল্পনা ছকে দিচ্ছে।

কাজ যখন ঘরে বসে ল্যাপটপে, তখন সেটি নিজের ঘরে না হয়ে কোনও খরস্রোতা নদীর ধারের বারান্দা ঘেরা কটেজ থেকে হলেই বা আপত্তি কোথায়? কিন্তু এমন জায়গার সন্ধান করার আগে কী কী দেখে নেওয়া দরকার?

বাজেট: বাইরে কোথাও গিয়ে, থেকে, কাজ করলে বাড়তি খরচও হবে। ঘরের ভাড়া দিতে হবে। তা ছাড়া, কিনে খেতে গেলে খরচ বাড়বে। ঘোরাঘুরিরও খরচখরচা আছে। তাই প্রথমেই বাজেট ঠিক করে ফেলুন। এমন জায়গা বেছে নিন, যেখানে তুলনামূলক সস্তায় ‘ওয়ার্কেশন’-এর পরিবেশ এবং পরিসর মিলবে। এমন জায়গা বেছে নিন, যেখানে খাওয়া-ঘোরা খুব বেশি ব্যয়বহুল নয়। অনেক সময় ধর্মশালার ঘরে খুব স্বল্প খরচে থাকা এবং খাওয়া যায়। অনেক জায়গায় রান্না করে খাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে, এ ভাবেও অর্থ সাশ্রয় করা যায়।

থাকার জায়গা: অনেকেই ২-৩ মাসের জন্য বাইরে থেকে কাজ করতে চান। কেউ আবার এক সপ্তাহের জন্য। ওয়ার্কেশনে সাধারণত লোকজন একা যান, কখনও বন্ধুবান্ধব থাকেন। একলা থাকলে খরচ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হোম স্টে-র সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এ জন্য বিশেষ প্যাকেজ থাকে। এক বা দুই সপ্তাহের জন্য গেলে ভাল উপায় হতে পারে হস্টেল। বিদেশের মতো বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ইদানীং হস্টেলও জনপ্রিয় হচ্ছে। বেশির ভাগ হস্টেলে ফ্রি ওয়াইফাই জ়োন থাকে। বসে কাজ করার জন্য আলাদা জায়গা তৈরি করা হয়, আবার থাকে ক্যাফেটেরিয়াও। তবে হস্টেলে আর পাঁচজনের সঙ্গে থাকতে অসুবিধা হলে হোটেলেও থাকা যেতে পারে।

জীবনযাপন: কর্পোরেট সেক্টরে অনেককেই সারা রাত কাজ করতে হয়। দিনটা ফাঁকা থাকে। কারও কাজ আবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে। কাজের শিফ্‌টের সঙ্গে যে জায়গায় যাচ্ছেন সেখানকার জীবনযাপন মেলে কি না দেখা দরকার। যাঁদের দিনভর কাজ থাকে, সন্ধ্যায় বা রাতে শেষ হয়, তাঁদের জন্য পড়ে থাকে রাতের সময়টাই। এমন জায়গা বেছে নিতে পারেন, যেখানে অনেক রাত পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকে, বাইরে বেরোনো যায়। আবার রাতের শিফ্‌টে কাজ হলে, পাহাড়ি এলাকা বেছে নেওয়া ভাল।

পরিকল্পনা: কোথাও গিয়ে শুধুই কাজ করা বিরক্তিকর হয়ে উঠতে বাধ্য। তাই সপ্তাহে ৫ দিন কাজ হলে ছুটির দু’দিনের পরিকল্পনা সেরে নিন। এমন জায়গা ‘ওয়ার্কেশন’-এর জন্য বেছে নিতে পারেন, যেখানে আশপাশে ঘোরার জায়গা আছে। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের শখ থাকলে হৃষীকেশ, হিমাচল প্রদেশের বীর বিলিং, কুল্লুর মতো জায়গা বেছে নিতে পারেন। এমন জায়গাও তালিকায় রাখতে পারেন, যেখানে যোগ প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়, স্থানীয় হাতের কাজ শেখা যায়। কাজের বাইরে কী করে সময় উপভোগ করবেন, ধারণা থাকা জরুরি।

সঙ্গী: কোথাও গিয়ে একলা ঘোরার চেয়ে সঙ্গী জুটে গেলে তা আরও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। হস্টেলে বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে থাকেন। এই জায়গায় থাকলে, আড্ডা মারা বা ঘোরার সঙ্গী পাওয়া সহজ হয়ে যায় অনেক সময়েই।

স্থান: ‘ওয়ার্কেশন’-এর জন্য হস্টেল বা হোটেল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থান গুরুত্বপূ্র্ণ। মূল শহর বা বাজার এলাকা থেকে সেটি অনেকটা দূরে হলে সেখানে কী ভাবে যাতায়াত করবেন, ভাবা প্রয়োজন। বেশি দূর হলে হেঁটে বাজারে বা প্রয়োজনের জিনিস কিনতে যাওয়া যাবে না। আবার বার বার, বাজার এলাকায় যেতে গাড়ি ভাড়া করতে হলে অনেক খরচও হয়ে যাবে।

এ দেশে ‘ওয়ার্কেশন’ ঠিকানা হিসাবে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন স্থান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, গ্যাংটক, কেরল, পুদুচেরি, বেঙ্গালুরু-সহ বিভিন্ন জায়গাই এ জন্য বেছে নেওয়া যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা— এই দু’টি ঠিক থাকলে, যে কোনও প্রান্ত থেকেই কাজ করা সম্ভব।

Workation Travel Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy