মৃত্যুর পরের অভিজ্ঞতা কেমন? সেখানেও কি আছে জীবনের মতো কোনও জগৎ! যুগ যুগ ধরে মনোজগতের অন্ধিসন্ধি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন তাঁরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন। মৃত্যুর পরের সেই জগতের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। যখন হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় এবং শরীর স্থির হয়ে যায় তখন কী হয়? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। মৃত্যুর পর কী হয়, সেই ‘অভিজ্ঞতা’ ভাগ করে নিয়েছেন স্পেনের আন্দালুসিয়ার ৫০ বছর বয়সি সাংবাদিক এবং সমাজবিজ্ঞানী টেসা রোমেরো।
টেসা তাঁর মৃত্যুর কাছাকাছি অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন ‘ক্লিনিক্যালি’ মৃত বা হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে হয়ে যাওয়ার পর তিনি অভূতপূর্ব এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। যে দিন ঘটনাটি ঘটেছিল সে দিন টেসা মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কোনও পূর্বাভাস পাওয়ার আগেই তিনি মাটিতে পড়ে যান। শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় এবং চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ২৪ মিনিটের জন্য তিনি ওই অবস্থার মধ্যে ছিলেন। যেখানে তিনি দেখতে পান, শুনতে পান, আবেগও অনুভব করতে পারেন এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারেন। ব্যক্তির শরীর কাজ করা বন্ধ করে দিলেও সেই পর্যায়েও চেতনা জাগ্রত ছিল টেসার।
তিনি লেখেন, ওই সময়টুকুতে তিনি এই পৃথিবীর অনেক বাইরে এমন একটি জগতে ভ্রমণ করেছিলেন, যেখানে ব্যথা, সময় এবং দুঃখের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। ‘‘অভিজ্ঞতাটি এমন ছিল যেন আমার কাঁধ থেকে একটা ভারী বোঝা নেমে গিয়েছে’’ টেসা লিখেছেন। চিকিৎসকেরা দাবি করেন মৃত্যুর আগে টেসা কোনও একটি বিরল রোগে ভুগছিলেন। প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেও, কোনও রোগ নির্ণয় করতে পারেননি তাঁরা। টেলার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। বেশ কয়েক জন চিকিৎসক মনে করেছিলেন মানসিক আঘাতই এর মূল কারণ হতে পারে। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে আসার পর, টেসার জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি নাটকীয় ভাবে বদলে গিয়েছে। তিনি বলেন ‘‘এক সময় আমি মৃত্যুকে ভয় পেতাম। কিন্তু এখন আর ভয় পাই না।’’