Advertisement
১৬ মে ২০২৪
আতঙ্কিত মহিলা চিকিৎসক

হেনস্থার পরে যুবক বললেন, ধর্ষণ তো করিনি

মহিলা চিকিৎসককে ধাক্কাধাক্কি করেছেন তিনি। গালিগালাজের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। কাগজপত্র ছিঁড়ে তছনছ করেছেন। এলাকার লোকজন উন্মত্ত যুবককে ধরে ফেলে বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমা চেয়ে নিলেই তো মিটমাট হয়ে যায়।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

মহিলা চিকিৎসককে ধাক্কাধাক্কি করেছেন তিনি। গালিগালাজের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। কাগজপত্র ছিঁড়ে তছনছ করেছেন। এলাকার লোকজন উন্মত্ত যুবককে ধরে ফেলে বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমা চেয়ে নিলেই তো মিটমাট হয়ে যায়।’’ তার উত্তরে জামার হাতা গোটাতে গোটাতে উদ্ধত যুবক জবাব দিয়েছেন, ‘‘ক্ষমা চাইতে যাব কোন দুঃখে, ধর্ষণ তো করিনি!’’

কাণ্ড-কারখানা দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন বনগাঁ ব্লকের পাল্লা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মহিলা চিকিৎসক। সোমবার বিকেলে গোপালনগর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু গ্রেফতার হননি যুবক। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই চিকিৎসক। মঙ্গলবার কাজেও যাননি।

বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহারায় বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে ওই চিকিৎসক চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। সোমবারের ঘটনার পরে তিনি এতটাই আতঙ্কিত, আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসবেন না বলে জানিয়েছেন।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম প্রীতিশ বিশ্বাস। বাড়ি গোপালনগর থানার চারাবাগান এলাকায়। নদিয়া পুলিশে কনস্টেবল পদে কর্মরত। পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ যোগাযোগ করলে আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করব।’’

আরও পড়ুন: দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষার আবিষ্কর্তাকে ডুডলে স্মরণ গুগলের

কিন্তু কেন এমন চোটপাট করলেন ওই যুবক?

পুলিশ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা ৪টে নাগাদ জরুরি বিভাগে রোগী দেখছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসক। ওই সময়ে একটি অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সেখানে আসেন বাড়ির লোকজন। সঙ্গে ছিলেন প্রীতিশ। অভিযোগ, অন্য রোগীকে সময় না দিয়ে তখনই ওই শিশুটিকে দেখতে হবে বলে শোরগোল ফেলে দেন প্রীতিশ। মহিলা চিকিৎসক বলার চেষ্টা করেছিলেন, হাতের কাজ সেরে তিনি ছেলেটিকে দেখবেন। কারণ, যাঁকে তিনি সেই মুহূর্তে দেখছিলেন, তাঁরও শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। কিন্তু শোনে কার কথা। রীতিমতো হুঙ্কার ছাড়তে থাকেন প্রীতিশ। মহিলা চিকিৎসককে গালিগালাজ করেন। ধাক্কাও দেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসার নথিপত্র তছনছ করেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা জানাচ্ছেন, নিজেকে পুলিশ কর্মী পরিচয় দিয়েই চোটপাট করছিলেন প্রীতিশ। চিকিৎসককে ‘দেখে নেব’ বলে হুমকি দেন লাগাতার। মহিলা চিকিৎসকের দিকে যখন তেড়ে যাচ্ছেন প্রীতিশ, ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জিডিএ বকুলচন্দ্র দাস। তাঁকেও প্রীতিশ আঘাত করেন বলে অভিযোগ।

এত ডামাডোলের মধ্যে প্রীতিশ যে শিশুটিকে এনেছিলেন, তাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।ঘটনার খবর পেয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান মৃগাঙ্কবাবু। বাইরে তখন প্রীতিশ হুঙ্কার ছাড়ছেন, ‘‘ধর্ষণ তো করিনি, ক্ষমা চাইতে যাব না...।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

disgrace Youth Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE