Advertisement
E-Paper

অসমে আরও ২ জঙ্গি শাহনুরের মাথায়

মাথা নয়, পদমর্যাদা অনুযায়ী অসমের জঙ্গি সংগঠনে শাহনুর আলম ছিল তিন নম্বর। তার মাথার উপরে আছে আরও দু’জন। তাদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশের নাগরিক, তবে দীর্ঘকাল অসমে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। অন্য জন অসমেরই পুরনো বাসিন্দা। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর চাঁই শাহনুরকে জেরা করে এমন তথ্য মিলেছে বলেই দাবি অসম পুলিশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
শাহনুর আলম

শাহনুর আলম

মাথা নয়, পদমর্যাদা অনুযায়ী অসমের জঙ্গি সংগঠনে শাহনুর আলম ছিল তিন নম্বর। তার মাথার উপরে আছে আরও দু’জন। তাদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশের নাগরিক, তবে দীর্ঘকাল অসমে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। অন্য জন অসমেরই পুরনো বাসিন্দা। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর চাঁই শাহনুরকে জেরা করে এমন তথ্য মিলেছে বলেই দাবি অসম পুলিশের।

খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তে নেমে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) শাহনুরের নাম জেনেছিল। গোয়েন্দারা প্রথমে জেনেছিলেন, এই জঙ্গি অসমে জেএমবি-র মাথা। কিন্তু বৃহস্পতিবার অসমের নলবাড়ি জেলার মুকালমুয়া এলাকার লারকুচি গ্রামে শাহনুর ধরা পড়ার পর জেরায় গোয়েন্দারা জানেন, তার মাথায় আরও দু’জন আছে। এনআইএ শীঘ্রই ওই দু’জনের নাম ও ছবি প্রকাশ করে ইনাম ঘোষণা করবে। শুধু এই দু’জন নয়, জেএমবি-র আরও তিন নেতা এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে বলে শাহনুরের কাছ থেকে জেনেছেন তদন্তকারীরা। আপাতত তাদের খোঁজ পাওয়াই পুলিশের প্রাথমিক লক্ষ্য।

অসম পুলিশের ডিজি খগেন শর্মা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা জঙ্গিদের খোঁজ চলছে। সেই সঙ্গে জেহাদি মতাদর্শ যারা প্রচারের কাজে নিযুক্ত, তাদের ধরতেও তল্লাশি শুরু হয়েছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, অসমে জেএমবি-র জঙ্গি চাঁইদের পুলিশ দু’ভাগে ভাগ করেছে। পুলিশের বক্তব্য, এক দল বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গি ঘাঁটি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা জঙ্গি। এদেরই একটা অংশ আবার অন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আর অন্যরা মূলত জেহাদি ভাবধারা প্রচার করে। তারা উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেয় ও হিংসা ছড়াতে মানুষকে প্ররোচিত করে।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সূত্রে বেরিয়ে পড়া জেএমবি-র জঙ্গি জাল যে দক্ষিণ ভারতেও বিস্তৃত, শাহনুরকে জেরা করার পর সেই ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। ওই জঙ্গি-চক্রে জড়িত কেরল ও কর্নাটকের কয়েক জনের নাম শাহনুরের কাছ থেকে জানা গিয়েছে। অসম পুলিশ তাদের নাম ইতিমধ্যেই ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) ও ওই সব রাজ্যের পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অসম পুলিশের দাবি, ওই সব লোকজন শাহনুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়মিত অসমে আসত এবং তার পরেই অসমে ঘটত বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনা। প্রসঙ্গত, খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের অব্যবহিত পরে নিহত শাকিল আহমেদ ও তার স্ত্রী রাজিয়া বিবির মোবাইল থেকে পাওয়া সূত্রের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, ওই জেহাদি জঙ্গি চক্রের সঙ্গে চেন্নাই-সহ দক্ষিণ ভারতের যোগ রয়েছে। তা ছাড়া, ১৭ নভেম্বর হায়দরাবাদ থেকে এনআইএ গ্রেফতার করে মায়ানমারের নাগরিক ও এই জঙ্গি চক্রেরই বিস্ফোরক-বিশেষজ্ঞ খালিদ মহম্মদকে। আল কায়দার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রোহিঙ্গা জঙ্গি খালিদের যোগ রয়েছে বলে ধারণা ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের। ভারতে জঙ্গি মডিউলগুলিকে বিস্ফোরক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিতেই তাকে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে দেশে পাঠানো হয়েছিল।

শাহনুরকে জেরা করে আরও তথ্য পেতে রবিবার দিল্লি ও কলকাতা থেকে এনআইএ এবং আইবি-র অফিসারেরা গুয়াহাটি পৌঁছেছেন। শনিবারই এনআইএ সূত্রে বলা হয়, শাহনুরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তারা জেরা করবে। এনআইএ গোড়াতে জানায়, বাংলাদেশ থেকে আসা টাকা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিদের বিভিন্ন ডেরা ও প্রশিক্ষণ শিবিরে পৌঁছে দিত শাহনুর। পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র তহবিলের বিষয়টি মূলত শাহনুরই দেখাশোনা করত বলে এনআইএ-র দাবি। এ দিন অসমের এডিজি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ) পল্লব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আপাতত ১৪ দিনের জন্য শাহনুর তাঁদের হেফাজতে থাকবে। তার পর আদালত শাহনুরকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিলে এনআইএ তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানাতে পারে।

khagragarh blast burdwan nia Sahanur Alam state news online state news Assam khagragarh blast case burdwan blast case arrest police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy