চলতি বছর থেকেই রাজ্যের সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হবে। শুক্রবার এ ব্যাপারে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। প্রশাসনের খবর, এই সংরক্ষণ বৃদ্ধির জন্য আসন সংখ্যাও বাড়ানো হবে। তার ফলে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য যে সব সংরক্ষণ আগে থেকে আছে, তা অক্ষুণ্ণ থাকবে। যদিও আসন বাড়লে সমস্যার কথাও বলছেন অধ্যক্ষেরা। তাঁদের মতে, এর ফলে কোথাও শূন্য আসনের সংখ্যা আরও বাড়বে, কোথাও আবার স্থান সঙ্কুলান হবে না।
২০১৯ সালে আর্থিক ভাবে দুর্বলদের সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছিল। তবে তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বৈধ।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি-সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সংরক্ষণ থাকবে। রাজ্যের আইন মেনে যে বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে তাদেরও এই নিয়ম মানতে হবে। তবে সংখ্যালঘু-পরিচালিত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এর আওতায় পড়বে না। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই সংরক্ষণ পেতে হলে পড়ুয়াদের মোট বার্ষিক পারিবারিক আয় আট লক্ষ টাকার নীচে হতে হবে। তার সঙ্গে যাঁদের পাঁচ একরের কম জমি এবং এক হাজার বর্গ ফুটের কম থাকার জায়গা রয়েছে, তাঁরাও এই সংরক্ষণ পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত শংসাপত্র জেলা শাসক-সহ নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনতে হবে।
এই সংরক্ষণের বিষয়ে শনিবার উচ্চ শিক্ষা দফতর কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত চন্দননগর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকারের বক্তব্য, উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তবে প্রতি বছর দেখা যাচ্ছে, ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে এক-তৃতীয়াংশের বেশি আসন ফাঁকা থাকছে। এই নিয়ম চালু করতে আসন আরও বাড়ানো হচ্ছে। তাই আরও বেশি সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকবে। আসন শূন্য থাকলে ‘নাক’ অথবা ‘এনআইআরএফ’-এর মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার সব আসন পূর্ণ হলে পরিকাঠামোগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতির মতে, আসন সংখ্যা বেড়ে গেলে সব পড়ুয়ার স্থান সঙ্কুলানের পরিকাঠামো বেশির ভাগ কলেজেই নেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)