Advertisement
E-Paper

পাশাপাশি চলছে দুই ক্লাসের পড়া

সেই মতো ২০০৫ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের দেওয়া প্রায় দু’লক্ষ টাকায় একতলা ভবনের নীচে ও উপরের দু’টি ঘরে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। পাশাপাশি টিনের ছাউনির ঘরেও চলত পঠনপাঠন।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
পঠনপাঠন: বাপুলিরচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’টি ক্লাস একসঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

পঠনপাঠন: বাপুলিরচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’টি ক্লাস একসঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি দুই শিক্ষক চেয়ারে বসে তিনটি ক্লাস এক সঙ্গেই নিচ্ছেন। তিন দিকে ঘিরে বসে প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা।

আর একটি ঘরে বাকি ক্লাসগুলি নিচ্ছেন আর একজন শিক্ষক।

মথুরাপুর১ ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর উত্তর পঞ্চায়েতে বাপুলিরচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই হল অবস্থা। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন। সমস্ত বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে দরবার করেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

১৯৫৪ সালে ওই বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদন পেয়েছিল। একটি লম্বা ইটের দেওয়াল, টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে পঠনপাঠন শুরু হয়। ছাত্রছাত্রী সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে যাওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজন পড়ে। সেই মতো ২০০৫ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের দেওয়া প্রায় দু’লক্ষ টাকায় একতলা ভবনের নীচে ও উপরের দু’টি ঘরে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। পাশাপাশি টিনের ছাউনির ঘরেও চলত পঠনপাঠন।

কিন্তু টিনের ছাউনি দেওয়া বহু বছর পুরনো ঘরটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় তার জরাজীর্ণ দশা। ৫ ইঞ্চি ইটের গাঁথুনির দেওয়ালও ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ওই ভবনে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তারপর থেকে ভবনের সমস্যা দেখা দেয়। কমতে থাকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা।

২০০৫ সালের সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় তৈরি ভবনে ক্লাস নেওয়া চলছে। নীচের ঘর ঠিক থাকলেও বৃষ্টিতে ছাদের জল চুঁইয়ে ‌নামে মেঝেয়।

বর্তমানে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৬ জন। শিক্ষক তিনজন। মিড ডে মিলের রান্না ঘর থাকলেও ছেলেমেয়েদের খাবার জন্য আলাদা কোনও ছাউনির ব্যবস্থা নেই। বারান্দায় বা সামনের খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে-বসে খেতে হয়। আবার বারান্দা ঘেরা না থাকায় বৃষ্টি হলেই জলের ছাঁট আসে। তাই খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। ছাত্রদের শৌচাগার থাকলেও ছাত্রীদের আলাদা কোনও শৌচাগার নেই। শিক্ষকদের আলাদা অফিস ঘর নেই। বিদ্যালয়ের সামনে ছোট একটু মাঠ রয়েছে বটে, কিন্তু তা খুবই নিচু হওয়ায় বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান জল থৈ থৈ করে। জল ঠেলে স্কুলে ঢুকতে হয় কচিকাঁচাদের। একটি মাত্র নলকূপ। তা-ও গরম পড়লেই মাঝে মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে পাড়ার নলকূপ থেকে পানীয় জল সরবরাহ করতে হয়। মিড ডে মিল রান্নায় সমস্যা হয়। স্কুলে সীমানা প্রাচীরও নেই।

আরও পড়ুন: বাবা চৌকির নীচে, অন্ধকারে উধাও মৌলবি

প্রধান শিক্ষক কমলকৃষ্ণ হালদারের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর অভাবে ছেলেমেয়েরা চলে যাচ্ছে দূরের স্কুলে। ক’বছর আগে পর্যন্ত ২৫০-৩০০ ছাত্রছাত্রী ছিল। কমতে কমতে এই দশা।

প্রধান শিক্ষক জানান, ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতর— সর্বত্র জানিয়েও হাল ফেরানো যায়নি স্কুলের। সহকারী শিক্ষক সুদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘একই ঘরে ক্লাস নিতে গিয়ে ছেলেমেয়েরা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছে। দুই শিক্ষক বসে পড়াতেও সমস্যা হচ্ছে।’’

স্কুলটি মথুরাপুর পূর্ব চক্রের মধ্যে পড়ে। ওই চক্রের স্কুল পরিদর্শক মুকুল গাইন বলেন, ‘‘ওই স্কুলের বিষয়ে জেলা প্রকল্প আধিকারিককে জানানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ
শুরু হবে।’’

Class student Teacher
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy