Advertisement
E-Paper

বিধায়ক হিসেবেই বেতন পাবেন ২৩ জন

কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য সরকারই। সর্বোচ্চ আদালতে সেই মামলা চলাকালীনই সরকার জানিয়ে দিল, বিধায়ক হিসেবেই বেতন এবং অন্যান্য ভাতা পাবেন পরিষদীয় সচিব হিসেবে মনোনীত ২৩ জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৫১

কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে রাজ্য সরকারই। সর্বোচ্চ আদালতে সেই মামলা চলাকালীনই সরকার জানিয়ে দিল, বিধায়ক হিসেবেই বেতন এবং অন্যান্য ভাতা পাবেন পরিষদীয় সচিব হিসেবে মনোনীত ২৩ জন।

রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে দু’টি প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে।

• পরিষদীয় সচিবের পদটিই অসাংবিধানিক বলে হাইকোর্ট যে-রায় দিয়েছে, সরকার কি সেটাই মেনে নিল?

• যদি তা-ই হয়, তা হলে শীর্ষ আদালতে আপিল মামলা চালিয়ে যাওয়ার অর্থ কী?

সঙ্গত কারণেই সরকারি ভাবে এই জোড়া প্রশ্নের সুস্পষ্ট জবাব মিলছে না। কিন্তু প্রশাসনের একটি অংশের মতে, এটা উচ্চ আদালতের রায় শিরোধার্য করে নেওয়ারই প্রমাণ। আর বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এটা নিজেকেই নিজের জব্বর ধাক্কা সরকারের। সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের মামলার মাঝখানে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আসলে সরকারই পিছু হটল।

সরকারের সিদ্ধান্তটা কী?

পরিষদীয় সচিবের পদটি বিধায়কের থেকে কিছুটা উঁচু। পরিষদীয় সচিব হিসেবে রাজ্যের মনোনীত ২৩ জন কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে বিধায়কের প্রাপ্যও পাচ্ছেন না। যে-হেতু মামলা চলছে, তাই পরিষদীয় সচিবের পাওনাও বন্ধ। এই অবস্থায় সরকারের সিদ্ধান্ত, বিধায়কেরা সাধারণ ভাবে যে-বেতন এবং অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন, পরিষদীয় সচিব হিসেবে মনোনীত ২৩ বিধায়ক আপাতত সেটাই পাবেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভার সচিবকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভার সচিব সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কোন পদের অধিকারী হিসেবে ওই ২৩ জনকে বেতন ও ভাতা দেওয়া হবে? তাঁরা পরিষদীয় সচিবের প্রাপ্য পাবেন, নাকি বিধায়কদের প্রাপ্য? বিধানসভার সচিবের চিঠির উত্তরে সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরিষদীয় সচিব নয়, ওই ২৩ জন টাকা পাবেন বিধায়ক হিসেবেই।

রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত হাইকোর্টের রায়ই মেনে নিল বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের একাংশ। ‘‘সাধারণ বিধায়কদের হারেই ওই ২৩ জনকে বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার মানে পরিষদীয় সচিবের পদ অবৈধ, সেটা মেনে নেওয়া,’’ বললেন রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা।

একই মত বিরোধী দলগুলির। তবে তাদের প্রতিক্রিয়ায় রয়েছে তীব্র কটাক্ষ। সিপিএম নেতা ও বিধায়ক আনিসুর রহমানের কথায়, ‘‘এর পরে পরিষদীয় সচিবদের আর ওই পদ আঁকড়ে থাকার কোনও মানেই হয় না।’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘সেই তো মেনেই নিলে, তবে কেন লোক হাসালে!’’

মন্ত্রীর কাজে সাহায্য করার জন্য ২০১৩ সালে ২৩ জন পরিষদীয় সচিব নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। তাঁদের ওই পদ বিধায়কের চেয়ে উঁচু। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ওই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করে তা খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। মামলাটি সেখানে বিচারাধীন থাকায় জুন থেকে ২৩ পরিষদীয় সচিবের বেতন বন্ধ। বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি বলে বিধায়ক হিসেবেও ওই ২৩ জনকে বেতন দেওয়া যাচ্ছে না।

মাস চারেক বেতন বা ভাতা না-পেয়ে পরিষদীয় সচিবদের অনেকে সমস্যায় পড়েছেন। সুরাহা চেয়ে স্পিকারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁদের কয়েক জন। তার পরেই এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে চিঠি লেখেন বিধানসভার সচিব। নবান্নের খবর, বৃহস্পতিবার বিধানসভার সচিবকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত বিধায়ক হিসেবেই বেতন ও বিভিন্ন ভাতা পাবেন ওই ২৩ জন।

parliamentary secretary 23 parliamentary secretary salary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy