Advertisement
E-Paper

পুলিশের গাড়ি পৌঁছে দিল কেন্দ্রে

বেলা তখন প্রায় সওয়া ২টো। গাইঘাটা থানার সামনে যশোর রোডে উদভ্রান্তের মতো পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজছিলেন সৌগত চক্রবর্তী। তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে গাইঘাটার ঢাকুরিয়া হাইস্কুলে। গাইঘাটা ঠিকানা লেখা থাকায় তিনি বাসে করে থানার সামনে এসে নামেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০০:৪২
গোসাবার গদখালিতে পুলিশের নজরদারিতে চলছে ফেরি। ছবি: সামসুল হুদা

গোসাবার গদখালিতে পুলিশের নজরদারিতে চলছে ফেরি। ছবি: সামসুল হুদা

বেলা তখন প্রায় সওয়া ২টো। গাইঘাটা থানার সামনে যশোর রোডে উদভ্রান্তের মতো পরীক্ষাকেন্দ্র খুঁজছিলেন সৌগত চক্রবর্তী। তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে গাইঘাটার ঢাকুরিয়া হাইস্কুলে। গাইঘাটা ঠিকানা লেখা থাকায় তিনি বাসে করে থানার সামনে এসে নামেন। তখনও জানতে পারেন কেন্দ্রটি সেখান থেকে বেশ কিছুটা দূরে।

কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না। থানার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। তিনি যুবকের কাছ থেকে অসুবিধার কথা শুনে পুলিশের বাসে তুলে তাঁকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। নিয়ম অনুযায়ী ২টা ২০ মিনিটের পরে কাউকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ওই যুবক পৌঁছন তার কিছুটা পরে। ওসি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সৌগতকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। বনগাঁর চাঁদার বাসিন্দা সৌগত কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন, ‘‘পুলিশের সাহায্য ছাড়া হয় তো এ বার আমার পরীক্ষায় বসাই হতো না।’’

রাজ্য সরকারের গ্রুপ ডি পরীক্ষা দিতে শনিবার প্রায় ২৫ লক্ষ প্রার্থী বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। আইন-শৃঙ্খলা এবং পরিবহণ ব্যবস্থার উপরে সর্বত্রই বাড়তি নজরদারি ছিল পুলিশ-প্রশাসনের।


বসিরহাটে বাসে গাদাগাদি করে যাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: নির্মল বসু

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার পরীক্ষার্থী ছিলেন। ৩২৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এবং রাস্তার মোড়ে পুলিশি পাহারা ছিল।’’

বসিরহাট, গাইঘাটা, হাবরা, অশোকনগর, বারাসত-সহ ৯টি থানায় পুলিশ নিজস্ব দশটি বাসের ব্যবস্থা রেখেছিল। যদি শেষ মুহূর্তে কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে না পারেন, তাঁকে ওই বাসে করে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য যশোর রোডে বাড়তি ট্রাফিক মোতায়েন করা হয়েছিল। বনগাঁর পুরসভার পক্ষ থেকেও বুথ করা হয়। সেখানে জলের ব্যবস্থা ছিল। বুথ থেকে মাইকে পরীক্ষার্থীদের রুট ম্যাপ বলে দেওয়া হয়েছে।

বসিরহাট শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের তরফে বসিরহাট, ভ্যাবলা স্টেশন ছাড়াও বড় রাস্তার মোড়ে মোড়ে সাহায্য কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। প্রশাসনের তরফে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টোটো এবং অটো ইউনিয়নের সদস্যেরাও পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ৫০টির উপরে মোটর বাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের শেষ মুহূর্তে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। বসিরহাটের এসডিপিও এবং আইসি-সহ বিভিন্ন থানার ওসিরা সকাল থেকে যান নিয়ন্ত্রণ এবং পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার জন্য রাস্তায় ছিলেন। বাড়তি গাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন নদীতে বাড়তি নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।


দেগঙ্গায় প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীকে সাহায্য। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলেও।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে মুড়িগঙ্গায় ভেসেল পরিষেবা নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা ছিল পরীক্ষার্থীদের। ৪৫ মিনিট অন্তর ভেসেল চলেছে। তাতে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হয়নি।

ক্যানিং মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন রুটের ৯টি বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ ছাড়া ক্যানিং স্টেশন বাসস্ট্যান্ড, রাস্তার মোড়ে পুলিশের হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অ্যাম্বুল্যান্সও রাখা হয়েছিল। গোসাবা, গদখালি ও বিরাজমুনি ঘাটে পুলিশের নজরদারিতে অতিরিক্ত ফেরির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পুলিশ প্রশাসন থেকে মোড়ে মোড়ে ক্যাম্পে গ্লুকোজ মেশানো জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য গাড়ি ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছিল। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও ছিল।

Group-D exam initiatives transportation Group-D
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy