কমিক্সের মাধ্যমে নিজের বেদনাদায়ক জীবনের গল্প ভাগ করে নিলেন জাপানের এক মহিলা। নেমু কুসানো নামে ওই মহিলার সংগ্রামের কাহিনি ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। ভাইরাল হয়েছে তাঁর কাহিনি।
নেমু জানিয়েছেন, এক বন্ধু মারফত পরিচয় হওয়ার পর বিয়ে করেছিলেন তিনি এবং তাঁর স্বামী। স্বামীকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেছিলেন তিনি। মনে করেছিলেন, স্বামী খুব গম্ভীর এবং লাজুক। বিয়ের পর পরই এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন নেমু। কিন্তু জন্ম থেকেই একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল শিশুটি, এর ফলে তাঁর জীবন কঠিন হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:
নেমুর দাবি, তাঁর স্বামী দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতেন এবং বাড়ির বাইরেই থাকতেন বেশির ভাগ সময়। দিন-রাত অসুস্থ সন্তানের দেখভাল করতেন নেমুই। পুত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে প্রতি দিনের কাজ— সবটাই নিজে হাতে করতেন তিনি। সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই নেমুর জীবনে দুর্ভাগ্যের কালো মেঘ ঘনিয়ে আসে। জাপানি বধূটি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী তাঁকে ঠকাচ্ছেন। একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন তিনি। স্বামীর ব্যাগে নাকি কন্ডোমও খুঁজে পান তিনি। জানতে পারেন, মোট ৫২০টি সম্পর্কে রয়েছেন স্বামী। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হওয়া এবং ভেঙে পড়া সত্ত্বেও স্বামীর উপর প্রতিশোধ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নেমু। সন্তানের শরীরের দিকেই মন দেন তিনি। তবে একটা প্রশ্নই তাঁর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কেন এত সম্পর্কে জড়িয়ে স্বামী?
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর মতে, সেই প্রশ্ন থেকেই নেমু তাঁর স্বামীর চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা জানান, ছোটবেলা থেকেই যৌন আসক্তি রয়েছে নেমুর স্বামীর। সেই কারণ জানার পর ভেঙে পড়েন বধূ। ধীরে ধীরে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। তবে ছেলের জন্য স্বামীর সঙ্গে সামান্য যোগাযোগ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেমু এবং তাঁর স্বামীর সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। বিয়ে ভেঙে সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন নেমু। করেনও তাই। বর্তমানে একাই ছেলেকে বড় করছেন নেমু।
নেমুর কাহিনি শুনে সেই কাহিনি কমিক্সের রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জাপানি মাঙ্গা শিল্পী পিরোয়ো আরাই। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে সেই বই। নেমুর জীবনের গল্প শুনে হা-হুতাশ করেছেন অনেকে। জাপান জুড়ে হইচইও ফেলেছে তাঁর খবর।