আদিবাসীদের আচার অনুষ্ঠান ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান অনুসন্ধানের জন্য আমাজ়নের গভীর জঙ্গলে পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকার তরুণ পর্যটক। সেখানে গিয়ে চায়ের মতো একটি পানীয় পান করে মারা গেলেন ৪১ বছরের সেই মার্কিন তরুণ। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশে আদিবাসী আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয় একটি শক্তিশালী পানীয়। নাম আয়াহুয়াস্কা। এটি এক প্রকার ‘হ্যালুসিনোজেনিক’ পানীয়। অর্থাৎ এই পানীয় খেলে অবাস্তব চিন্তাভাবনা গ্রাস করে। সেটি পান করার পরই নাকি তাঁর সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যায়। রবিবার মারা যান আমেরিকার অ্যালবামার বাসিন্দা অ্যারন ওয়েন কাস্ত্রানোভা।
‘স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজ়ম’ বা আধ্যাত্মিক পর্যটনের টানে পেরুর লরেটো অঞ্চলে গিয়েছিলেন অ্যারন। উত্তর-পূর্ব আমাজ়ন অববাহিকার গভীরে অবস্থিত লরেটো একটি প্রত্যন্ত জঙ্গল এলাকা। সেখানে যাওয়ার দু’টি উপায়, আকাশ ও জলপথ। সড়কপথে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। পেরুর রাজধানী লিমা থেকে বিমানে যেতে ২ ঘণ্টা সময় লাগে। শহর থেকে বিচ্ছিন্ন ও নিরিবিলি হওয়ার কারণে সেখানে এই ধরনের পর্যটন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
লরেটোর একটি হোটেলে ‘কাসা দে গুইলারমো আইকোনা’-তে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন অ্যারন। এই অনুষ্ঠান চলাকালীন তিনি আয়াহুয়াস্কা পান করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। আয়াহুয়াস্কা হল ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ আমেরিকান পানীয়। দু’টি বিশেষ লতা থেকে এটি তৈরি করা হয়। এতে ‘ডাইমিথাইলট্রিপটামিন’ নামের উত্তেজক হ্যালুসিনোজেনিক পদার্থের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। বহু দেশেই এই ডাইমিথাইলট্রিপটামিন বা ডিএমটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ফরেনসিক প্যাথোলজিস্ট নার্সিসো লোপেজ সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি মেল’কে জানান, অ্যারনের একাধিক অঙ্গ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। জটিল প্যানক্রিয়াটাইটিসে ভুগছিলেন তিনি। তার জন্য ওষুধও খাচ্ছিলেন অ্যারন। তাই চিকিৎসকদের ধারণা, অ্যারন যে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছিলেন এবং আয়াহুয়াস্কার মিলিত বিষক্রিয়ায় তাঁর মৃত্যু ঘটেছে।