শোকার্ত বাবা।
জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর চালালেন রোগীর আত্মীয়েরা। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘিরে বিক্ষোভও দেখানো হয়। চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগীর আত্মীয়েরাও তাতে সামিল হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে। হামলা চালানোর অভিযোগে তিন জনকে আটক করা হয়।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানার বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দেগঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জ্বরের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছেন। কিন্তু ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঠিক মতো পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ। জ্বরে ভুগে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন মারাও গিয়েছেন। ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে দেগঙ্গায়।
আমুলিয়া পঞ্চায়েতের বোড়ামারি পূর্ব পাড়ার বিলকিস বিবি (২৭) জ্বর নিয়ে বাপের বাড়ি আসেন। তাঁকে বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিলকিসের বাবা এননাস আলি বলেন, ‘‘আট দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে আসছি। কোনও ওষুধে জ্বর কমছে না। মঙ্গলবার রক্তের রিপোর্ট আর ওষুধ নিয়ে বাড়ি যাই। বুধবার সকালে মেয়ের অবস্থা খারাপ হয়। ফের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসি। ভর্তি করা হয়।’’ বাবার কথায়, ‘‘সঠিক চিকিৎসার অভাবে মেয়েটা আমার মারা গেল।’’ বিলকিসের স্বামী মিজানুর মণ্ডল বলেন, ‘‘ডাক্তার স্যালাইন দিয়ে চলে যান। পরে স্ত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ডাক্তারের কাছে ছুটে যাই। উনি এসেছিলেন ঠিকই। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হল না।’’
প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় এত রোগী সঠিক পরিষেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিবার-পরিজন। ভাঙচুর করা হয় অন্তর্বিভাগে। ধাক্কাধাক্কিতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সূরজ সিংহ-সহ এক চিকিৎসক সামান্য আহতও হন। এ দিন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা পদ্মা ঘোষ, সালেমা বিবি, সহিদুল গাজিরা জানান, এত রোগীর চাপ। চিকিৎসকেরা সকলের সঙ্গে ভাল মতো কথাও বলতে পারছেন না। শুধু ওষুধ লিখে ছেড়ে দিচ্ছেন।
সূরজবাবু বলেন, ‘‘প্রতিদিন হাজার দেড়েক মানুষ জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছেন। অথচ চিকিৎসক কম। যে কয়েকজন আছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষের ক্ষোভে আমরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’ বিলকিসের ক্ষেত্রে চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল না বলে দাবি করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy