Advertisement
২৪ মে ২০২৪
Anganwadi Center

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালানোর জন্য এগিয়ে এলেন গ্রামবাসী

প্রায় ১৭ বছর আগে বাম জমানায় নির্মিত ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি গোড়ার দিকে টিনের চাল ও ইটের দেওয়াল দেওয়া হয়েছিল।

অঙ্গনওয়াড়ি তৈরির দাবিতে গ্রামে পোস্টার পড়েছে। সংস্কারের অভাবে পড়ে রয়েছে তৈরি হওয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি।

অঙ্গনওয়াড়ি তৈরির দাবিতে গ্রামে পোস্টার পড়েছে। সংস্কারের অভাবে পড়ে রয়েছে তৈরি হওয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ০৬:১৭
Share: Save:

সরকারি খাস জমিতে ২০০৬ সালে তৈরি হয়েছিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। জমি জটে হঠাৎই সেই কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়ে পড়ুয়ারা। বাধ্য হয়ে রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচে পঠন-পাঠন করতে হচ্ছিল ভাঙড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ১ পঞ্চায়েতের নওয়াবাদ গ্রামের ১৪৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পড়ুয়াদের। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মোল্লা নিজের বাড়ির বারান্দায় কেন্দ্র চালানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

প্রায় ১৭ বছর আগে বাম জমানায় নির্মিত ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি গোড়ার দিকে টিনের চাল ও ইটের দেওয়াল দেওয়া হয়েছিল। গ্রিল, দরজা সবই বসেছিল। কিন্তু ইটের দেওয়ালের গায়ে প্লাস্টার-রং করা হয়নি। আমপানের সময়ে ওই কেন্দ্রের টিনের চাল উড়ে যায়। পরে প্রশাসনের তরফে কেন্দ্রটি সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু সংস্কারের কাজ করতে গেলে বাধা দেন স্থানীয় বাসিন্দা তোয়েব মোল্লা। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পিছনেই তাঁর বাড়ি। তিনি দাবি করেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তাঁর জমিতে জোর করে নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলে সেখানে কোনও ভাবেই সংস্কারের কাজ করা যাবে না।

সরকারি ভাবে তৈরি কেন্দ্র সংস্কারে তিনি কেন বাধা দিচ্ছেন— জবাব দেননি তোয়েব। এ দিকে, এর ফলে সমস্যায় পড়েন কেন্দ্রের কর্মী, সহায়িকা ও পড়ুয়ারা। গত তিন বছর ধরে মাথায় ছাদ ছাড়াই চলেছে কেন্দ্র। সংস্কারের অভাবে কেন্দ্রটি ধীরে ধীরে পোড়ো বাড়িতে পরিণত হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে রাতের অন্ধকারে খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইট, দরজা, জানলা।

এই নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে কেন্দ্রটি তৈরির জন্য এলাকায় পোস্টারও পড়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী শিপ্রা নাথ বলেন, “সরকারি ভাবে আমাদের কেন্দ্রটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। ওই কেন্দ্রের টিনের চাল ভেঙে যাওয়ার পর থেকে স্থানীয় এক বাসিন্দা সংস্কারের কাজে বাধা দিচ্ছেন। ফলে আমরা সমস্যায় পড়েছি।”

এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, “শিশুদের খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করতে হচ্ছিল। প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমি আমার বাড়িতে ক্লাস করার সুযোগ করে দিয়েছি। দ্রুত কেন্দ্রটি সংস্কার করা দরকার।”

এলাকার তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর ছেলে আব্দুল মোমিন বলেন, “আমরা চাই, অবিলম্বে ওই কেন্দ্রটি সংস্কার করে ফের চালু করা হোক। কিন্তু স্থানীয় এক বাসিন্দা ওই কাজ করতে সমস্যা করছেন। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “জমি-সংক্রান্ত কোনও সমস্যার কারণে কেন্দ্রটির সংস্কার বন্ধ হয়েছে বলে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি সিডিপিওকে। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE