Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

অভিষেককে চড়ে অভিযুক্ত দেবাশিসের জেল হেফাজত

ঘটনার প্রায় দেড় মাস পরে অবশেষে আদালতে হাজির করানো হল যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় অভিযুক্ত দেবাশিস আচার্যকে। মঙ্গলবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে তাঁকে তমলুক আদালতে তোলা হয়। বিচারক সুদীপ ভট্টাচার্য ওই যুবককে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে আদালত থেকে বেরনোর মুখেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবাশিস। আদালত থেকেই অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে।

পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে আদালতের পথে দেবাশিস আচার্য। মঙ্গলবার।  নিজস্ব চিত্র

পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে আদালতের পথে দেবাশিস আচার্য। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৮
Share: Save:

ঘটনার প্রায় দেড় মাস পরে অবশেষে আদালতে হাজির করানো হল যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় অভিযুক্ত দেবাশিস আচার্যকে।

Advertisement

মঙ্গলবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে তাঁকে তমলুক আদালতে তোলা হয়। বিচারক সুদীপ ভট্টাচার্য ওই যুবককে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে আদালত থেকে বেরনোর মুখেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবাশিস। আদালত থেকেই অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। আপাতত সেখানেই ‘প্রিজন সেল’-এ রাখা হয়েছে তাঁকে।

পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সভামঞ্চে উঠে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মেরেছিলেন দেবাশিস। তবে ওই যুব নেতাকে মারার পাল্টা যা ‘শাস্তি’ তাঁকে পেতে হয়েছিল, তার জেরে গত দেড় মাস ধরে দেবাশিসকে ভর্তি থাকতে হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। গত দেড় মাসে তাঁকে আদালতেও পেশ করতে পারেনি পুলিশ।

এ দিন দেবাশিসকে আদালতে হাজির করানো হলেও তাঁকে পাল্টা মারধরের ঘটনায় এখনও কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি জেলা পুলিশ। নিছকই ‘অজ্ঞাতপরিচয়’দের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে দায় সেরেছে পুলিশ। বিরোধীদের প্রশ্ন, ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টই প্রমাণ রয়েছে, সে দিন দেবাশিসের উপরে মঞ্চে থাকা কোন নেতা-কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তা-ও ওই ঘটনায় কাউকে ধরা গেল না কেন? পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার অমিতভরত রাঠোরের জবাব, “দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত চলছে।”

Advertisement

এ দিন সকালে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে তাঁকে তমলুকে নিয়ে আসা হয়। পথে কোলাঘাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে তাঁর এক দফা শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়। দুপুরে দুই পুলিশকর্মীর কাঁধে ভর দিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে এজলাসে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু বিকেলে আদালত থেকে বেরনোর মুখে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর বাবা দেশবন্ধুবাবু বলেন, “আজ যে ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ল, তাতে মনে হয় আবার চিকিৎসার দরকার।”

দেবাশিসের আইনজীবী রঞ্জন মালাকার তাঁর জামিনের আবেদন করে আদালতে বলেন, “অভিযুক্ত এক জন শিক্ষিত যুবক। মস্তিষ্ক বিকৃতির জন্য একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে ঠিকই তবে খুনের চেষ্টা সে করেনি। কিন্তু যে ভাবে ওই যুবককে মারধর করা হয়েছে তাতে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।” সরকারি আইনজীবী সফিউল আলি খান জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক দেবাশিসকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ওই দিন পুলিশকে কেস ডায়েরি জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

দেবাশিসের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তা প্রত্যাহারের জন্য ইতিমধ্যে দেবাশিসের বাবা-মা অভিষেকের কাছে দরবার করেন। দেশবন্ধুবাবু বলেন, “ছেলের ভুলের জন্য আমরা অভিষেকের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তিনিও সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন।” এ ব্যাপারে অভিষেকের প্রতিক্রিয়া, “আমি ওঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি, আমি চাই দেবাশিস অব্যাহতি পাক। কিন্তু বিষয়টি তো এখন আদালতের অধীন। আইন আইনের পথে চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.