Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নাচের দলে নাবালিকাদের নাম লিখিয়ে গ্রেফতার দম্পতি

তেরো বছরের এক কিশোরীকে অপরহণের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল গাইঘাটা থানার পুলিশ। সেই সূত্রে হদিস মিলল, কিশোরীদের বিহারে নিয়ে গিয়ে নাচের দলে নামানোর এক চক্রের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৬
Share: Save:

তেরো বছরের এক কিশোরীকে অপরহণের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল গাইঘাটা থানার পুলিশ। সেই সূত্রে হদিস মিলল, কিশোরীদের বিহারে নিয়ে গিয়ে নাচের দলে নামানোর এক চক্রের। এই ঘটনায় এক দম্পতি-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে শিশু শ্রম বিরোধী আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার তদন্তে নেমে তিন নাবালিকাকে উদ্ধারও করেছে পুলিশ। যাদের দুই বোনকে বিহারে পাঠানোর ব্যাপারে সম্মতি ছিল পরিবারের। অন্য পরিবারটি ছিল সম্পূর্ণ অন্ধকারে। পুলিশ দুই বোনের বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে নাবলিকার পরিবারের অনুমতি আছে কিনা, তা বিবেচ্য নয়। অনুমতি থাকলেও তাঁরা শিশু শ্রম বিরোধী আইনে অভিযুক্ত বলেই গণ্য হবেন। সে কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে দুই নাবালিকার বাবা-মাকে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার স্থানীয় মানিকহীরা গ্রামের এক বাসিন্দা থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর তেরো বছরের মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। সেই সূত্রে গাইঘাটা থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী বিশেষ দল তৈরি করেন। নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার অভিযান চলে গোপালনগরের ন’হাটায় চারুবালা সরকার ওরফে চন্দ্রা ও তাঁর স্বামী সুরজিতের বাড়িতে। গ্রেফতার করা হয় ওই দম্পতিকে। উদ্ধার হয় দু’টি মেয়ে। চারুবালা বলে, ‘‘বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়েও যে কিশোরীদের নিয়ে যাওয়া বেআইনি, তা জানতাম না।’’

এ দিকে, চারুবালাদের বাড়ি থেকে মানিকহীরা গ্রামের নাবালিকার হদিস পায়নি পুলিশ। পরে দম্পতিকে জেরা করে চাঁদপাড়া স্টেশনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মেয়েটিকে। পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে বুঝতে পেরে মেয়েটিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছিল ওই দম্পতি। জানা গিয়েছে, তিনটি মেয়েকে বৃহস্পতিবারই বিহারে পাঠানোর ছক কষা হয়েছিল।

ধৃত দম্পতিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, চাকদহ, গাইঘাটা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গরিব পরিবারের কিশোরীদের টাকার লোভ দেখানো হতো। বলা হতো, ভিনরাজ্যে ভাল কাজ জুটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আখেরে তাদের বিহারের নিয়ে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে নাচের আসরে নামানো হতো।

উদ্ধার হওয়া তিন কিশোরীকে হোমে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুই কিশোরী বোনের একজনের কথায়, ‘‘বিহারে আমাদের বিয়ে বাড়িতে বেলা ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত নাচ করতে হতো। গরমকালে একটি শোয়ের জন্য সাড়ে সাতশো এবং শীতকালে একটি শোয়ের জন্য সাড়ে তিনশো টাকা পাওয়ার কথা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

girl trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE