Advertisement
E-Paper

ভিড়ের আমি, ভিড়ের তুমি

তবে এটাও চোখে পড়েছে, সভায় এসে অনেকেই মুখ দেখিয়ে রওনা দিয়েছেন ভিক্টোরিয়া কিংবা চিড়িয়াখানার পথে। পুলিশের দাবি, দুপুরের খাওয়া সারতেও অনেকে সভাস্থল থেকে সরে গিয়েছেন। তেমনই এক জন বর্ধমানের মদন দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৪:২৮
ময়দানে মধ্যাহ্নভোজ। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ময়দানে মধ্যাহ্নভোজ। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘আসার পথে দেখলাম, লক্ষ লক্ষ মানুষ সভার দিকে আসছে। ১২ লক্ষ মানুষ ঢুকতে না পেরে ফিরে গিয়েছে।’’

সভা শেষে নবান্নের পথে যেতে যেতে মুখ্যমন্ত্রীর অভিজ্ঞতা, ‘‘এখনও বাস-লরিতে লোক ধর্মতলার দিকে যাচ্ছে। এরা তো পৌঁছতেই পারল না!’’ সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বেরোনোর সময়ে ভিড় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘জনসমুদ্র, ঢেউ! প্রতি বছরই লোক বাড়ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির কথা শুনলে শুক্রবার ২১ জুলাই সমাবেশে ভিড়ের একটি ছবি ফুটে ওঠে। যদিও আমজনতার অনেকের অভিজ্ঞতা, মেট্রোয় তেমন উপচে ভরা ভিড় ছিল না। পথে-ঘাটে বাস, ট্যাক্সি, অটো না থাকায় লোকজনও সে ভাবে বেরোননি। অন্যান্য বার ধর্মতলা চত্বরে যেমন জমাট বাঁধা ভিড় চোখে পড়ে, এ বার ভিড়ের ছবিটা তার থেকে কিছু আলাদা ছিল। ভিড়ের সংখ্যা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেনি লালবাজারও। যদিও তাদের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘এ বার ভিড় একটু বেশিই কিন্তু মনে হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রের দাবি, ভিড়ের চেহারা বদলেছে ঠিকই। তার কারণ মঞ্চের সামনে ঠাসাঠাসি ভিড় জমতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন রাস্তায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। সেখানে মানুষ জমায়েত হয়েছে। সেই দাবির কিছুটা সত্যতা অবশ্য দেখাও গিয়েছে। ধর্মতলার পরে কিছুটা অংশ ফাঁকা। পরের ভিড়টা ছিল জাদুঘরের কাছে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে।

অনেকে বলছেন, এ দিন সকাল আটটা থেকেই মিলনমেলায় থাকা প্রায় ১৬ হাজার লোককে দফায় দফায় ধর্মতলায় জড়ো করা হয়েছিল। বেলা গড়ানোর পরে ভিড় বাড়তে থাকায় তাঁরা বাড়ি ফেরার পথ ধরেন। পুলিশ সূত্রের দাবি, এটা ফি বছরের নিয়ম। ওই মানুষেরা ফিরে না গেলে ধর্মতলায় ভিড়ের চাপ বাঁধনছাড়া হয়ে যেতে পারে।

তবে এটাও চোখে পড়েছে, সভায় এসে অনেকেই মুখ দেখিয়ে রওনা দিয়েছেন ভিক্টোরিয়া কিংবা চিড়িয়াখানার পথে। পুলিশের দাবি, দুপুরের খাওয়া সারতেও অনেকে সভাস্থল থেকে সরে গিয়েছেন। তেমনই এক জন বর্ধমানের মদন দাস। কিড স্ট্রিটে খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘কোন সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছি। খিদে পায় না বলুন!’’ কিন্তু ‘দিদি’র কথা শুনবেন না? সমর্থকের চটজলদি উত্তর, ‘‘এই তো খেয়ে নিয়েই আমরা আবার মিটিং শুনতে যাব।’’ কিন্তু সত্যিই তাঁর ফিরে গিয়েছিলেন কি না, তা জানা নেই। কিন্তু অনেককেই খাওয়াদাওয়া সেরে বাসে উঠে ভাতঘুম দিতে দেখা গিয়েছে। ভিড়ের চোটে ধর্মতলা, তালতলা চত্বরের ডাল-ভাত-মাছের সস্তা হোটেলগুলি চুটিয়ে ব্যবসা করেছে। রবি নস্কর নামে ফুটপাথের এক হোটেল ব্যবসায়ীর বক্তব্য, ‘‘বেশি খদ্দের হবে ধরে নিয়ে বেশি করে খাবার তৈরি করেছিলাম। তা-ও বেলা একটার আগেই সব খাবার ফুরিয়ে গিয়েছে।’’ সমাবেশে ডিউটিতে আসা পোড়খাওয়া পুলিশকর্তাদের কেউ কেউ এ-ও বলছেন, এ বার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্রমাগত লোক সভাস্থলে এসেছে এবং বেরিয়ে গিয়েছে। তার ফলে জমাট বাঁধা ভিড় চোখে পড়েনি। তবে ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে মেট্রো সিনেমা পর্যন্ত শুধু মানুষের মাথাই দেখা গিয়েছে।

Shahid Diwas Public Mamata Banerjee মিলনমেলা Crowd নবান্ন Nabanna
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy