Advertisement
E-Paper

ওরা তৃণমূল নয়, বাঁদর: অরিন্দম

তিনি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ চিত্র পরিচালক। ভোট প্রচারে অবধি রাজ্য জুড়ে নেত্রীর পাশে আকছার দেখা গিয়েছে তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৬

তিনি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ চিত্র পরিচালক। ভোট প্রচারে অবধি রাজ্য জুড়ে নেত্রীর পাশে আকছার দেখা গিয়েছে তাঁকে।

তাঁরা লাটাগুড়ির একটি পুজো কমিটির কর্তা। শাসক দলের স্থানীয় নেতাও বটে। শনি-দুপুরে তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ চিত্রপরিচালকের কুশপুতুল পোড়ালেন। চিত্র পরিচালক অরিন্দম শীলকে নিশানা করে লাটাগুড়ির প্রতিবাদ-সভায় সামিল হলেন এলাকার নানা স্তরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরাও।

গত শনিবার চাঁদার জুলুমের অভিযোগে একটি পুজো কমিটির বিরুদ্ধে অরিন্দম পুলিশের দ্বারস্থ হতে গোলমালের সূত্রপাত। পুজোটির সঙ্গে যুক্ত ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। পুজোটিরও ঠিকঠাক ছাড়পত্র নেই বলে জানিয়ে তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে এই অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, সন্ধ্যায় ক্রান্তি ফাঁড়িতে ওই দুই ব্যক্তি — সুদীপ বল ও রাজা দে আত্মসমর্পণ করেন।

দুপুরে অবশ্য অরিন্দমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে মিছিল করেন বাসিন্দারা। মালবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মহুয়া গোপের দাবি, ‘‘অরিন্দমবাবুর জন্য লাটাগুড়ির নামে ভুল বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। এটা পর্যটনের জন্য ভাল নয়।’’ লাটাগুড়ির পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল নেতা জগবন্ধু সেন সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘খামোখা আমাদের ক্লাবের ছেলেদের নাজেহাল করা চলছে। এর ফলে পার্টির ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে।’’ দু’জনেই এ দিনের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন। কলকাতায় বসে অরিন্দম অবশ্য এ সব প্রতিবাদ শুনে হাসছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই ছেলেগুলোকে আমি তৃণমূলের ছেলে বলে তো দেখি না! ওরা বাঁদর ছেলে! যাদের কোনও সৌজন্য নেই।’’

বিষয়টিকে নিয়ে অহেতুক রাজনৈতিক জলঘোলা হচ্ছে বলে বুঝিয়ে অরিন্দমের মন্তব্য, ‘‘আ-হা এখন বাংলায় কোন ক্লাবটা তৃণমূল ছাড়া অন্য কারও হাতে আছে। এরাই তো সিপিএম আমল সিপিএম, তৃণমূল আমলে তৃণমূল।’’ বাম আমলে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ মুখ বলে পরিচিত অরিন্দম গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের শিবিরভুক্ত বলে পরিচিত। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলয়েও তিনি ঢুকে পড়েছেন।

এ দিন দুপুরে লাটাগুড়িতে কিন্তু দেখা গিয়েছে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে অরিন্দমের কুশপুতুল নিয়ে মিছিল ঘুরছে। এর আগে পুজো কমিটির মাঠে তৃণমূল নেতারা প্রতিবাদে সামিল হন। স্থানীয় বাসিন্দা দময়ন্তী সেন, শঙ্কর চক্রবর্তীরা বক্তৃতা দেন। লাটাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মানিক সরকার বলেন, “এই পুজো বা এলাকার কারও ক্ষতি করার চেষ্টা হলে, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধ ডাকব।’’ লাটাগুড়ির সেই ক্লাবের পুজো কমিটির পক্ষে কৌশিক ভৌমিকের দাবি, চাঁদা নিয়ে বচসায় অরিন্দমবাবু তাঁদের গালিগালাজ করেছিলেন। তাঁর কথায়, “একজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে যা খুশি তাই বলে যাবেন, এবং করে যাবেন তা আমরা মেনে নেব না।

অরিন্দম এ দিকে, পাল্টা দাবি করছেন, অভিযুক্ত যুবকেরাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘লাটাগুড়ির রিসর্ট ম্যানেজারের মাধ্যমে ওই ছেলেগুলোর তরফেই বার বার ফোন আসছে! ওরা ক্ষমা চাইছে। তাহলে আর কীসের প্রতিবাদ!’’ চিত্র পরিচালকের ধারণা, তাঁকে অনুরোধ করলে পুলিশে অভিযোগ তুলে নেওয়া হতে পারে ভেবেই বোধহয় এই ক্ষমা চাওয়ার চেষ্টা। ‘‘এখন বিষয়টা আমারা হাতের বাইরে। কিছু করার নেই।’’— বলছেন অরিন্দম। ওই যুবকদের অত্যন্ত অভব্য ব্যবহারের সামনে তিরি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বলে জানাচ্ছেন তিনি।

সরব লাটাগুড়িও। এলাকার সব থেকে পুরনো পুজোর অমর্যাদার অভিযোগে ‘লাটাগুড়ি সম্মান বাঁচাও কমিটি’ গড়ে উঠেছে। অন্য পুজোগুলোও অভিযুক্ত ক্লাবের পাশে। পুজো বন্ধ করা যাবে না বলে প্রতিবাদে পথে নেমে তাঁরা এখন অনড়।

arindam sil TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy