আবারও ট্রলি ব্যাগের মধ্যে থেকে উদ্ধার হল একটি দেহ। মঙ্গলবার ঘোলা থানার অন্তর্গত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি গাড়ির মধ্যে থেকে ট্রলি ব্যাগে থেকে এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেল। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঘোলা ও নাগেরবাজার থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের নাগেরবাজার থেকে দু’জন ব্যক্তি একটু অ্যাপ নির্ভর ক্যাব ভাড়া করেন। এর পর, নিমতা দিয়ে মুড়াগাছা সেতু হয়ে ঘোলা মহিষপোতার কাছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে অন্ধকার জায়গায় গাড়ির চালককে দাঁড় করাতে বলেন ওই দুই ব্যক্তি। ফাঁকা অন্ধকার জায়গায় দাঁড়াতে বলায় ক্যাব চালকের সন্দেহ হয়। তিনি ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন ক্যাব চালকের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন দুই ব্যক্তি। সেই সময়ে ঘোলা থানার টহলরত ভ্যান সেখান থেকে যাচ্ছিল। সেই ঝামেলা দেখে পুলিশ তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে গাড়ির মধ্যে থাকা দুই ব্যক্তির মধ্যে এক জন পালিয়ে যান। অন্য ব্যক্তিকে পুলিশ ধরে ফেলে। তার পর তাঁকে জেরা করাতেই ট্রলি ব্যাগের মধ্যে মৃতদেহের কথা পুলিশকে জানান। এর পর গাড়ি খুলে তল্লাশি চালিয়ে গাড়ির ডিকিতে ওই ট্রলি ব্যাগ দেখতে পায় পুলিশ। ট্রলি ব্যাগ খুলতেই দেখা যায় তার ভিতরে একটি সেলোটেপ লাগানো বস্তা। সেটি খুলতেই দেখা যায় ভিতরে এক ব্যক্তির মৃতদেহ রাখা আছে। মৃতদেহের মুখ সেলোটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় রয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ঘোলা থানা ও নাগেরবাজার থানার পুলিশ বাহিনী আসে। মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঘোলা ও নাগেরবাজার থানার পুলিশ। কে বা কারা কেন ওই যুবককে খুন করেছে তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান এর আগে এ রকম ঘটনা এখানে ঘটেনি। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় এসে মুণ্ডহীন দেহ গঙ্গায় ফেলতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান দুই মহিলা। ওই দিন সকালে দুই মহিলা কুমোরটুলি ঘাটের কাছে একটি ট্রলি ব্যাগ গঙ্গায় ফেলার তোড়জোড় করছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের আচরণ অস্বাভাবিক ঠেকে স্থানীয়দের। ট্রলি ব্যাগ খুলে দেখা যায়, তার ভিতরে একটি মহিলার মুণ্ডহীন দেহ রয়েছে। স্থানীয়দের তরফেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ দু’জনকে আটক করে নিজেদের গাড়িতে তোলে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ট্রলি ব্যাগটিকেও। স্থানীয়দের একাংশ পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, ওই দুই মহিলা খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ ভাসাতে এসেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ট্রলি ব্যাগে প্রৌঢ়ার দেহ ভরে মধ্যমগ্রামের ভাড়াবাড়ি থেকে ভ্যানে চেপে প্রথমে দোলতলা মোড়ে আসেন মা ও মেয়ে। সেখান থেকে নীল-সাদা ট্যাক্সিতে চেপে যান কুমোরটুলি ঘাটের কাছে। তার আগে প্রিন্সেপ ঘাটেও তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করেছেন ট্যাক্সির চালক। প্রৌঢ়ার পায়ের একাংশ কাটা ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মা-মেয়ে জানিয়েছেন, ট্রলি ব্যাগে ঢোকানোর জন্য মৃতের পায়ের পাতা দুটো কেটে দেন তাঁরা। তবে এই দাবির সত্যাসত্য খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মধ্যমগ্রামের যে ভাড়াবাড়িতে মা-মেয়ে থাকতেন, সেখানে গত ১১ ফেব্রুয়ারি যান ওই প্রৌঢ়া। প্রৌঢ়ার বাড়ি অসমের যোরহাটে। শ্বশুরবাড়ি বর্ধমানের নন্দঘাটে। তবে দীর্ঘ দিন তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।