সরকারি দফতরে কড়া নজরদারির মধ্যেই তালাবন্ধ আলমারি থেকে ১৭টি মোবাইল ফোন উধাও হয়ে গিয়েছে। দাম প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা এই ফোনগুলি ব্যবহার করেছিলেন। এই নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা প্রশাসন। কারণ, চুরি যাওয়া মোবাইল তাদের হেফাজতে ছিল।
জেলাশাসক পি ভি সেলিম জানিয়েছেন, ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত চলছে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জেলার সেই সময়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘অফিসেরই এক কর্মীকে সন্দেহ করা হচ্ছে। কারণ, তাঁর দায়িত্বেই মোবাইলগুলি ছিল। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কিছু দিন ছুটিতে রয়েছেন ওই কর্মী।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ কলকাতায় যে সব পর্যবেক্ষক কাজ করেছেন, তাঁদের জন্য ৪২টি মোবাইল ফোন কিনেছিল জেলা প্রশাসন। এক কর্তা জানান, পর্যবেক্ষকরা ভোটের কাজে সাধারণত নিজস্ব ফোন ব্যবহার করেন না। ভোট-প্রক্রিয়া চলাকালীন নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নম্বরও মোবাইল ফোন তাঁরা ব্যবহার করেন। ভোটপর্ব মিটে গেলে ওই ফোনগুলি নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেটের হেফাজতে রাখা হয়। তিনি দফতরের একটি আলমারিতে ফোনগুলি রাখেন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মাস খানেক আগে ওই নেজারত পিনাকীবাবু বদলি হয়ে যান। তাঁর জায়গায় ওই পদে যিনি এসেছেন, তিনি সম্প্রতি মোবাইলগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে আলমারি খোলেন। তখনই দেখা যায়, ৪২টির মধ্যে ১৭টি উধাও। বর্তমান নেজারত বিষয়টি জেলাশাসকে জানান। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে অতিরিক্ত জেলাশাসক (নির্বাচন) আলিপুর থানায় মোবাইল চুরি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনকে মোবাইলগুলি চালু রাখার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তী নির্বাচনের সময় যাতে মোবাইলগুলি ব্যবহার করা যায়, সেই কারণেই ওই নির্দেশ। প্রশাসনের ওই কর্তা জানান, সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে ৪২টি মোবাইল কেনা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘টাকাটা বড় কথা নয়। আসল প্রশ্ন অফিসের ভিতরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বন্ধ আলমারি থেকে মোবাইল গায়েব হয়ে গেল। অফিসের লোকজন জড়িত না-থাকলে এটা হয় না।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ তো শান্তিনিকেতন থেকে ‘নোবেল’ চুরির মতো ঘটনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy