৪৬ বছরের বিবাহিত জীবন। সুখে-দুঃখে একে অপরের সঙ্গে কয়েক দশক কাটিয়ে দেওয়ার পর একসঙ্গেই মৃত্যুকে বরণ করতে চাইছেন এক দম্পতি। তার জন্য তাঁরা বেছে নিয়ে নিয়েছেন ‘সুইসাইড পড’কে। সঙ্গীর অসুস্থতা বা যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু এড়াতে এর থেকে কার্যকর উপায় আর কিছু হয় না বলে মনে করছেন তাঁরা। ৮৬ বছর বয়সি পিটার স্কট ও তাঁর ৮০ বছর বয়সি স্ত্রী ক্রিস্টিন। সুইৎজ়ারল্যান্ডে দু’টি ‘সুইসাইড পড’ ব্যবহার করে একই সঙ্গে জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। প্রায় পাঁচ দশক ধরে বিবাহিত এই দম্পতি। এখন তাঁরা চাইছেন ব্যথা-বেদনাহীন শান্তির মৃত্যু। ক্রিস্টিনের প্রাথমিক পর্যায়ের ‘ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া’ ধরা পড়ার পরে তাঁরা নাকি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
ক্রিস্টিন পেশায় নার্স ছিলেন। পেশার সুবাদে তিনি নিজের রোগ সম্পর্কে ভাল মতো ওয়াকিবহাল। তাই এই রোগটি ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই অশীতিপর দম্পতি ‘দ্য লাস্ট রিসর্ট’ নামে একটি সুইস সংস্থায় ইচ্ছামৃত্যুর জন্য নাম নিবন্ধন করিয়েছেন। পিটার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘ দিন সুখী দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন। সুস্থ, পরিপূর্ণ জীবন ছিল তাঁদের। বৃদ্ধাবস্থায় শারীরিক অবক্ষয়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রিসের মানসিক অবস্থার অবক্ষয় দেখার শক্তি তাঁর নেই বলে জানিয়েছেন পিটার। তিনি জানিয়েছেন, ক্রিস্টিনের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েই তাঁরা দু’জনে একসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অন্যেরা আমাদের অনুভূতির সঙ্গে সহমত না হতেই পারেন। আমরা তাঁদের মতামতকেও সম্মান করি।’’ সুইৎজ়ারল্যান্ডে আত্মহত্যার অধিকার রয়েছে নাগরিকদের। যদিও ভারতে স্বেচ্ছামৃত্যু, আত্মহত্যায় সহায়তা কিংবা ইউথেনেশিয়ার মতো বিষয়গুলি এখনও আইনত অপরাধ হিসাবে গণ্য হয়।
কী ভাবে যন্ত্রণাবিহীন মৃত্যু সম্ভব ‘সুইসাইড পড’-এ? ক্যাপসুলের মতো দেখতে কফিন আকৃতির যন্ত্রটিতে ঢুকে আত্মহত্যায় ইচ্ছুক ব্যক্তি একটি বোতাম টিপলেই নাইট্রোজেনে ভরে যাবে ক্যাপসুলটির অন্দর। এতে প্রথমে অক্সিজেন কমে আসায় অস্বস্তি বোধ করলেও ধীরে ধীরে জ্ঞান হারাবেন ওই ব্যক্তি। তবে সংস্থার দাবি, কোনও আতঙ্ক বা দমবন্ধকর পরিস্থিতি গ্রাস করবে না তাঁকে। এর পর কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাইপোক্সিয়া এবং হাইপোক্যাপনিয়ায় মারা যাবেন ওই ব্যক্তি।