সপ্তাহান্তের সন্ধ্যায় হলভর্তি দর্শকের সামনে মঞ্চস্থ হল ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের কালজয়ী সিনেমা ‘আনন্দ’-এর নাট্যরূপ। সেখানে চিকিৎসক ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, আর আনন্দের ভূমিকায় ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা, সাত মাসের অস্মিকা দাসের স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ) চিকিৎসার খরচ তুলতেই নৈহাটি ব্রাত্যজন প্রযোজিত নাটকটি মঞ্চস্থ হল শনিবার। পেশির এই বিরল রোগের চিকিৎসায় ১৬ কোটি টাকার প্রয়োজন ওই শিশুর।
সমাজমাধ্যমে অস্মিকার বিরল রোগের কথা ও তার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের বিষয়টি নজরে আসে নৈহাটির এই থিয়েটারদলের কলাকুশলীদের। এর পরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ‘আনন্দ’-এর গল্প অবলম্বনে নাটকটি মঞ্চস্থ করা হবে। আর তার টিকিট বিক্রি, অনুদানের টাকার সঙ্গে ৩২ জন কলাকুশলীর সাম্মানিকের পুরোটাই দেওয়া হবে অস্মিকার চিকিৎসার জন্য। এ দিন তিন লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় অস্মিকার পরিবারের হাতে। ছোট্ট অস্মিকার বাবা শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘যখন প্রথম বার ওকে কোলে নিয়েছিলাম, বুঝতেই পারিনি নিষ্পাপ দুটো চোখ ধীরে ধীরে ব্যথায় কাতর হয়ে উঠবে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, অস্মিকার টাইপ১ এসএমএ। অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তবে এই প্রথম কোনও থিয়েটারের দল এ ভাবে পাশে দাঁড়াল।’’
স্কুলফেরত ওই নাটক দেখতে আসা শিক্ষিকা শিবাণী চক্রবর্তী বললেন, ‘‘আনন্দের কাহিনির সঙ্গে অস্মিকার জীবনকে মিলিয়ে দিয়েছে মনে হল। সম্প্রতি এই রোগ নিয়ে বিস্তারিত লেখা পড়েই জানতে পারি, এসএমএ কতটা যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে শিশু ও তার পারিপার্শ্বিক সকলের জন্য। সকলেরই অবগত হওয়া উচিত, যাতে এ ভাবে পাশে দাঁড়ানো যায়।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)