গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
করোনা প্রতিষেধক বণ্টনের রাজ্যওয়াড়ি হিসাব দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। লোকসভায় পেশ করা ওই হিসাব অনুযায়ী, দেশের পাঁচ রাজ্যকে পশ্চিমবঙ্গের থেকে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে তিনটির জনসংখ্যা এ রাজ্যের তুলনায় কম। এই তিনটির মধ্যে দু’টি হল বিজেপি শাসিত গুজরাত এবং কর্নাটক। অন্যটি রাজস্থান।
দেশে করোনা টিকাকরণ শুরু হওয়ার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে একাধিক চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রকে। কম টিকা দিচ্ছে কেন্দ্র, এমন অভিযোগ বার বার উঠেছে। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গত মঙ্গলবারের সাক্ষাতেও মমতা আরও বেশি টিকা পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ মালা রায় সংসদে জানতে চেয়েছিলেন, এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কোন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কত করোনা টিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। সেই প্রশ্নের উত্তরেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ভারতী প্রবীণ পওয়ার শুক্রবার গত ছ’মাসে পাঠানো টিকার হিসাব দিলেন লোকসভায়।
তালিকায় দেখা যাচ্ছে এ বছর সব মিলিয়ে ৩৫ কোটির বেশি টিকা রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে দু’টি রাজ্য তিন কোটির বেশি টিকা পেয়েছে। সব থেকে বেশি পেয়েছে মহারাষ্ট্র। সাড়ে তিন কোটির মতো। দু’নম্বরে উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যে তিন কোটির বেশি টিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই দুই রাজ্যেই জনসংখ্যা বাংলার থেকে বেশি। মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশের পর সব থেকে বেশি টিকাপ্রাপ্তি হয়েছে যথাক্রমে গুজরাত, রাজস্থান এবং কর্নাটকের। তার পর পশ্চিমবঙ্গ। অথচ পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ১০ কোটির মতো, যা এই তিন রাজ্যের থেকেই বেশি। ২০২১-এর আনুমানিক হিসাবে গুজরাত ৭ কোটি, রাজস্থান ৮ কোটি এবং কর্নাটক ৭ কোটি জনসংখ্যার রাজ্য। ২০১১ সালে দেশের শেষ যে জনগণনা হয়, তাতেও পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা মোটামুটি এই অনুপাতেই তিন রাজ্যের থেকে বেশি ছিল।
দেশে এখন টিকাকরণ চলছে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদেরই। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে প্রাপ্তবয়স্কের অনুপাতে ভিন্নতা থাকে। কিন্তু এই তিন রাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা বাংলার থেকে বেশি এমন কোনও তথ্য নেই। ফলে টিকাবণ্টনে বৈষম্যের যে অভিযোগ উঠছে, কেন্দ্রের পেশ করা হিসাবেই তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy