Advertisement
E-Paper

চোর সন্দেহে জরিমানা, তরুণ মৃত বিষক্রিয়ায়

ধবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সালিশি ডেকেছিল যারা, সেই সব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের মানুষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫০
ফারুক মণ্ডল ওরফে কেদার।

ফারুক মণ্ডল ওরফে কেদার।

মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে পাকড়াও করে গ্রামে সালিশি সভা বসেছিল। অভিযোগ, সেখানে মাতব্বরেরা নিদান দেয়, ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। সেই সালিশি সভার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

অপমান মেনে নিতে পারেননি তরুণ। অভিযোগ, বিষ খান তিনি। সোমবারের ওই ঘটনায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বাদুড়িয়ার আটঘরা গ্রামের নিমতলার বাসিন্দা ফারুক মণ্ডল (৩১) ওরফে কেদারকে। সেদিনই সেখানে মারা যান তিনি। মঙ্গলবার দেহ কবরস্থ করা হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

বুধবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সালিশি ডেকেছিল যারা, সেই সব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের মানুষ। তবে পুলিশের কাছে এখনও কারও নামে অভিযোগ হয়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সালিশি সভার কথা কেউ লিখিত ভাবে জানাননি। তবে শোনা যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সভার ছবি দেওয়া হয়েছিল। আমরা তা হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

মৃতের মা সাজেদা বিবি বলেন, ‘‘ছেলেটা বার বার বলছিল, চুরি করেনি। না জেনেই চোরাই মোবাইল কিনেছি। কিন্তু কেউ ওর কথা কানে তুলল না। সকলের সামনে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হল। সেই অপমানেই ছেলেটা বাড়ি ফিরে এসে বিষ খায়।’’ মৃতের মামা এমদাদুল মণ্ডল, কাকা মোতালেবদের কথায়, ‘‘অপরাধ প্রমাণের আগেই শাস্তি ঘোষণা হয়ে গেল!’’

কিন্তু যারা সালিশি বসাল, তাদের কথা থানায় লিখিত ভাবে জানাচ্ছে না কেন? কেদারের আত্মীয়দের অনেকেই বললেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। যারা সালিশি বসিয়েছিল, সকলে মাতব্বর লোক। সাহস করে উঠতে পারছি না। দেখা যাক, কত দূর কী করা যায়।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুটবলার হিসেবে নামডাক ছিল কেদারের। নানা জায়গা থেকে খেলার ডাক আসত। প্রচুর পুরষ্কারও পেয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর নামে অভিযোগ ওঠে, গ্রামের একজনের মোবাইল চুরি করেছেন। অভাবের সংসার হলেও কেদার এই কাজ করতে পারেন, তা মানতে পারছেন না পরিবারের কেউ। গ্রামের বহু মানুষও বলছেন সে কথা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আত্মীয়েরা জানালেন, সোমবার একটি পোলট্রি ফার্মে সালিশি সভার ডাকা হয়েছিল। মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন কেদার। আত্মীয়দের অনেকেরই প্রশ্ন, যদি ছেলে অপরাধ করেও থাকে, তা হলে থানা-পুলিশ করা যেত। তা না করে জরিমানা করা হবে কেন? সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে এসে কীটনাশক খান কেদার। তাঁর ছোট দুই সন্তান। স্ত্রী আরেফা ঘরে রাখা মেডেল-ট্রফি দেখিয়ে বলেন, ‘‘গ্রামের সম্মানের জন্য যে মানুষটা এত চেষ্টা করল, তারই কপালে এমন অপবাদ জুটল!’’

Crime Theft Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy