রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তিনিও ২২ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম ‘সুপারিশ’ করেছিলেন! সেই নথি প্রকাশ্যে আসতেই প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নাম জড়িয়ে পড়ল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরার। শ্যামলের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে!
গত বছর বিকাশ ভবনে তল্লাশি অভিযানে একাধিক নথি উদ্ধার করেছিল সিবিআই। তার মধ্যে একটি নথিতে সেই সব চাকরিপ্রার্থীর নাম এবং রোল নম্বর রয়েছে, যাঁদের নাম সুপারিশ করেছিলেন কয়েক জন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের নাম। নাম জড়িয়েছে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এবং তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লারও। যা নিয়ে নতুন করে শোরগোল রাজ্য-রাজনীতিতে। দিব্যেন্দু, ভারতী, মমতাবালা এবং শওকত— চার জনেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অবশ্য।
সিবিআইয়ের নথিতে ‘সুপারিশকারী’দের মধ্যে রয়েছেন শ্যামলও। নথিতে অনুযায়ী, তিনি ২২ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন। শ্যামলের অবশ্য দাবি, তিনি কারও নাম সুপারিশ করেননি। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। শ্যামলের কথায়, ‘‘আমি কোনও চাকরিপ্রার্থীর নাম সুপারিশ করিনি। বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আমার মতো তফসিলি সম্প্রদায়ের নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানো হচ্ছে। সিবিআই তলব করলে আমি দলের অনুমতি নিয়ে তদন্তে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’
সিবিআইয়ের নথি প্রকাশ্যে আসার পরেই জেলায় তৃণমূল নেতা শ্যামলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
কেন্দ্রের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে যে তৃণমূল চাকরি বিক্রি করেছে, তার প্রমাণ ওই তালিকা। শ্যামল সাঁতরার উচিত, কার নির্দেশে উনি এমনটা করেছেন এবং চাকরি বিক্রির টাকা কোথায় কোথায় পৌঁছে দিয়েছিলেন, তার তথ্য সঠিক ভাবে সিবিআইকে জানানো।’’ সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী দেবলীনা হেমব্রম বলেন, ‘‘এই সরকারের সবেতেই দুর্নীতি। লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করে হাজার হাজার তরুণের স্বপ্নকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের ছোট, বড়, মেজো নেতারা। এই ঘটনা তারই প্রমাণ। অবিলম্বে এই চাকরি চুরির তদন্ত করে দ্রুত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’’