বয়সের অঙ্ক সঙ্গ দিচ্ছে না, তবু মন কি আর সেই হিসাব রাখে! প্রথম দেখাতেই নাতনির সহপাঠীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন ৮৩ বছরের বৃদ্ধা। কিন্তু সেই তরুণ যে বয়সে তাঁর চেয়ে ৬০ বছরের ছোট! নিজের সমস্ত অনুভূতি মনের মধ্যে পাথরচাপা দিয়ে রাখলেও বাঁধ ভাঙল প্রেমের সংস্পর্শেই। সহপাঠিনীর ঠাকুরমাকে ভালবেসেছেন, সে কথা জানালেন সেই তরুণই। বয়সের তোয়াক্কা না করেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। গত ছ’মাস ধরে একত্রবাসও করছেন। দুই পরিবারও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কোনও আপত্তি জানায়নি।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, জাপানের বাসিন্দা ৮৩ বছর বয়সি বৃদ্ধার নাম আইকো। দু’বার বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু দু’বারই সংসার ভেঙে যায় তাঁর। বর্তমানে বিবাহবিচ্ছিন্না। এক পুত্র, এক কন্যা এবং পাঁচ নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার তাঁর। পুত্রের বাড়িতেই থাকেন আইকো। নাতনির সঙ্গে বেশ ভাব রয়েছে তাঁর। আইকোর নাতনির সঙ্গে হঠাৎ এক দিন বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর সহপাঠী কোফু।
২৩ বছর বয়সি তরুণকে দেখেই তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন আইকো। কিন্তু তাঁদের বয়সের পার্থক্য পর্বতসমান। তা পেরিয়ে নিজের অনুভূতির কথা কোফুকে জানাতে চাননি আইকো। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে এক সংস্থায় শিক্ষানবিশ হিসাবে চাকরি করেন কোফু। সহপাঠিনীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ঠাকুরমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কোফুর। ৬০ বছরের বড় আইকোকে দেখে মনে মনে ভাল লেগে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু মুখ ফুটে সেই কথা বলতে পারেননি কোফু।
আরও পড়ুন:
কোফু এবং আইকোর মধ্যে এই দূরত্ব অজান্তেই ঘুচিয়ে দেন আইকোর নাতনি। কোফু এবং আইকোর সঙ্গে ডিজ়নিল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তরুণী। কিন্তু কাজ পড়ে যাওয়ায় শেষ মুহূর্তে আর যেতে পারেননি তিনি। বন্ধু এবং ঠাকুরমা ডিজ়নিল্যান্ডে পৌঁছে যাওয়ার পর সেই খবর জানিয়েছিলেন আইকো। ফলে, অচেনা জায়গায় চার দেওয়ালের মাঝে বাঁধা পড়ে গিয়েছিলেন কোফু এবং আইকো। এমন পরিস্থিতিতে আর মনের ভাব চেপে রাখতে পারেননি কোফু। সূর্যাস্তকে সাক্ষী রেখে আইকোকে নিজের মনের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। আইকোও আর নিজেকে সামলাতে পারেননি। কোফুর প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
আরও পড়ুন:
বাড়ি ফিরে দু’জনেই নিজেদের পরিবারকে সে কথা জানান। তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে বিন্দুমাত্র আপত্তি করেননি দুই পরিবারের সদস্যেরা। পরিবারের সম্মতি নিয়ে বর্তমানে একত্রবাস করেন তাঁরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইকো বলেন, ‘‘কোফু যখন বাড়িতে থাকে না, তখন আমার খুব একা লাগে। ওর জন্য আমি রান্না করি। রাতে আমার যখন ঘুমের সময় হয়, তখন ও আমার দাঁত মাজিয়ে দেয়।’’ আইকোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কোফু বলেন, ‘‘আমার কাছে প্রতিটা দিন রঙিন হয়ে গিয়েছে। ঘুম ভাঙলে আইকোর মুখ দেখতে পাই রোজ। এর চেয়ে বেশি আর কী চাওয়ার থাকতে পারে!’’