কলকাতার উপকণ্ঠে বানতলায় লেদার কমপ্লেক্সে ম্যানহোলে নেমে তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে। আলিমুদ্দিন শেখ নামের ওই ব্যক্তি ঠিকাদার। তিনিই তিন শ্রমিককে জেলা থেকে কাজের জন্য কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন এবং ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজে নামিয়েছিলেন, দাবি পরিবারের। রবিবার রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ।
রবিবারই তিন শ্রমিকের পরিবার আলিমুদ্দিনের দিকে আঙুল তুলেছিল। অভিযোগ, নির্মাণের কাজ দেবেন বলে আলিমুদ্দিন তাঁদের কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কলকাতায় এনে ম্যানহোল পরিষ্কার করানোর কাজ দেন। সেই ম্যানহোলেই মৃত্যু হয় তিন জনের।
আরও পড়ুন:
রবিবার সকালে লেদার কমপ্লেক্সের ম্যানহোলে নেমেছিলেন ৬০ বছরের ফরজ়েম শেখ। তিনি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। ম্যানহোল থেকে তিনি উঠছেন না দেখে হাশিবুর শেখ নামের আর এক শ্রমিক নামেন। ফরজ়েমের পাশের গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তাঁর খোঁজ নিতে ম্যানহোলে নামেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ন্যাজাট থানা এলাকার বাসিন্দা সুমন সর্দার। নিকাশি নালার বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়।
মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানা এলাকার ঠিকাদার আলিমুদ্দিন। সেই এলাকাতেই থাকতেন হাশিবুর এবং ফরজ়েম। শোকস্তব্ধ পরিবার আলিমুদ্দিনকেই দুষছে প্রথম থেকে। রবিবার ঘটনার খবর পেয়ে বানতলায় গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, কেন তিন জন ম্যানহোলে নামলেন, পুলিশ তা খতিয়ে দেখবে।
ম্যানহোলে মানুষ নামানো বেআইনি। ২০১৩ সালে নতুন আইন প্রণয়ন করে তা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষ প্রয়োজনে কখনও ম্যানহোলে কাউকে নামাতে হলে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু অভিযোগ, ন্যূনতম সতর্কতা ছাড়াই শ্রমিকদের ম্যানহোলে নামানো হয়। গত বুধবার সুুপ্রিম কোর্ট এ নিয়ে কলকাতা-সহ ছয় রাজ্যকে সতর্কও করেছে।