E-Paper

ভবন-রাস্তা তৈরির খরচ দেখিয়ে টাকা ‘আত্মসাৎ’, প্রশ্নে বিদ্ধ ঠিকাদার

স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য ভবন ছাড়া একটি রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। টাকা তুলে নেওয়া হলেও ব্লক অফিস চত্বরে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ০৭:১৫
লক্ষাধিক টাকা দুর্নীতির অভিযোগ।

লক্ষাধিক টাকা দুর্নীতির অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।

নামখানায় একশো দিনের কাজে লক্ষাধিক টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগের তির শাসকদলের বিরুদ্ধে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে নামখানা ব্লক অফিস চত্বরে দু’টি ভবন ও একটি কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতে খরচ দেখানো হলেও আদতে তা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ।

স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য ভবন ছাড়া একটি রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। টাকা তুলে নেওয়া হলেও ব্লক অফিস চত্বরে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক এবং নামখানার বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা স্নেহাশিস গিরি।

অভিযোগকারীর দাবি, ওই ভবন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার অশোক মালি এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা দু’টি জব কার্ডে টাকা উঠেছে। একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন দীর্ঘদিন চলছিল। কিছু দিনের মধ্যে একশো দিনের কাজের টাকা কিছু শর্তের মাধ্যমে রাজ্যকে দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। টাকা ছাড়ার আগে নামখানায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিরোধী দলগুলির দাবি, প্রশাসনের কিছু আধিকারিক ও রাজনৈতিক নেতারা মিলে এই দুর্নীতি করেছেন।

অভিযোগকারী বলেন, ‘‘সংরক্ষণ কেন্দ্রের নাম করে টাকা উঠেছে। একশো দিনের কাজের টাকা উঠেছে, কিন্তু কাজ হয়নি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ভবন তৈরির নাম করে ঠিকাদার অশোক মালি-সহ অন্যেরা টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রশাসন চোখ বন্ধ করে রেখেছে।’’

অভিযোগ প্রসঙ্গে নামখানার বিডিও অমিত সাউ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। কত টাকা অনুমোদন করা হয়েছিল, সেই টাকায় কাজ হয়েছে কিনা, কে টাকা পেয়েছেন— সব কিছু খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভিযুক্ত ঠিকাদারের অবশ্য দাবি, ‘‘আমার এবং আমার স্ত্রীর নামে জব কার্ড আছে কিনা, তা আমার জানা নেই। আমি ইমারতি সামগ্রী সরবরাহ করেছি। বাকি কী হয়েছে, বলতে পারব না।’’ তৎকালীন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা মালি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার সময়কালে এগুলো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমি কিছুই জানি না। একশো দিনের কাজের সঙ্গে ওই সময়ে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁরাই বলতে পারবেন।’’

তৃণমূল নেতা তথা বর্তমানে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাসের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা তো রয়েছেই। একশো দিনের কাজের যে টাকা দিয়েছিল, তাতে গ্রামে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। সেই সময়ে ভবন তৈরি না হয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। এখানে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলেই জানি।’’

স্থানীয় বিজেপি নেতা শিবপ্রসাদ প্রামাণিক বলেন, ‘‘দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। এই দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতা থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকেরা যুক্ত রয়েছেন। এই সমস্ত দুর্নীতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বন্ধ রেখেছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Scam namkhana

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy