রহড়ার রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনায় এ বার একটি অস্ত্র বিপণির মালকিনকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃতের নাম সুশীলাআঢ্য। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়ায়। মঙ্গলবার তাঁকে আসানসোল থেকে ধরাহয়। সুশীলা পুরুলিয়ার একটি অস্ত্র বিপণির মালিক। তিনি পলাতক থাকাকালীনই তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। রহড়ার ফ্ল্যাট থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার পরেই গা-ঢাকা দিয়েছিলেন সুশীলা। এর আগে তাঁর বিপণির এক কর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন। সুশীলাকে বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ওই ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করলেন গোয়েন্দারা।
গত জুলাই মাসে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল রহড়া থানা এলাকার রিজেন্ট পার্কে এক আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে হানা দেয়। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৯০৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় অস্ত্র ব্যবসায়ী মধুসূদন মুখোপাধ্যায়কে। পরে তাঁর এক সঙ্গীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরে রাজ্য সরকারের নির্দেশে মামলার তদন্তভার যায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফের হাতে। তদন্তভার হাতে নিয়েই তারা কলকাতার বি বা দী বাগের এক প্রাচীন অস্ত্র বিপণির মালিক তিন ভাইকে গ্রেফতার করে। সেই সূত্রে গ্রেফতার করা হয় পুরুলিয়ার ওই অস্ত্র বিপণির এক কর্মীকেও।
এক গোয়েন্দা-কর্তা জানান, পুরুলিয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই অস্ত্র বিপণি থেকেই বেআইনি ভাবে গত কয়েক বছরে অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল রহড়া থেকে ধৃত অস্ত্রের কারবারি। ভুয়ো লাইসেন্স তৈরি করে ওই বিপণি থেকে বিভিন্ন অস্ত্র কারবারিকে অস্ত্র বিক্রি করা হত বলে অভিযোগ। পুরুলিয়ার ওই বিপণি সিল করার আগে গোয়েন্দারা সেখানে মজুত অস্ত্রের হিসাব মিলিয়ে দেখেন। তাতে গরমিল সামনে আসে বলে অভিযোগ। গোয়েন্দারা জানান, দোকানের রেজিস্টারে ওই সব অস্ত্রের কথা লেখা থাকলেও বাস্তবে সেগুলির অস্তিত্ব তাঁরা পাননি।
গোয়েন্দারা জানান, বি বা দী বাগের প্রাচীন ওই অস্ত্রের দোকান থেকে কার্তুজ গিয়েছিল রহড়ার অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছে। আবার পুরুলিয়ার ওই অস্ত্র বিপণিতে জমা থাকা একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে রহড়ার সেই আবাসন থেকে। ফরেন্সিক পরীক্ষায় যেটির নম্বর মিলে গিয়েছে বলেই দাবি গোয়েন্দাদের। এর পরেই পুরুলিয়ার দশের বাঁধ মোড়ের ওই বিপণিতে তদন্তকারীরা হানা দেন এবং মালিকের ঘনিষ্ঠ শেখ মনুকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)