—প্রতীকী চিত্র।
ছেলের জন্মদিনে কেক কিনতে বেরিয়েছিলেন বাবা-মা। বাড়ি ফিরে মা দেখলেন, এগারো বছরের ছেলের নিথর দেহ ঝুলছে গামছার ফাঁসে!
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, বনগাঁ থানার সুন্দরপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ছেলেটি আত্মঘাতী হয়েছে। তার কারণ কী, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিকে, এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলেটি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। বাবা কলকাতায় শ্রমিকের কাজ করেন। ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরেছিলেন। তবে কাজের টাকা পাননি বলে ভাল ভাবে ছেলের জন্মদিন পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন। বাবার কথায়, ‘‘হাতে কাছে টাকা বেশি ছিল না। ছেলেকে বলি, কী খেতে চাস জন্মদিনে। সে বলেছিল, বাবা কেক আর পায়েস হলেই হবে। আমি ওকে বলেছিলাম, রবিবার কাজে ফিরে যাওয়ার আগে টাকা দিয়ে যাব, মাকে মাংস রান্না করে দিতে বলিস।’’
তার আগেই ঘটে গেল এই ঘটনা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাবা-মা বেরিয়েছিলেন কেক, পায়েস তৈরির জন্য দুধ-চাল-চিনি কিনতে। ছেলে বাড়িতে একা ছিল। টিভিতে কার্টুন দেখছিল।
কেনাকাটা হয়ে গেলে ছেলেটির মা আগে বাড়ি ফেরেন। দরজা খুলে দেখেন, ছেলে দেহ ঝুলছে বাঁশের আড়ার সঙ্গে। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। তখনও ঘরে টিভিতে কার্টুন চলছিল বলে জানিয়্ছেন পড়শিরা।
শুক্রবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, এক চিলতে টিনের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমেছে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাবা-মা বাকরুদ্ধ। ঘরে পড়ে রয়েছে কেক ও পায়েসের দুধ। কেক হাতে নিয়ে বাবা কেঁদে চলেছেন। বললেন, ‘‘পুজোয় জামা-প্যান্ট এখনও কেনা হয়নি। ছেলেকে বলেছিলাম, দু’এক দিনের মধ্যে জামা কিনে দেব।’’ কান্নায় গলা ধরে আসছিল মায়ের। কোনও মতে বললেন, ‘‘কেন এমন করল, বুঝতে পারছি না। আমরা এ বার কী ভাবে বাঁচব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy