অন্তঃসত্ত্বাদের সন্তান প্রসবের পর তাঁদের অমরা (প্লাসেন্টা) গোপনে কেটে নিয়ে বিক্রি করে দিতেন এক চিকিৎসক। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে এমন একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছেন নেটমাধ্যম ব্যবহারকারীরা। প্লাসেন্টা হল নারীদেহের এমন একটি অঙ্গ, যা গর্ভাবস্থায় নাভির মাধ্যমে ভ্রূণকে পুষ্টি সরবরাহ করার জন্য বিকশিত হয়। শিশুর জন্মের পরে এটি বাইরে বার করে দেওয়া হয়। এক প্রসূতি বিশেষজ্ঞকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে করে একটি অপারেশন থিয়েটার থেকে প্লাসেন্টা নিয়ে যাওয়ার সময় ও পরে একটি কালো বিন ব্যাগে তা লুকিয়ে রাখার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে চিনের সমাজমাধ্যমে।
দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের গুইঝো প্রদেশের রেনহুয়াই জিউদু প্রসূতি হাসপাতালে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে বলে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিনা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযুক্ত চিকিৎসককে বরখাস্ত করেছে। তিনি এর আগেও এই প্লাসেন্টা চুরি করেছিলেন কিনা তা তারা জানায়নি। চিনে কালোবাজারে এই মানব অঙ্গটির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী এক কেজি প্লাসেন্টার মূল্য ২,৪০০ ইউয়ান বা প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
শুকনো প্লাসেন্টা চিনা ভাষায় জিহেচে নামে পরিচিত। একসময় ঐতিহ্যবাহী চিনা চিকিৎসায় এটিকে একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর উপাদান বলে মনে করা হত। এটির প্রচলন শুরু হয়েছিল দুই হাজার বছর আগে। এটি ক্লান্তি, প্রাণশক্তির অভাব এবং বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় কার্যকর বলে দাবি করা হয় চিনের প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে। এমন কিংবদন্তিও রয়েছে, যেখানে বলা হয় অমর করে তোলার ক্ষমতাও এর রয়েছে। চিন ২০০৫ সালে প্লাসেন্টার বাণিজ্য নিষিদ্ধ করে। চিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, কেবলমাত্র এক জন সদ্য মা হাসপাতালের কর্মীদের কাছ থেকে তাঁর প্লাসেন্টা চাইতে পারেন। যদি তাঁরা তা না চান, তা হলে হাসপাতালকে অবশ্যই এটি মেডিকেল বর্জ্য হিসাবে পুড়িয়ে ফেলতে হবে অথবা পুঁতে ফেলতে হবে।