বেসরকারি সংস্থার ঝাঁ-চকচকে অফিসে ইন্টারভিউয়ের ডাক পড়েছিল তরুণের। কিন্তু যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়। ইন্টারভিউয়ের আগের দিন থেকেই ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হল। ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দু’ঘণ্টা যাত্রা করে অফিসের নির্দিষ্ট ঠিকানায় হাজির হন তরুণ। ইন্টারভিউয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন সন্দেহ হয় তরুণের। বাড়িতে আসার পর সংস্থার তরফে মেল পান তিনি। মেল করে তরুণকে জানানো হয় যে, তাঁর বাড়ি থেকে অফিসের দূরত্ব অনেক। সে কারণে তরুণকে চাকরি দেওয়া যাবে না বলে দাবি সংস্থার। সম্পূর্ণ ঘটনার উল্লেখ করে সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করে লিখেছেন তরুণ (যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
আরও পড়ুন:
‘আর/রিক্রুটিংহেল’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে রেডিটের পাতায় পোস্ট করা হয়েছে। নাম গোপন রেখে এক তরুণ লিখে জানিয়েছেন, বহুজাতিক সংস্থায় ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইন্টারভিউয়ের আগের দিন থেকে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে। ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অফিসে হাজির হন তিনি। তরুণের বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার জন্য ট্রেন ছাড়া অন্য কোনও গতি নেই। দু’ঘণ্টা যাতায়াত করে অফিসে পৌঁছোন তিনি।
সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগের এক কর্মীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। তাঁরই ইন্টারভিউ নেওয়ার কথা ছিল বলে দাবি করেন তরুণ। কিন্তু তরুণকে দেখে দায়সারা হাবভাব দেখান সেই মহিলা। তরুণকে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার নির্দেশ দেন তিনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইন্টারভিউয়ের জন্য তরুণকে ভিতরে ডাকেন সংস্থার ওই কর্মী। কিন্তু কাজ ছাড়া অন্য সব রকম প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি। অফিস থেকে তরুণের বাড়ির দূরত্ব কত, তিনি কী ভাবে অফিসে পৌঁছোলেন— এমন অবান্তর প্রশ্ন করা হয় তরুণকে।
আরও পড়ুন:
তরুণ পোস্টে লিখে জানান, ‘‘ইন্টারভিউ নেওয়ার সময় ওই মহিলা কর্মী বার বার আমায় তাঁদের অফিসের পরিবেশ নিয়ে সতর্ক করছিলেন। দুর্বল মনের মানুষের জন্য এই অফিস নয়। অফিসে নাকি খুব তাড়াতাড়ি কাজ করতে হয়। বার বার আমায় নানা ধরনের কথা বলে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। আমি নিজে থেকেই চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে নিতে পারি, এমনটাই হয়তো ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু আমি নীরব ছিলাম।’’
পরে বাড়ি আসার পর সংস্থার তরফে মেল পান তরুণ। সেই মেলে লিখে জানানো হয় যে, তরুণের বাড়ি থেকে অফিস পৌঁছোতে দু’ঘণ্টা সময় লাগবে, তা নিয়ে সমস্যা রয়েছে সংস্থার। এর আগেও নাকি এত দূর থেকে কয়েক জন কর্মী যাতায়াত করে অফিসে আসতেন। কিন্তু বেশি দিন সেই কাজ করতে পারেননি তাঁরা। যাতায়াতের ধকল সহ্য করতে না পেরে নাকি চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন সকলে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না সংস্থা। তরুণ তাঁর এই অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে কর্পোরেট সংস্থার নিন্দা করেছেন।