গণেশ পুজোর জন্য ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে! এলাকার এক দল যুবকের এই দাবিতে রাজি হননি বছর বাইশের যুবক। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করার পাশাপাশি ওই যুবকদের অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে আপত্তি জানান। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় ওই যুবককে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে অভিযুক্তেরা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক।
শুক্রবার রাতে কামারহাটির ঘটনা। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনন্ত মোহান্তি নামের ওই যুবক। ঘটনার পর থেকেই এলাকাছাড়া অভিযুক্ত যুবকেরা। কামারহাটি পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাখির খাঁচা এলাকার বাসিন্দা অনন্ত। অভিযোগ, ওই রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁকে ঘিরে ধরে স্থানীয় এক দল যুবক। দাবি করে, গণেশ পুজোর জন্য ৫০ হাজার টাকা দিতেই হবে। আপত্তি জানান অনন্ত। পাশাপাশি, এলাকায় নেশা করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ কেন করা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রতিবাদ করেন তিনি। তখনই তাঁকে বাইক থেকে জোর করে নামিয়ে ওই যুবকেরা মারতে শুরু করে বলে অভিযোগ। রাস্তায় ফেলে ইট, বন্দুকের বাট দিয়ে মারধর করা হয়। নর্দমার মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে এলোপাথাড়ি মার। অনন্তের চিৎকার শুনে আশপাশের বাসিন্দারা এবং তাঁর মা ও আত্মীয়েরা বেরিয়ে আসতেই অভিযুক্তেরা চম্পট দেয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি রাতেই একটি শিশু-উদ্যানে নেশার আসর বসায় ওই যুবকেরা। সেই সঙ্গে রয়েছে চাঁদার জুলুম। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। অনন্তের মা জয়ন্তী মোহান্তি বলেন, ‘‘ছেলে অনেক দিন ধরেই ওদের অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করছিল। এ বার চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় মারধর করেছে।’’ শনিবার সাত যুবকের নামে বেলঘরিয়া থানায় জয়ন্তী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি অর্পিতা ঘোষের দাবি, ‘‘সমাজমাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশকে বলেছি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।’’
অভিযোগ, অভিযুক্তেরা যে পুজোর আয়োজন করেছে, তার ব্যানারে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের অনেকের নাম রয়েছে। সেই জোরেই ‘দাদাগিরি’ করছে অভিযুক্তেরা। কামারহাটি পুরসভার পুরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘আমি পুজোর সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নই। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’ গত বছর কামারহাটিতে জয়ন্ত সিংহ ও তার দলবলের বিরুদ্ধে এমনই ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠেছিল। জয়ন্ত-সহ তার শাগরেদরা গ্রেফতার হয়েছিল। ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)