জমি দখলমুক্ত করতে এলেন প্রশাসনের কর্তারা। ছবি: সামসুল হুদা ।
সম্প্রতি ভাঙড়ের জাগুলগাছি এলাকায় একটি চালকলে হানা দিয়েছিল ইডি। এ বার সেখানে হানা দিয়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করল প্রশাসন। ভাঙড় ১ বিডিও প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের নির্দেশে প্রায় ৩২ শতক সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।’’
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে জাগুলগাছি এলাকায় ‘অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে ওই চালকলে। অভিযোগ, ২০১৬ সালে সরকারি পাট্টার জমি দখল করে গড়ে উঠেছিল চালকল। ২০২১ সালে মালিকানা বদল হয়। পরবর্তী সময়ে ওই চালকল কিনে নেন আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশ এবং আলিফ নুর ওরফে মুকুল। আনিসুর দেগঙ্গা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। আনিসুর ও আলিফ সম্পর্কে দুই ভাই। তাঁরা আবার রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমানের আত্মীয়।
রেশন দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে নেমে সম্প্রতি ভাঙড়ের ওই চালকলে হানা দিয়েছিল ইডি। বর্তমানে আনিসুর ও আলিফ জেল হেফাজতে। এই পরিস্থিতিতে চালকল কর্তৃপক্ষ সরকারি জমি দখলমুক্ত করার বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
সূত্রের খবর, জাগুলগাছি মৌজায় ১ নম্বর খতিয়ানে প্রায় ৩২ শতক সরকারি খাসজমি আছে। অভিযোগ, তৎকালীন ভাঙড় ১ (এ) ব্লক তৃণমূল সভাপতি কাইজ়ার আহমেদ প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ওই খাসজমি জবরদখল করে চালকল তৈরি করতে সহযোগিতা করেছিলেন।
পঞ্চায়েত ভোটের পরে ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের নতুন বোর্ড গঠন হয়। ওই বোর্ডের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ আহসান মোল্লা ব্লক এলাকার সরকারি খাসজমি পুনরুদ্ধার করতে সরব হন। তিনি কাইজ়ারের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত। সেই মতো ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর জমি পুনরুদ্ধার করতে একাধিক বার শুনানি করে। কিন্তু বর্তমান চালকল কর্তৃপক্ষ জমির স্বপক্ষে কোনও কাগজ দেখাতে পারেননি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এ দিন ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর, ভাঙড় থানা, ব্লক প্রশাসন সহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ওই চালকলে গিয়ে জমি মাপজোক করে ঘিরে দেন।
এ দিকে, এ দিন যখন প্রশাসনিক ভাবে সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হচ্ছে, তখন তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক কাইজ়ারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তাঁরা ‘চোর চোর’ স্লোগান তোলেন। কাইজ়ার পরে বলেন, ‘‘আমার নামে মিথ্যা দোষারোপ করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা-চরিতার্থ করার জন্য এ সব করা হচ্ছে।’’
ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ আহসান মোল্লার কথায়, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় আসার পরে ব্লক এলাকার যত সরকারি খাসজমি আছে, তা চিহ্নিত করে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। আপাতত এ দিন ৩২ শতক সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করা হল। আমরা কোনও ভাবেই সরকারি জমিতে বেআইনি, অনৈতিক কাজ করতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy