E-Paper

হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থেকে মৃত্যু রোগীর

অভিযোগ, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন এক বৃদ্ধ। এ নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি শুরু করেছে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার, সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:৪৭
পড়ে থেকেই মারা গেলেন বৃদ্ধ।

পড়ে থেকেই মারা গেলেন বৃদ্ধ। ছবি: সামসুল হুদা।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের (ইমার্জেন্সি) সামনে বেঞ্চে উদাসীন মুখে বসে দুই পুলিশ কর্মী। হাত কয়েক দূরে মেঝেয় পড়ে অচৈতন্য এক বৃদ্ধ। কিছুক্ষণ পরে জানা গেল, দেহে আর প্রাণ নেই। অভিযোগ, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে দায় ঠেলাঠেলি শুরু করেছে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার, সপ্তমীর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব মৃত ব্যক্তির নাম শম্ভুনাথ বিজলি। বাড়ি উত্তর কাশীপুর থানার চিলেতলা বিজলি পাড়ায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শম্ভুনাথ মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। বিকেলে মদ্যপান করেন। পরে কীটনাশকও খান বলে অভিযোগ। অসুস্থ হয়ে ভাঙড় থানার অদূরে নতুন ব্রিজের কাছে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ, বৃদ্ধকে ইমার্জেন্সিতে রেখে চলেও যায় পুলিশ। স্থানীয়দের দাবি, চিকিৎসা শুরু হয়নি, কিছুক্ষণ পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সামনেই জলকাদার মধ্যে গিয়ে শুয়ে পড়েন শম্ভুনাথ। স্থানীয় লোকজন তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে কলকাতার পাভলভ হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশকে সে কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ পুলিশ আসেনি। ইমার্জেন্সির সামনে মেঝেতে পড়েছিলেন বৃদ্ধ। পাশেই চেয়ার বসেছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। দেহের পাশ দিয়ে অন্যান্য রোগী ও পরিবারের লোকজন যাচ্ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েও রোগীকে স্যালাইন, ইঞ্জেকশন দেওয়া যাচ্ছিল না। পাভলভে রেফার করার পরে পুলিশকে জানানো হলেও তারা আসতে দেরি করেছে। পুলিশের দাবি, মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে পাভলভে ভর্তি করতে হলে আদালতের অনুমতি লাগে। প্রথমে ওই রোগীর পরিবারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে খোঁজ মিললেও ততক্ষণে রোগী মারা গিয়েছেন।

স্থানীয় মানুষজনের প্রশ্ন, ‘রেফার’ করা হলেও কোন যুক্তিতে মেঝেয় রোগীকে ফেলে রেখেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশও কোনও রকম সংবেদনশীলতার পরিচয় দেয়নি। মৃতের এক আত্মীয় অপর্ণা বিজলি বলেন, ‘‘উনি দিনমজুরি করতেন। স্ত্রী, দুই ছেলে অনেক দিন আগে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সেই থেকে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ ভাবে মারা যাবেন, ভাবতে পারিনি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death Bhangar Medical Negligence

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy